পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مرالا فق ঘটিত লবণ প্রস্তুত হইয়াছে, এবং এই সভ্যতার যুগে কয়লার 'ক্ষয় যেরূপ ক্রমশঃই বাড়িতেছে তাহাতে ধরিত্রীর কয়লার ভাণ্ডারও নিঃশেষ হইতে বেশী দেরী হইবে না বলিয়া মনে হয় । স্বতরাং দেখা যাইতেছে, যে, যদি বিশ বৎসর পরে চিল্লির লবণস্তর নিঃশেষ হইয়া যায় তবে পৃথিবীর যে সে কি দুদিন উপস্থিত হইবে তাহা বর্ণনা করা যায় না। সারের অভাবে খাদ্যের উৎপত্তি কমিয়া যাইবে, দেশে দেশে খাদ্যের অভাব ও ভীষণ সৰ্ব্বগ্রাসী দুর্ভিক্ষ উপস্থিত হইবে। কিছু পূৰ্ব্ব হইতেই বিশেষজ্ঞ বৈজ্ঞানিকগণ ইহা ‘ ভাবিয়া অস্থির হইয়া উঠিয়াছেন এবং উহার প্রতীকার সাধন কল্পে গত ২০২৫ বৎসর হইতে র্তাহারা বিশেষ পরিশ্রম করিতেছেন। ইতিমধ্যেই এই অক্লান্ত পরিশ্রমের আশ্চৰ্য্য স্বফল ফলিয়াছে। র্তাহারা দেখিলেন, আমাদের বায়ুমণ্ডল নাইট্রোজেনের এক অফুরন্ত ভাগুর ; বায়ুমগুলে শতকরা ৭৭ ভাগ নাইট্রোজেন ও ২১ ভাগ পরিমাণ অক্সিজেন আছে। হিসাব করিয়া দেখা গিয়াছে যে বায়ুমণ্ডলে প্রায় ৪,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ টন নাইট্রোজেন আছে, অর্থাৎ পৃথিবীর প্রত্যেক বর্গমাইলের উপরন্থ বায়ুতে ২০,০০০,০০০ টন নাইট্রোজেন বৰ্ত্তমান । বৈজ্ঞানিকগণ র্তাহাদের অক্লান্ত ও বহু-বৎসর-ব্যাপী চেষ্টায় বায়ুমণ্ডলের এই নাইট্রোজেনকে সারে ও শিল্পে ব্যবহারোপযোগী নাইট্রোজেন-বহল পদার্থে পরিণত করিতে সমর্থ হইয়াছেন । এই নাইট্রোজেনকে তাহার। মাইটিক এসিড, ও তংঘটিত লবণে পরিবর্তন করিয়াছেন। নানাবিধ বিস্ফোরক পদার্থ প্রস্তুতের জন্য ও কৃষিকার্য্যে সারের জন্য ইহাদের প্রচুর ব্যবহার হইতেছে। এই নাইট্রোজেনকে আবার তাহার এ্যামোনিয়া ও তৎঘটিত লবণেও পরিণত করিয়াছেন । এ্যামোনিয়া-ঘটিত লবণ একটি প্রধান সার ইহা পূৰ্ব্বেই বলা হইয়াছে। স্বতরাং ভবিষ্যতে যদি কখনও প্রকৃতিদেবী আমাদের প্রতি বিরূপ হইয়া উtহার খনির ভাণ্ডার বন্ধ করিয়া দেন বা তাহা শূন্ত হইয়া পড়ে তখন এই বৈজ্ঞানিকগণের কৃপায় নিরাশ্রয়ভাবে আর আমাদের ক্ষুৎপিপাসায় কাতর হইয়৷ মরিতে হইবে না। [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড গত ইউরোপীয় যুদ্ধে যখন অবরোধের (Blockade) দশ চিন্ধি হইতে জlানীতে সোডিয়াম নাইটের রপ্তানী বন্ধ হইয়াছিল তখন জাৰ্ম্মানগণ র্তাহাদের কারখান-সমূহে কৃত্রিম উপায়ে বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন হইতে র্তাহাদের যুদ্ধ-পরিচালনের জন্ত বিস্ফোরক পদার্থসমূহের উপাদান প্রস্তুত করিতেছিলেন। প্রায় ৪ বৎসরের উপর জার্মানগণ অবরোধ সত্বেও যুদ্ধ পরিচালনে সমর্থ : হইয়াছিলেন । বৰ্ত্তমানে কৃত্রিম উপায়ে এ্যামোনিয়া বা নাইটিক এসিড, ও তংঘটিত লবণ এত অধিক পরিমাণে প্রস্তুত হইতেছে যে বাজারে ঐ-সব জিনিষের মূল্য পূৰ্ব্বাপেক্ষ অনেক কমিয়া গিয়াছে। জাৰ্ম্মানীতে Badische Anilin und Soda Fabrik cof-tät fifs ofttfor কারখানা রহিয়াছে। নূতন আবিষ্কার ও অস্থসন্ধানের জন্ত তাহদের বিভিন্ন কারখানায় বহুসংখ্যক বিখ্যাত রাসায়নিক অবিরাম নিযুক্ত রহিয়াছেন। এই কোম্পানী এতই ধনশালী ও তাহীদের কারখানা-সমূহ এতই প্রকাও যে তাহ অনুমান করিতেও আমরা অসমর্থ । 彎 ইহা বলিলে অত্যুক্তি হয় না যে জাৰ্ম্মানীর উন্নতির ও যুদ্ধের পূর্বকালীন অর্থ-বাহুল্যের মূলীভূত কারণ হইতেছে তাহার এই বিশাল রাসায়নিক কারখানা-সমূহ । রন্ধন-শিল্পের আবগুকীয় দ্রব্যাদি প্রস্তুতের প্রণালী একমাত্র জাৰ্ম্মান কারখানা-সমূহের নিকট পরিজ্ঞাত { ইহা যুদ্ধের সময়ে সকলেই অল্পবিস্তর অনুভব করিয়াছেন । যুদ্ধের সময় যখন জাৰ্ম্মানদেশীয় দ্রব্যাদির রপ্তানী এক প্রকার বন্ধ করা হইয়াছিল তখন কাপড় রং করিবার ংএর অভাব, এমন কি লিখিবার কালীর উপাদানের অভাব পৰ্য্যন্ত সকলকেই অমুভব করিতে হইয়াছিল। স্বতরাং আমরা দেখিতে পাই বৰ্ত্তমান সভ্যজগতে উন্নতিলাভ করিতে হইলে, পৃথিবীর অন্যান্য সভ্যজাতির সমকক্ষ হইতে হইলে, বিজ্ঞানের একনিষ্ঠ সাধনা করিয়া যাবতীয় শিল্পবাণিজ্যের উন্নতিসাধন ভিন্ন অন্য পথ নাই। এই জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চাই জাতিগঠনের এক প্রধান উপাদান, যতদিন পৰ্য্যন্ত এই পথে আমরা বিশেষভাবে অগ্রসর হইতে না পারিব, ততদিন আমাদের জাতি বলিয়া পরিচিত হইবার অধিকার জন্মিবে না। ’