পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] প্রবেশ করিয়া লোকমান্ত ট্রলকের মতান্থায়ী কাৰ্য করারই পক্ষপাতী ! গবর্ণমেণ্ট যখন দেশের উন্নতিসাধনে যত্নশীল হন, তখন দেশবাসীর উচিত র্তাহাদের সহযোগ করা ; কিন্তু যখন দেশের স্বার্থবিরোধী কোন ব্যাপারে গবর্ণমেণ্ট হস্তক্ষেপ করেন তখন লোকদের উচিত যথাশক্তি আপত্তি করা এবং বাধা দেওয়া, ইহাই ছিল টিলকের মত। দেশভক্ত অকপট মডারেট র্যাহার, র্তাহাদের মতও প্রায় এইপ্রকার । কিন্তু এই কারণেই যে উপরোক্ত নীতিটি বর্জন করিতে হইবে, তাহ নয়— বর্জন করিবার অন্য কারণ থাক্ বা না থাক । কংগ্রেসের কাৰ্য্যের সহিত আমরা যুক্ত না থাকাতে, এ সম্বন্ধে কিছু লিখিতে সঙ্কোচ বোধ হয়। কিন্তু ঐ একই কারণে আবার এ সম্বন্ধে নিঃসঙ্কোচে কথা বলিবার স্ববিধাও আমাদের আছে। কারণ আমাদের মতামত কাহাকেও বাধ্য করিবে না, এবং কাহাকেও মুস্কিলে ফেলিবে না । মহাত্মা গান্ধীর মত র্যাহারা বর্তমান গবর্ণমেণ্টেকে শয়তানী মনে করেন, র্তাহারা যদি ফলাফল বিচার না করিয়া উহার সহিত সাক্ষাৎ ও পরোক্ষ সকল সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন করেন, তবে তাহীদের দোষ দেওয়া যায় না। আমরা জানি, যে, ঐ প্রকার বিশ্বাস থাকিলে সম্পূর্ণ অসহযোগই একমাত্র যুক্তিসঙ্গত পন্থা । আমরা ইহাও জানি, যে, যদি দেশের সকল অধিবাসী কিম্বা অধিকাংশ বা বহুসংখ্যক অধিবাসী এই পথ অবলম্বন করেন, তাহা হইলে ইংরেজ জাতির প্রতিনিধিরা ভারতীয় নেতাদের সহিত মিলিত হইয়া অসহযোগীদের সঙ্গে সন্ধির সর্ত আলোচনা করা প্রয়োজন বোধ করিবেন । কিন্তু যত দিন পৰ্য্যন্ত গবৰ্ণমেণ্ট ও জনসাধারণের মধ্যে সকল সম্পর্ক চুকিয়া না যায়, ততদিন একটা মাঝামাঝি রফ করিবার ও রাখিবার অধিকার কংগ্রেসের আছে। এখনও এই রফা রহিয়াছে। রফার সীমা আগাইয়া পিছাইয়া দিতে কংগ্রেস পারেন। কিন্তু এইরূপ ব্যবস্থা করিবার অধিকার একমাত্র কংগ্রেসেরই আছে । অবগু, বৰ্ত্তমান আঁন্দোলনের নেতা যখন মহাত্মা গান্ধী, তখন কোন সূতন পথ ধরিবার পূৰ্ব্বে র্তাহার সহিত পরামর্শ করা উচিত। ৰিবিধ প্রসঙ্গ—সহযোগিতাবৰ্জন ও ব্যবস্থাপক সভায় প্রবেশ "రి) ) নবপ্রবর্তিত ব্যবস্থাপক সভাগুলির দোষগুণ বিচার করিবার আর এখন আবশ্যক নাই । যে-সব মডারেট নিজেদের ভাবনা নিজেরা ভাবিতে অভ্যন্ত আছেন, তাহারা অভিজ্ঞতার ফলে উহার মূল্য এখন বুঝিতেই পারিয়াছেন । ব্যবস্থাপক সভার কদর যতটাই হোক, কেহ যদি ইহাতে প্রবেশ করেন, তাহ হইলে গবৰ্ণমেণ্টের ভাল মন্দ সকল রকম ব্যবস্থাতেই বাধা দেওয়া উাহার পক্ষে উচিত হইবে না । নীতি হিসাবে উহার সমর্থন করা যায় না। বাস্তবিকই যদি রাজকৰ্ম্মচারীর কোনও রকমে দেশের উন্নতি করিতে ইচ্ছা করেন, তাহাতে বাধা দেওয়াটাকে সমর্থন করা যায় কি করিয়া ? এই ভাবে বাধা দেওয়ার দুইটি মাত্র কারণ থাকিতে পারে। কেহ যদি বিশ্বাস করেন, যে, গবর্ণমেণ্ট যথার্থ দেশের উপকার করিতে চান না, তাহারা যখনই উক্ত প্রকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন—তাহা কেবল লোকের চোখে ধূলা দিবার জন্য, তাঁহাদের সত্য উদ্দেশ্য আপনাদের স্বার্থসিদ্ধি,—তাহা হইলে তিনি ঐ প্রকার বাধা দিবার পথ ধরিতে পারেন । কিন্তু বাস্তবিক যদি গবর্ণমেণ্ট সম্বন্ধে কাহারও ঐ প্রকার বিশ্বাস থাকে, তবে তাহার কৰ্ত্তব্য ঐ প্রকার গবর্ণমেণ্টকে একেবারে পঙ্গু করিয়া ফেলিবার জন্য ধৰ্ম্মসঙ্গত ও অহিংসামূলক সৰ্ব্বপ্রকার চেষ্টা করা, অন্ততঃপক্ষে তাহার সহিত সকল রকম সম্পর্ক বর্জন করা । কিন্তু র্যাহারা মনে করেন, গবর্ণমেণ্ট কখনও কখনও নিঃস্বার্থ ভাবে দেশের উপকারও করেন, সরকারী হিতচেষ্টাকে বাধা দেওয়ার্ডাহাদের উচিত নয়। গবর্ণমেণ্ট সম্বন্ধে ব্যক্তিবিশেষের ধারণা যেমনই হোক, তাহাদের হিতচেষ্টাকে, অন্ততঃপক্ষে আপাত-দৃষ্টিতে যাহাকে হিতচেষ্টা মনে হয়, তাহাকে, বাধা দেওয়া রাষ্ট্রনীতি বা ধৰ্ম্মসঙ্গত হইবে না। একটা উদাহরণ দেওয়া যাক্ । কোনও স্থানে হয়ত অত্যন্ত জলাভাব ঘটিয়াছে। কুপ খনন করিয়া, পুকুর কাটাইয়া বা দূরবর্তী স্থান হইতে পাইপ সহযোগে জল আনিয়া এই অভাব দূর করা ভাল, সে বিষয়ে আলোচনা চলিতে পারে বটে। কিন্তু জল জোগানটাতে বাধা দেওয়া চলে না। বাধা দিলে তুহ অমান্বরে কাজ