পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$\\»br ১৫—২• বংসর বয়স হইতে তালগাছ রস দিতে অরম্ভ করে, এবং ৫°।৬০ বৎসর রস দেয় । তিন বৎসর অন্তর এক বৎসরের জন্য গাছকে "জিরেন" দিতে হয়, তাহা ন হইলে গাছ অত্যন্ত দুৰ্ব্বল হইয়া পড়ে এবং অবশেষে মরিয়া যাইবার সম্ভাবনা থাকে। দিনে দুইবার করিয়া রস পাড়া হয়—একবার সকালে ও আর একবার বৈকালে। সকাল বেলাকার রস খুব স্বচ্ছ, ঠাণ্ড এবং বেশ স্বগন্ধপূর্ণ। কিন্তু যতই বেলা বাড়িতে থাকে ততই দিনের উত্তাণে রস পচিতে (ferment ) আরম্ভ করে। ঐ রস হইতে তাড়ি করবে বলিয়াই একটু বেল না হইলে শিউলির রস নামায় না। একটা পূৰ্ণবয়স্থ গাছ হইতে পাচ ছয়মাস ধরিয়া প্রতিদিন সকালে ৬৭ সের রস পাওয়া যায়। সন্ধ্য। বেলাকার রস সাধারণতঃ চিনি তৈয়ারীর পক্ষে সম্পূর্ণ অনুপযোগী, কারণ সারাদিনের উত্তাপের মধ্যে পচন (fermentation) বন্ধ কর। একপ্রকার অসম্ভব , সুতরাং সে রস হইতে তাড়ি করাই (కRI -- তালের রসে শতকরা ১২ ভাগ চিনি (Saccharose) থাকে, গুড় (glucose) একেবারে নাই বলিলেও চলে। অধিকন্তু পত্ৰহরিত (chlorophyll ) নামক সবুজ পদার্থ একেবারে না থাকার দরুণ তালের রস স্বচ্ছ চিনি তৈয়ারীর পক্ষে বিশেষ উপযোগী। সুতরাং যদি সকালবেলার রস হইতে চিনি তৈয়ারী করা যায় তাহ হইলে প্রতিদিন একটা গাছ হইতে তিন পোয় হইতে একসের পর্য্যন্ত চিনি পাওয়া যায় এবং পাচ ছয়মাসে প্রায় সাড়ে তিন মণ চিনি হয়, অধিকন্তু বৈকালের রস হইতে অজস্র তাড়ি ও পাওয়া যায়। কিন্তু রস তাজা রাখা এবং পচন বন্ধ করা বড় দুরূহ ব্যাপার। মাদ্রাজের শিউলির ভীড়ের ভিতর-দিকে চুন মাখাইয়া দেয়, তাহাতে রস পচিতে পারে না। বিহারে চুনের উপযোগিতা পরীক্ষা করা হইঘাছিল, তাহতে ইহা বেশ কাৰ্য্যকর বলিয়া দেখা গিয়াছে; তবে বিহারের মতে দেশে ফমর্পলীনই (formaline এই কার্য্যের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। গাছে লাগাইবার আগে ভাড়টাকে বেশ ভাল করিয়া ধোয় লাগাইয়া (smoking) দুই সি-সি (c, c) পরিমাণ ক্ষমালীন তাহার মধ্যে দিলে রস খুব তাজ থাকে এবং একটুও পচিতে পারেন। প্রত্যেকবারই ব্যবহারের পূৰ্ব্বে ভাড়গুলিকে ভাল করিয়া ধুইয়া গরম করিয়া ধোয় লাগাইতে হইবে। চুনমাখানো রস হইতে যে চিনি পাওয়া যায় তাহার অপেক্ষ ফমলীিন-লাগানে রসের চিনি ঢ়ের পরিস্কার ও স্বচ্ছ হয়। এখন পর্য্যস্ত ও তাল-গাছের কোন নিয়মিত চাষ হয় নাই, এই গাছ আপনা-আপনিই এখানে ওখানে জন্মাইয়৷ থাকে। সাধারণতঃ দুইটি পাশাপাশি জমীর সীমানায় এক এক সারি তাল গাছ দেখিতে পাওয়া যায় বটে, তবে চাষের হিসাবে সেগুলিকে কেহ লাগায় নাই। যদি চিনির হিসাবে তাল-গাছের আদর বাড়ে তবে আশা করা যায় লোকে ইহার চাষের প্রতি মনোযোগী হইবে। বঙ্গীয় কৃষিবিভাগের আধুনিক কৃষিরসায়ণবিদ এ্যানেট সাহেব (Mr. Annet) *Zao ( Memoirs Chemical Section ; Vol. II, No. 6 ) যেখানে তাল এবং খেজুর পাশাপাশি জন্মায় সেখানে একটা কারখানা বেশ লাভের সহিত সারা বংসর চালানো যায়, কারণ খেজুররসের সময় শীতকাল, এবং তখন তালের রস বন্ধ থাকে। ঐনিৰ্ম্মল দেব । বঙ্গে অর্থনীতির চর্চ। জগৎ-সভ্যতার মূল খুজিতে গিয়া প্রায় সকল বিষয়েই পাশ্চাত্য পণ্ডিতদের প্রাচীর রবিকিরণেজ্জল স্বর্ণতৈারণে গিয়া উপস্থিত হইতে হইয়াছে , বিশেষভাবে বর্তমান সময়ে বহুধা লাঞ্ছিত ভারতবর্ষের শ্রীচরণে মাথা নোয়াইয়া সম্ভ্রমে ফিরিয়া আসিতে হইয়াছে । ইতঃপূৰ্ব্বে দর্শন, সাহিত্য, রসায়ন, গণিত, ভাস্কৰ্য্য, নৌনিৰ্ম্মাণ প্রভৃতি বিষয়ে ভারতের অগ্ৰগামিতা, অসামান্ত গবেষণা ও শিল্পনৈপুণ্য সভ্য জগতের নিকট প্রতিভাত হইয়াছিল । সভ্য জগতের শিশু-বিজ্ঞান “অর্থনীতি’র স্বত্রপাতও ভারতবর্ষে হইয়াছিল তাহ পাশ্চাত্য অর্থনীতিবিদগণ অধুনা মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করিতেছেন। - বর্তমান যুরোপীয় সভ্যতার বীজ মূলতঃ খ্ৰীসদেশে উপ্ত হইয়াছিল। কিন্তু হিন্দু ও গ্রীকদের মধ্যে যে ভাব ও [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩২২

  • ছিলেন ।

৪র্থ সংখ্যা ] ^ヘヘヘヘヘヘヘヘヘヘル ^ --০৮:৩১, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)০৮:৩১, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি) চিন্তার গভীর আদানপ্রদান হইয়াছিল তাহার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। এই অতীত ঘনিষ্ঠতানিবন্ধন ও গ্রীকসভ্যতার স্থিতিশীলতা লক্ষ্য করিয়া অনেক পাশ্চাত্য পণ্ডিত আজকাল গ্ৰীকদিগকে প্রাচ্যের সামিল বলিয়া ধরিয়া থাকেন এবং তাহাদিগকে ইহুদী ও হিন্দুদিগের নিকটআত্মীয় বলিয়া বিবেচনা করেন। যাহাই হউক অর্থনীতিশাস্ত্রের মোটামুটি কতকগুলি সত্য আমাদের পূর্বপুরুষগণ জানিলেও তাহকে বিজ্ঞানের আকার তাহারা দান করেন নাই। তাহদের মননশক্তির অক্ষমতার জন্য যে র্তাহারা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন নাই তাহা বলা চলে না, কারণ উহ। অপেক্ষা দুরূহতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিয়া তাহারা অদ্ভূত সফলতা লাভ করিয়া দ্বিতীয়তঃ জনসমাজ যে প্রকার পরিণত ও বৈচিত্র্যপূর্ণ অবস্থায় উপনীত হইলে অর্থনীতিশাস্ত্রের সম্যক অনুশীলন সম্ভবপর হইতে পারে তাহীদের সময়ে তাহা হয় নাই । যে কারণেই হউক যাহা হয় নাই সেজন্য আমাদের আজি আক্ষেপ করিবার প্রয়োজন নাই । বস্তুত: পাশ্চাত্য জগতে অর্থনীতি-বিজ্ঞানের বয়স এখনো দেড়শত বৎসর উত্তীর্ণ হয় নাই। ১৭৭৬ খৃষ্টাব্দে এডাম স্মিথের “দি ওয়েলথ অফ দি নেশন্স” প্রকাশিত হয় ; সাধারণত: ঐ গ্রন্থেই সৰ্ব্বপ্রথম অর্থনীতি-বিজ্ঞানের পত্তন হইয়াছিল বলিয়। স্বীকৃত হইয় থাকে। যুরোপ বহুযুগের সাধনায় যেসকল বিজ্ঞানে আপেক্ষিকপূর্ণতা লাভ করিয়াছে সেগুলি আজ ভারতীয় মনীষীদের শুধু অধিগত নহে, র্তাহার এসকল বিষয়ে তাহাদের স্বাধীন গবেষণালব্ধ নবতর সত্য-সকল আজ সভ্য জগৎকে দান করিতেছেন। অর্থনীতির ন্যায় শিশুবিজ্ঞানকে ভারতের মাটিতে ও জলবায়ুতে লালনপালন করিয়া তাহাকে পুষ্ট করিবার সময় আসিয়াছে। এ বিষয়ে আর ঔদাসীন্য কিছুতেই শোভনীয় मंश् । , - এই চেষ্টায় যাহার প্রবৃত্ত হইয়াছেন ও হইবেন তাহদের একটি কথা মনে রাখিতে হইবে। যুরোপ মুখে স্বীকার না করিলেও তাহার সভ্যতা বহিমুখীন ও জড়প্রধান ; অত্যুক্তি হইবে এই ভয়ে "জড়সৰ্ব্বস্ব" বললাম না, কিন্তু বঙ্গে অর্থনীতির চর্চ .-l.--്.--സ SSMSSSMSSSMSSS T жs» জড়সৰ্ব্বস্বতার দিকেই তাহার ঝোকটা বেশি তাহাতে সন্দেহ নাই। ভারত চিরদিন আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝোৰ দিয়া আসিয়াছে; সুতরাং জড়সভ্যতা স্থষ্টি করিবার উপযোগী প্রতিভা থাকা সত্বেও বৰ্ত্তমান যুরোপীয় জড়সভ্যতার উচ্চগ্রামে ভারত উপনীত হইতে পারে নাই। অক্ষমতা উহার কারণ নহে, অনিচ্ছাই উহার অন্তর্নিহিত কারণ। এই আধ্যাত্মিকতার উচ্চ আদর্শকে খৰ্ব্ব না করিয়া জড়সভ্যতার উচ্চতর গ্রামে দেশবাসীকে উন্নীত করিতে হইবে এই কথাটি আমাদের মনে রাধিতে হইবে l, বল বাহুল্য কাজটি অত্যন্ত কঠিন। যে খৃষ্টীয় সভ্যতার আদর্শ, “কল্যকার জন্ত ভাবিও না, “স্বচীর ছিদ্ৰ দিয়া উষ্ট্রের যাতায়াত বরং সম্ভবপর, তথাপি ধনীর স্বৰ্গপ্রবেশ সম্ভবপর নহে প্রভৃতি উক্তির মধ্যে স্বম্পষ্টরূপে দেখিতে পাওয়া যায়, সেই খৃষ্টীয় সভ্যতার বিলাসবিভ্রম ও তদানুষঙ্গিক ঔদ্ধত্য দেখিলে হিন্দুর ত্রাস জন্মানে কিছুই অশ্বাভাৰিৰ म८श् । শুধু তাহাইনহে, “stas Ran ngà” (“of a low standard of living”) to offs's notato যুরোপীয় উপনিবেশসমূহ হইতে হিন্দুনিৰ্ব্বাসনের মহা আয়োজন চলিয়াছে। তথাপি এই অসম্ভব ব্ৰত আমাদের উদ্যাপন করিতে হইবে। জড়সভ্যতার সঙ্গে আধ্যাত্মিকতার সমাবেশ সম্ভবপর ইহা প্রমাণ করিবার ভার ভারতের উপর নির্ভর করিতেছে। খৃষ্টীয় সভ্যতা যেখানে প্রতিদিন লয় মানিতেছে সেখানে আমাদের জয়পতাকা উজ্জন করিতে হইবে । ভারতবর্ষে অর্থনীতি সম্বন্ধে যাহার এ পৰ্য্যন্ত আরাধিক আলোচনা করিয়াছেন তাহ প্রায় ইংরেজীতেই করিয়াছেন। কংগ্রেসের কয়েকজন নেতা এবং তাহদের মধ্যে বিশেষভাবে স্বৰ্গীয় রমেশচন্দ্র দত্ত মহাশয়ের নাম এ সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য। বস্তুতঃ দত্তমহাশয় ছাড়া -জার কেছ আধুনিক ভারতীয় অর্থনীতির ধারাবাহিকতা নির্দেশ করিবার চেষ্টা করিয়াছেন বলিয়া মনে হয় না. সম্প্রতি একমাত্র অধ্যাপক যদুনাথ সরকার মহাশয়ের নাম উল্লেখ করিলে আমাদের তালিকা শেষ হইয়া যায়। ইংরেজীতে ক্ষুদ্র ক্ষুত্র রচনার মধ্যে বঙ্গদেশে যুক্ত রাধাকৃষ্ণু মুখোপাধ্যায় ও বিনয়কুমার সরকারের নাম উল্লেখ