পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ჯ\ა অবসাদ আনয়ন করে ; ভাবহীন কলা—ক্ষণিক , কলাহীন ভাবুকতা-অসহ। ভাবের আবেগে স্পন্দিত হও ; নদীর মত প্রবাহিত হওঁ; সমুদ্রের মত গভীর হওঁ ; উৰ্ম্মির মত আঘাত কর । অগ্নিগর্ভ গিরির মত জলিয়া ওঠ । কবি এবং চিত্রকর অনুভূতির দ্বারা সকল সৌন্দর্ঘ্যের যিনি আধার তাহার পরিচয় পাইয়া থাকেন, তাই তাহার বিচিত্র সৌন্দর্য্যময়ী প্রকৃতিকে আরও মুন্দর করিয়া তুলিতে পারেন। সৌন্দর্য্য চিরস্থদেরকে মনে করিয়া দেয়, আবার তাহাকে ভুলাইয়াও দেয়। চিত্রে সৌন্দর্ঘ্যের আবশ্বকত। আছে ; কিন্তু পবিত্র ও গভীর ভাবের আবশ্বকতা আরও অধিক। অাজ দিবাশেষে রবি তাহার সমস্ত আলোক লইয়৷ পশ্চিমে চলিয়া গিয়াছে ; কাল প্রভাতে আবার নূতন হুর্য্যের নবীন আলোকে প্রাচীর দেহে পুলক-সঞ্চার হইবে। কবিতার পরিণতি মধুর ভাষা ওঁ সুন্দর ছন্দে নহে; তাহার সার্থকতা কবিত্বে ও ভাবে। পূজনীয় হইতে চেষ্টা করিও ; কৃপাপাত্র হইবার দীনতা স্বীকার করিও না । পদ্ম পূৰ্ব্বদিকে চাহিয়া থাকে নবেদিত রবির কিরণধারায় হৃদয়কে অনুপ্রাণিত করিবার জন্য ; আমরা নয়ন মুদিত করিয়া পশ্চিমে ফিরিয়া রহিয়াছি গত দিবসের কিরণোৰ্জ্জল আকাশকে হৃদয়ে অনুভব করিবার জন্য। চিত্রে যাহা রেখা, কাব্যে তাহা ছন্দ ; চিত্রে যাহা বর্ণসুষম, কাব্যে তাহা ভাষা। যেমন কোমল ভাষা এবং নিষ্কলঙ্ক ছন্দ হইলেই কাব্য হয় না, তেমনি অপূৰ্ব্ব বর্ণস্বৰ্যমা এবং নিভূল রেখাপাতেই চিত্র হয় না। উভয়েরই পরিণতি শুধু সৌন্দর্ঘ্যে নহে—ভাবে। উভয়কেই প্রাণের সদনে সঞ্জীবিত হইতে হইবে। কল্পনা যাহাকে স্বষ্টি করে, প্রত্যক্ষ তাহাকে ধ্বংস করে । , যে দেশে জাতীয় একতা বিকাশ প্রাপ্ত হইয়াছে সে দেশে পারিবারিক একত। বিরল। যে দেশ পারিবারিক একতার গৰ্ব্বে স্ফীত সে দেশ জাতীয় একতার মহিমা কবে বুঝিবে ? প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড কাব্য ও দর্শন মূলতঃ একই। কাব্য প্রেমের পথ । দশন জ্ঞানের পথ। কাব্য হৃদয়ের দ্বারা যাহা উপলব্ধি করে, দর্শন বুদ্ধির দ্বারা তাহার বিচার করে। চিত্রে ভাবপ্রবণতা বিকৃতি নহে ; সৌন্দৰ্য্য—দেহের । পরিপূর্ণ লাবণ্য বিকাশে নহে। ভাষা ভাবকে যেরূপ প্রকাশ করে সেইরূপ নিবিড়ও করিয়া তোলে। চন্দ্র করে তরল আকাশ কাহার জন্য ? আবার ঝঞ্জাক্ষুব্ধ মেঘময় আকাশই বা কাহার জন্য ? পার্থিবত চাও—ইউরোপের বর্তমান শিল্পে পাইবে। স্বৰ্গকে জানিতে চাও—ভারতশিল্পে পাইবে । নানারূপ পার্থীর কলরবে পূর্ণ বিশাল বট দেখিলেই একান্নবৰ্ত্তী পরিবারের কথা মনে পড়ে। - কুসুমকে প্রখর রৌদ্র-তাপের অন্তরালে রাখিও, কিন্তু আলোক ও সলিলকণী হইতে বঞ্চিত করিও না। অন্বেষণ কর—সঞ্জীবনী সুধা মিলিবে । কাব্যে ভাবকে সহজ করিবার জন্য ভাষা ও ছন্দকে পৰ্ব্ব করিবার দরকার হইয় পড়ে ! চিত্রে তাহার আত্মাকে পরিস্ফুট করিবার জন্য সৌন্দৰ্য্যকে খৰ্ব্ব করিতে হয়। তোমার আপন হৃদয়ের স্পন্দন থামিয়া গিয়াছে তাই জগতের প্রাণের স্পন্দন বুঝিতে পারিতেছ না। কবি এবং বৈজ্ঞানিক উভয়ে একেরই উপাসক। কবি , যাহাকে তাহার সমস্ত প্রেম উপহার দেন, বৈজ্ঞানিক তাহাকে তাহার সমস্ত কৰ্ম্ম অৰ্পণ করেন । যাহার অন্তর-রহস্য জানিতে চান, বৈজ্ঞানিক স্বাস্থ্যের বিনিময়ে তাহাকেই বুঝিতে চেষ্টা করেন। কবি মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি । বৈজ্ঞানিক একনিষ্ঠ সাধক । বন আপনার নবীন পল্লবের মহিমায় গৰ্ব্বিত ; আমরা পুরাতনের গৌরবে ভাবমগ্ন। স্বৰ্গকে স্বৰ্গরূপে দেখিতে চাও--ভারতশিল্প দেখিও। পৃথিবীতে স্বর্গ দেখিতে চাও—প্রাচীন ইতালির শিল্পের আলোচনা করিও । জগতের বিচিত্র রসধারায় স্নান করিয়৷ কৃতার্থ হও, সকল রসধারা যাহা হইতে প্রবাহিত র্তাহাকে স্পর্শ করিবার যোগ্য হইবে । কবি হৃদয়ের বিনিময়ে । - ৪র্থ সংখ্যা ] ভারত অসীমকে সীমাবদ্ধ করিতে চাহিয়াছে— মূৰ্ত্তিশিল্পে। সীমাবদ্ধকে অসীমত্ব আরোপ করিয়াছে— উপনিষদে । কৰ্ম্ম কর—প্রাণের স্পন্দনে আপনিই সঞ্জীবিত হইবে । অগাধ আলস্তে ডুবিয়া থাক—মরণ আপনিই আসিবে। চিত্রে বাস্তবতার আবশ্বক—সাধারণকে ভূলাইবার জন্য। ভাবপ্রবণতার আবশ্বক—চিত্রকরের কৃতার্থ হইবার জন্য । গিরিগৃহে যখন বৃষ্টিপার নামিয় আসে তখন শিল৷ নিঝরের গতি রোধ করিতে পারে না । একটা জাতির হৃদয়ে যখন ভাবধার নামিয় আসে তখন কেহই তাহাকে তাহার লক্ষ্য হইতে দূরে রাখিতে পারে না। সমুদ্র আপন বীৰ্য্যে অসংযত ; গিরি আপন মহিমায় অটল ; নদী তাহার সলিলক্ষীত গৰ্ব্বে প্রবাহিত ; কানন তাহার কুসুমসম্পদে মুর্থী ; মেঘ সলিলকণায় স্নিগ্ধ ; তার আমরা ?—আপন দীনতায় ম্ৰিয়মাণ। আগ্নেয়গিরির গহ্বরে যখন উত্তপ্ত ধাতুত্রব সঞ্চিত হইতে থাকে, তখন সহসা সে একদিন গ্রাম নগর এবং বনরাজিকে ধ্বংস করিবার জন্য সেই উগ্র এবং তরল ধাতুধারাকে উৰ্দ্ধে উৎক্ষিপ্ত করিয়া দেয়। একটা জাতি যখন আপন বীর্ষ্যে অসংযত, তখন সে স্বতঃই একদিন ধ্বংসের আনন্দে মত্ত হইয় উঠে। - শ্ৰীকৃষ্ণদাস আচাৰ্য্য চৌধুরী। তালের চিনি ভারতবর্ষের সমতলভূমিতে তালের ( Borassus Flabellifer ) মতো এরূপ বন্যগাছ আর নাই । নারিকেল, মুপারী প্রভৃতি তালজাতীয় অন্যান্য গাছ লোণ এবং ভিজা জায়গা ভিন্ন হয় না এবং বন্যভাবে জন্মাইতে তাহাদের কদাচিৎ দেখা যায়, কিন্তু তাল মানুষের চেষ্টাযত্নের কোন অপেক্ষ না করিয়া আপনা-আপনিই • জন্মায় এবং বাড়িয়া উঠে । ইহার রস অনেকদিন হইতে চিনির জন্য প্রসিদ্ধ। মাদ্রাজের দক্ষিণ প্রদেশে এবং উত্তর ব্রহ্মে এই রস জাল দিয়া গুড় তৈয়ারী হয় ; এই গুড় & তালের চিনি 8ՑԳ SMSMSMSMSMSMMSMMSMMSMSMAMAAASAASAASAASAASAASAASAAAS বাহিরে বড় একটা আসিতে পায় না, স্থানীয় লোকেরাই ইহা কিনিয়া লয়। কিন্তু নিতান্ত দুঃখের বিষয় যে বিহরের মতে স্থানে যেখানে তালগাছ অজস্র পরিমাণে জন্মায়, সেখানে লোকে ইহার রস হইতে শুধু "তাড়ি" নামক মাদকদ্রব্য প্রস্তুত করে ; ইহার রস হইতে যে ভাল চিনি পাওয়া যায় সেকথা সেখানে কেহ জানে বলিয়া মনে श्य नृ1 ।। চৈত্রমাসে তালগাছে ফুল ধরিতে শুরু করে এবং তখন হষ্টতেই তাড়ির সময় আরম্ভ হয় ; ভাদ্র আশ্বিন মাস পর্য্যন্ত তাড়ি তৈয়ারী পূৰ্বাদমে চলে। পুরুষ এবং স্ত্রী উভয়গাছ হইতেই রস পাওয়া যায়, কিন্তু একই সময়ে স্ত্রী গাছ পুরুষগাছের প্রায় দেড়গুণ রস দেয় এবং স্ত্রী । গাছের রসে চিনির পরিমাণ পুরুষগাছের অপেক্ষ টের বেশী। বিহারে পুরুষ-গাছকে “সিশ” এবং স্ত্রী-গাছকে “ফাল” বলে । স্ত্রী-গাছ হইতে প্রায় সারা বৎসরই রস পাওয়া যাইতে পারে, তবে শীতকালে রসের পরিমাণ অনেক কমিয়া যায়। পুরুষ-গাছ হইতে প্রায় একহাত লম্বা গোছা গোছা মোট ডাটা বাহির হয়, তাহাকে বাংলা দেশে জটা বলে। এই-সকল ডাটার উপর অসংখ্য ছোট ছোট ফুল থাকে। এইসকল ফুল পুরুষ-ফুল, সুতরাং তাহাদের হইতে ফল বাহির হয় না, স্ত্রী-ফুলের গর্ভসঞ্চার হইলেই তাহদের কাজ শেষ হইয়। যায়, তখন তাহারা ঝরিয়া পড়ে। খুব তীক্ষ ছুরী দিয়৷ এই সকল ডাটার অগ্রভাগ কাটিয়া দিয়া গোটাকতক ডাটা একসঙ্গে একটা ভীড়ের মধ্যে ঢুকাইয়া দেওয়া হয় ; এই সকল ডাটা হইতে রস চুইয়া বাহির হয় এবং পাতার বোটা হইতে ঝুলানো সেই ভীড়ের মধ্যে গিয়া জমে। স্ত্রী-গাছ হইতেও ঐরূপ অসংখ্য-ফুল-সংযুক্ত ডাটা বাহির হয়, এই-সকল স্ত্রী-ফুল পরে ফলে পরিণত হয় । পুরুষ-গাছের ন্যায় এই সকল ডাটারও অগ্রভাগ কাটিয়া ফেলিয়া গোটাকতক একসঙ্গে ভাড়ের মধ্যে ঢুকাইয়া দেওয়া হয় এবং তাহার মধ্যে রস গিয়া জমে। রসের জন্য খেজুর গাছের ন্যায় তালগাছের কাঠ কাটতে হয় না, সুতরাং রস বাহির করিলে তালগাছের কোন श्रनिड़े श्ध्न मा ।