পাতা:প্রবাসী (দ্বাবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

83. চাহিয়া লইয়। লে তাহাদিগকে সিগারেট দিতে গেল, তাহার। একটু আশ্চৰ্য্য হইয়। আপত্তি জানাইল, পরের গ্রামে গিয়৷ তাহারা তামাক খাইবে ; তবু দলের মধ্যে, যে সবচেয়ে অল্পবয়স্ক ছিল লে একট। পিগীর চাহিয়া লইয়া ট্যাকে গুজিয়া রাখিল । গিরিবনপ্রান্তরে সন্ধ্যার কালে ছাঁয়! নিবিড় হইয়৷ আসিতেছে, পশ্চিমের রক্তময় মিলাইয়া যাইতেছে, যেন রাঙা গোলাপের পাতাগুলি ধীরে ধীরে কালো হইয়। আসিতেছে ; একে একে তার ফুটয় উঠিতেছে। বালিশে হেলান দিয়া চুরুট টানিতে টানিতে এই আলোছায়াময় উদাস প্রান্তরের দিকে চাহিয়া অনেক কথাই যুবকটির মনে পড়িতে লাগিল। ধীরে ধীরে সম্মুখে নবমীর চাদ উঠিল ; ভাহারই রূপালী আলো শালবনের অন্ধকারে দৈত্যপুরে সুপ্ত কোন রাজকন্যার জন্য পেন পথ খুজিয়া খুজিয়া ফিরিতেছে ; ছোটপাহাড়গুলিকে দেখাইতেছে যেন দৈত্যের দারি বাধিয়া তর্জনী তুলিয় দাড়াইয়া আছে। এই তারাভর আকাশের তলায় উন্মুক্ত প্রকৃতির মধ্যে জ্যোংস্কার মায়ালোকে রূপকথা-রাজ্যের দুয়ার খুলিয়৷ যায়, অন্তরের অনন্তকালের রাজপুত্র জাগিয় উঠে, এই গিরিবন লঙ্ঘন করিয়া তেপান্তরের মাঠের পর মাঠ পার হইয়া কোথায় যাইতে চায়—অসীম তাহার আশা, দুর্জয় তাহার শক্তি, দুর্গম তাহার পথ, স্থদুরের বাণী তাঙ্গকে ঘরছাড়া করিয়াছে । তিনটি সিগারেট পুড়িয়া ছাই হইয় গেল, আর-একটি ধরাইল। তরুণীর বসিবার ভঙ্গীর অপূৰ্ব্ব স্বযমাময় ছবিটি তাহার চোখে বার বার জাগিতে লাগিল । ফুলের গন্ধে মৌমাছি মেন আকুল হইয় উঠে এই তরুণীর মুখ তাহার মনে তেমনি নেশা জাগাইয়াছিল । বার বার সে ভাবিতেছিল, এ মুখ সে আজকে ট্রেনে নয়, ইঙ্গর পূৰ্ব্বেও কোথায় দেখিয়াছে, ভাবিয়া ভাবিয়া কিছুতেই মনে করিতে পারিতেছিল না। . সিগারেটের বাক্স খুলিয়া আর-একটা সিগারেট তৈরী করিয়া ধরাইল । এতক্ষণে মনে পড়িল, রসেটার আঁকা একখান ছধি দেখিয়াছিল, তাহারই মত এই মুখখানি; ছবিটার নাম মনে পড়িল না, নাই পড়ুক—রসেটার সেই প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩২৯ [ ২২শ ভাগ, ১ম খণ্ড صحامی ماه ছবিধানি মূৰ্ত্তিমতী দেখিয়াই শে বিমুগ্ধ হইছিল। প্রভেদের মধ্যে শুধু এ মুখের গণ্ডে একটি তিল । প্রিয়ার তিল সম্বন্ধে হাফেজের কবিতা যখন সে পড়িয়াছিল, তখন সে তাঙ্গ কবির পাগুলামী ভাবিয়াই মনে মনে হাসিয়াছিল; আজ মনে হইল, সত্যই একটি তিলের জন্য ত্রিভুবন দেওয়া যায়। বাহিরের প্রকৃতির মত সেও আপন মনে মায়াজাল বুনিতে লাগিল। তাছার এই হেইশ বছরের জীবন অনেক তরুণীর পশেই চঞ্চল রঙীন হইয়া উঠিয়াছে, কিন্তু কোথাও সে আশ্রয় খুজিয়া পায় নাই।’ স্বৰ্য্যাস্তের ষে রক্ত-বিহঙ্গ রূপ সে দেখিয়াছিল, তাহারই মত তাহার প্রাণ–এ নীড়-হারা পথিক-পাণী নব নব সৌন্দৰ্য্যলোক পার হইয়া উড়িয়া চলিয়াছে। তাহার প্রথম প্রেম হইয়াছিল এক পুতুলের সঙ্গে । সে যখন তিন বছরের, তখন তাহরি মামা তাহাকে ধে জাৰ্ম্মান পুতুলটা কিনিয়া দিয়াছিলেন, সেই নানা রংএর সাজপরা মেমটাকে বুকে জড়াইয়া সে প্রথম রাত ঘুমাইতেই পারে নাই। তাহার বয়স যখন সাত বংসর, সে তাহার সমবয়স্ক এক জেঠতুতে বোনকে বড় ভালোবাসিত ; আচার চুরি হইতে লাট্ট, ঘোরানো, পুকুবে নাওয়া, কুলগাছে চড়া, সব বিষয়ে বোনটিকে সঙ্গী না পাইলে কিছুই করিতে পারিত না । নয় বছর বয়সে সে তাহার এক বন্ধুর বোনকে ভালোবাসে। তাহাকে সে একদিন গাড়ী চড়িয়া যাইতে দেখিয়াছিল মাত্র, পরদিন মাসিক পরীক্ষায় অৰ্দ্ধেক আক না কলিয়া ও অৰ্দ্ধেক অঁাক ভুল কলিয়া আসিয়াছিল। মাঝে মাঝে বন্ধুকে ডাকিতে যাইয়া বন্ধুর বোনকে গছে দোল খাইতে দেখিত, তাহার সঙ্গে কোনদিন কথা হয় নাই। চৌদ্দ বংসর বয়সে সে তাহার বোনের এক বন্ধুকে ভালোবাসে। সেবার তাহাৰু পুরীতে বেড়াইতে গিয়াছিল, সেই সমুদ্রতীরে ঝিনুক কুড়ানোর ভালোবাসা, যত মুনীর ঝিমুক পাইত সে তাহাকে আনন্দের সঙ্গে উপহার দিত। যাইবার সময় তাহার দেওয়া অৰ্দ্ধেক বিহুক মেয়েটি ফেলিয়া গেল দেখ্রিয়া সে সমস্ত রাত কাদিয়াছিল। " 3. e * তাহার ঘরে বাহিরে পথে বিপথে কত তরুণীর