পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] , প্রলয়োক্সাস Sసి) • প্রলয়োল্লাল তোরা সব জয়ধ্বনি কর । মাভৈ মাভৈঃ ! জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে, তোরা সব জয়ধ্বনিকবৃ! জরায়-মরা মুমূর্খদের প্রাণ লুকানো ঐ বিনাশে ! ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল-বোশেখীর ঝড়। এবার মহানিশার শেষে তোরা সব জয়ধ্বনি কর! আসবে উষা অরুণ হেসে তোরা সব জয়ধ্বনি ক !! আসছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য-পাগল, সিন্ধু-পারের সিংহ-স্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল ! মৃত্যু-গহন অন্ধকূপে মহাকালের চণ্ডরূপে ধূম্ৰ ধূপে বজ্ৰ-শিখার মশাল জেলে অস্েিছ ভয়ঙ্কর— ওরে ঐ হাস্ছে ভয়ঙ্কর । তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্ ! ঝােমর তাহার কেশের দোলার ঝাপটা মেরে গগন দুলায়, সৰ্ব্বনাশী জালামুখী ধূমকেতু তার চামর চুলায় ! বিশ্বপাতার বক্ষ-কোলে রক্ত তাহার কৃপাণ ঝোলে দোদুল দোলে ! অট্টরোলের হটগোলে স্তব্ধ চরাচর— ওরে ঐ স্তন্ধ চরাচর ! তোরা সব জয়ধ্বনি কর । তোরা সব জয়ধ্বনি করু! দ্বাদশ রবির বহ্নি-জাল ভয়াল তাহার নয়ন কটায়, দিগন্তরের কাদন লুটায় পিঙ্গল তার হ্রস্ত জটায় ! বিন্দু তাহার নয়ন-জলে সঃ মহাসিন্ধু দোলে • * কপোল-তলে ! বিশ্বমায়ের আসন তারি বিপুল বাহুর পর— স্থাকে ঐ "জয় প্রলয়ঙ্কর ” তোরা সব জয়ধ্বনি র! তোরা সব জয়ধ্বনি কর! করুণ বেশে । দিগম্বরের জটায় হাসে শিশু চাদের কর— আলো তার ভরবে এবার ঘর। তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর! ঐ সে মহাকাল-সারথি রক্ত-তড়িৎ-চাবুক হানে, রণিয়ে ওঠে হ্রেষার বাদন বজ্ৰ-গানে ঝড়-তুফানে ! . স্কুরের দাপট তারায় লেগে উল্কা ছটায় নীল খিলানে— গগন-তলের নীল খিলানে ! অন্ধকারার বন্ধ কূপে দেবতা বাধা যজ্ঞ-যুপে পাষাণ-স্তপে ! এই ত রে তার আসার সময় ঐ রথ-ঘর্ঘর— শোনা যায় ঐ রথ-ঘর্ঘর ! তোরা সব জয়ধ্বনি কর । তোরা সব জয়ধ্বনি কবু ! ংস দেখে ভয় কেন তোর ? প্রলয় নূতন-স্বজন-বেদন! আসছে নবীন, জীবন-হারা অস্বন্দরে করতে ছেদন । তাই সে এমন কেশে বেশে প্ৰলয় বয়েও আসছে হেসে– মধুর হেসে । ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চির-সুন্দর ! তোরা সব জয়ধ্বনি কর! ঐ ভাঙা গড় খেল যে তার কিসের তবে ডর ? তোরা সব জয়ধ্বনি কর – বধুর প্রদীপ তুলে ধর! ভয়ঙ্করের বেশে এবার ঐ আসে স্বন্দর – তোরা সব জয়ধ্বনি কর! তোরা সব জয়ধ্বনি করু! কাজী নজরুল ইসলাম