পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8సెషి ఇ ^^^^^ প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২৯ [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড পর ক্রোশ, ক্রোশের পর ক্রোশ। অনন্তের চিরচঞ্চল চিরকল্লোলময় স্নিগ্ধনীল রূপের পাশে চিরস্থির বিরাট শূন্যতাময় উদাস স্তন্ধ ধূসর রূপ—তাহার উপর চিরজ্যোতিৰ্ম্ময়ের গমনাগমনের পদরেণু জ্যোতিষ্কমণ্ডলের নৰ্ত্তনমঞ্চ অনস্তব্যোম । রাত্রির রহস্যময় অন্ধকারের ভিতর ধূসর বালুভূমির উপর দিয়া একথানি জীর্ণ খর্জুরপত্রাচ্ছাদিত গরুর গাড়ী চলিয়াছে। কয়েকখানি কালে মেঘে দশমীর চাদ ঢাকিয়া গিয়াছে, ছোট ছোট দৈত্যের মত ছিন্নকালে মেঘভরা আকাশের তারাগুলি পথহারা শিশুদের মত कक्रभं नग्नप्न ऊांकाईयाँ चाप्छ-श्रृंथशैन खनशैन डूभि অন্ধকারের সহিত মিশিয়া গিয়াছে, চারিদিকে তিমিররান্ত্রির মায়ু, তাহার মধ্য দিয়া মানবের এই অতিপ্রাচীন যানটি রাত্রির পরপারে কোন অরুণ-লোকের যাত্রী। গরুর গাড়ীটি একটু বেগে চলিতেছে, তাহার কেরোসিনের লণ্ঠনের মৃদ্ধ আলো বালুকারাশির উপর ঝকৃঝক্‌ করিতেছে, শীর্ণ গরু দুইটি মাঝে মাঝে ঝিমাইয়া পড়িতেছে, আর বিড়ি টানিতে টানিতে উড়িয় গাড়োয়ান তাহাকে পুচ্ছ মলিয়া ঠেলা দিয়া জাগাইয়া দিতেছে ; তারাগুলির মত করুণ চোখে চাহিয়া গরু দুইটি মেঘাচ্ছন্ন পথের দিকে অগ্রসর হইতেছে, গলার ঘণ্টাগুলি বাজিয়৷ }উঠিতেছে,—কতদূর আর কতদূর ? গাড়ীর ভিতর বহুক্ষণ নিদ্রা যাইবার বৃথা চেষ্টা করিয়া যে যুবকটি মাথার চুলগুলি নাড়িতে নাড়িতে উঠিয়া বসিল, সে রজত। পিছনের ঝাপি তুলিয়া দিয়া ছাউনির গায় এক বালিশ রাখিয় তাহাতে হেলান দিয়া বলিং সে একটা চুরুট ধরাইল। চারিদিক মৃত্যুপুরীর মত নির্জন, ছায়ায় ভরা, সমুদ্রের কল্লোল মৃদুরদেশের স্বপ্নের মত, বুকচাপা দীর্ঘনিশ্বাসের মত অতি মুদু বাতাস বহিয়া বালুকারাশি কঁপাইয়। সিরসির করিয়া বহিতেছে, একটি তারা মাথার অতি নিকটে জলিতেছে, তাহী . নিশ্বাস যেন গায়ে লাগিতেছে। রজতের গা "সিরসির করিতে লাগল, কিন্তু পায়ের কাছের চাদরট টানিয়া লইতেও কুড়েমি ধরিল। এই তৃণহীন জীবহীন পথহীন বালুসমুদ্রের উপর দিয়া রাজির অন্ধকারে কোথায় তাহার যাত্ৰা ! কোনারকের যে শিল্পসৌন্দর্ধ্য তাহার মনকে টানিয়া লইয়া চলিয়াছে, রাত্রিপ্রভাতে তাহার ত দেখা মিলিবে। কিন্তু ধীরে সে চাদরটা তুলিয়া লইয়া পায়ে জড়াইল, চিররহস্যময় আজন্ম-ঈঙ্গিত দুইটি কালোচোখ তাহার সম্মুখে ভাসিয়া উঠিল। এই অসীম স্তন্ধ শূন্তত ছাড়াইয়া অন্ধকার ছাড়াইয়া সে চলিয়াছে ;–পথের কোন সঙ্গিনীর জন্য, কোন কণ্ঠের কথাগীতের জন্ত, কোন মুখের দীপ্ত আলোর জন্য প্রাণ ভূষিত উৎকণ্ঠিত হইয়া উঠিয়াছে। একটি ছোট নদীর তীরে গাড়ী জাসিয়৷ পৌছাইল । অন্ধকার রাত্রির চোখের জলের মত নিরাখিয়া নদী মরুভূমির বুক হইতে উৎসারিত হইয়া অতি ধীরে বহিয়৷ যাইতেছে। কয়েকটি পার্থীর ডানার শব্দে আকাশ শিহরিয়া উঠিল, মেঘ সরিয়া গিয়া চাদের আলোঁ দেখা দিল, বাতাস জোরে বহিতে লাগিল । নদীজলের ছলছল শবে রজত যেন স্বপ্ন হইতে জাগিয়া উঠিল। অন্ধকারের বুকে কোন আঁখির আলোর জন্য প্রাণের কান্নার মত এই নদীটি ! ধীরে ধীরে রজত গাড়ী হইতে নামিয়া লোহাবাধানে পাহাড়ে লাঠিটি লইয়া নদীর তীরে আসিয়া দাড়াইল । চারিদিকে কালে ছায়ার মায়া, চাদ হইতে ঝরিয়া-পড়া আলো সে অন্ধকারে যেন পথ হারাইয়৷ ফেলিয়াছে। নদীর পরপারে কয়েকটি মানুষের কণ্ঠ শোনা যাইতেছে, কয়েকটি উড়িয়া পান্ধীবেহারাদের গুঞ্জরণ, দুইটি আলো মিটমিটি জলিতেছে। এই জল, আলে, মানুষের কণ্ঠ শুনিয়া রজতের মন যেন সচেতন হই উঠিল। ধীরে নদীর তীবে বসিল । সহসা পরপারের মায়ালোক আগুনের রং এ রঙীন হইয়া উঠিল । উড়িয়। বেহারাগুলি আগুন জালাইয়া তামাক খাইলে বসিয়াছে । আগুনের রাঙা শিথার চারিদিকে গোল হইয় তাহার বসিয়াছে । তাহাদের কালো মুখ হলুদের রঙে ছোপানো। নিকটে পান্ধীর উপর হেলান দিয়া দাড়াইয় এক তরুণী মূৰ্বি, ঠিক একখানি ছবির মত, মুখ ঠিক দেখা যাইতেছে না শুধু তাহার শ্বাড়ীর ঝলমলানি আর কথার স্বর আর তাহার সুতীক্ষ্ণ স্বম্পষ্ট ছায়া অগ্নিশিখাময় পটে ছবির মত অঁাকা ।