পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদূষক কাঞ্চীর রাজ কর্ণাট জয় করতে গেলেন । তিনি হলেন জয়ী । চন্দনে, হাতির ধাতে, জtয় সোনা-মণিকে হাতি বোঝাই হল। দেশে ফেরবার পথে বলেশ্বরীর মন্দির বলির রক্তে ভাসিয়ে দিয়ে রাজ পূজো দিলেন । পূজে দিয়ে চলে আস্ছেন—গায়ে রক্তবস্ত্র, গলার জবার মালা, কপালে রক্ত-চন্দনের তিলক—সঙ্গে কেবল মন্ত্রী আর বিদূষক । এক জায়গায় দেখৃলেন পথের ধারে আমবাগানে ছেলের খেল। কর্চে । রাজা তার দুই সঙ্গীকে বললেন, “দেখে আসি, ওরা কি খেলচে ।” 한 ছেলের দুই সারি পুতুল সাজিয়ে যুদ্ধ-যুদ্ধ পেল্‌চে। রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “কার সঙ্গে কার যুদ্ধ ?” তাব বললে, “কর্ণাটের সঙ্গে কাঞ্চার।" রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “কার জিৎ, কার হার ?” ছেলের বুক ফুলিয়ে বললে, “কর্ণাটের জিৎ, কান্ধীর হার ।" মন্ত্রীর মুখ গষ্ঠীর হল, রাজার চক্ষু রক্তবর্ণ, বিদূষক হ হ করে হেসে উঠল । ు রাজা যখন তার সৈন্ত নিয়ে ফিরে এলেন, তখনে ছেলের খেলচে । রাজা হুকুম করলেন, “একেকটা ছেলেকে গাছের সঙ্গে বাধো, আর লাগাও কৃেত !" গ্রাম থেকে তাদের মা-বাপ ছুটে এল । বললে, “ওরা অবোধ, ওর খেলা করছিল, ওদের মাপ কর ।” রাজা সেনাপতিকে ডেকে বললেন, “এই গ্রামকে শিক্ষা দেবে, কান্ধীর রাজাকে কোনোদিন যেন ভুলতে না পারে।” এই বলে শিবিরে চলে গেলেন । 8 সন্ধ্যে বেলায় সেনাপতি রাজার সমুখে এসে দাঁড়াল। প্রণাম করে বললে, “মহারাজ শৃগাল কুকুর ছাড়া এগ্রামে করে মুখে শব্দ শুনতে পাবে না।” 象 মন্ত্রী বললে, “মহারাজের মানরক্ষা হল।" পুরোহিত বললে, “বিশ্বেশ্বরী মহারাজের সহায় ।” বিদুৰক বললে, “মহারাজ, এবার আমাকে বিদায় দিন।" রাজা বললেন, “কেন ?” বিদুৰক বললে, “আমি মারতেও পারিনে, কাটতেও পারিনে, বিধাতার প্রসাদে আমি কেবল হাসতে পারি। মহারাজের সভায় খালে জামি হাস্তে ভুলে ঘাৰ।” ভারতী, বৈশাখ) * ঐরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেষ-বেলা পূৰ্ব্বাচলের পানে তাকাই অস্তাচলের ধীরে আসি । ডাক দিয়ে যার সাড়া না পাই তার লাগি আজ বাজাই বাশি । যখন এ কূল যাব ছাড়ি, পারের খেয়ায় দেব পাড়ি, মোর ফাগুনের গানের বোঝা রাশির সাথে যাবে ভাসি ॥ সেই যে আমার বনের গলি রঙীন ফুলে ছিল আঁক, সেই ফুলেরি ছিন্ন দলে চিহ্ন তাহার পড়ল ঢাকা । মাঝে মাঝে কোন বাতাসে চেন দিনের গন্ধ আসে, হঠাৎ বুকে চমক লাগায় আধু-ভোল৷ সেই কান্ন-হাসি। শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদ, ১০ই চৈত্র, ১৩২৮ । বিতরণ আসা-যাওয়ার পথের ধারে গান গেয়ে মোর কেটেচে দিন । যাবার বেলায় দেব কারে বুকের কাছে বাজল যে বীণ ? সুরগুলি তার নানাভাগে রেখে যাব পুষ্পরাগে, মীড়গুলি তার মেঘের রেখtয় স্বর্ণলেখায় কয়ূব বিলীন । কিছু বা সে মিলন-মালার যুগল গলায় রইবে গাথা । কিছু বা সে ভিজিয়ে দেবে দুই চাহনির চোখের পাত । একদা কোন চৈত্র মাসে বকুল-ঢাক বনের ঘাসে হঠাৎ আমার মনের কথা কুড়িয়ে পাবে কোন উদাসীন। জীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদ, ১১ই চৈত্র, ১৩২৮ ।