পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫২৬ কোনও বায়গা সেখানে নাই। সুতরাং উপনিষদের কৰ্ম্মবাদ অপেক্ষ বুদ্ধের কৰ্ম্মবাদ যে অনেকগুণে জটিল তাহ স্বীকার না করিয়া উপায় নাই। একই মতবাদ ব| "theory" প্রথমতঃ সহজ আকারে প্রচলিত ছিল পরে জটিল ভাব ধারণ করিয়াছে, না প্রথমে জটিল ছিল পরে ক্রমশঃ সহজ হইয়া আসিয়াছে, এই সমস্যার একই মাত্র সমাধান হইতে পারে ; সেই সমাধান এই—মতবাদের সহজ আকারই আদিম আকার, জটিল আকার পরবর্তী । কৰ্ম্মবাদ যে-আকারে উপনিষদে পাওয়া যায় তাহাই উহার আদিম আকার, বুদ্ধের কৰ্ম্মবাদ উহারই বিকৃতি, অতএব তাহা পরবর্তী । ৪ । বুদ্ধের ধৰ্ম্ম ও সাংখ্যমত। বুদ্ধের ধৰ্ম্ম যে সাংখ্যপ্রভাবপুষ্ট তাহার দুই প্রকার প্রমাণ দেওয়া হয়—ঐতিহাসিক প্রমাণ এবং দার্শনিক প্রমাণ । বৌদ্ধশাস্ত্রে পরিরক্ষিত জনশ্রুতি অনুসারে কপিল বুদ্ধের কয়েক পুরুষ পূৰ্ব্বে বর্তমান ছিলেন । এই বিষয়ে মহাবস্তু অবদানে যে আখ্যায়িকা আছে তাহাই বোধ হয় সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন। মহাবস্তু অবদানে কথিত হইয়াছে - শাকেতনামক মহানগরে স্বজাত নামক ইক্ষাকুবংশীয় রাজা ছিলেন। স্বজাত তাহার ওপুরাদি পাচ পুত্র এবং পাচ কন্যাকে রাজ্যহইতে নিৰ্ব্বাসিত করিয়াছিলেন। ওপুর তাহার ভ্রাতাভগিনীগণকে লইয়া হিমালয়ের পাদদেশে কপিলঋষির আশ্রমের নিকটে বনথণ্ডে আশ্রয় লইয়াছিলেন ; পরে কপিলঋষির নিকট হইতে র্তাহার আশুম চাহিয়া লইয়া তথায় কপিলবস্তু নগর নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন। মহাবস্তু অনুসারে গৌতমৰূদ্ধের পিতা শুদ্ধোদন ওপুরের প্রপৌত্রের প্রপৌত্র। সাংখ্য প্ৰবৰ্ত্তক কপিল যে অতি প্রাচীনকালে প্রাজুভূত হইয়াছিলেন একথা ব্রাহ্মণদিগের শাস্ত্রেও কথিত হইয়াছে। গৌড়পাদ সাংখ্যকারিকার ভায্যের উপোদঘাতে এই বচনটি উদ্ধৃত করিয়াছেন— সনকশ্চ সনন্দশ তৃতীয়শ্চ সনাতন । আহরি: কপিলশ্চৈব বো: পঞ্চশিখস্তথা। ইত্যেতে ব্রহ্মণ: পুত্রাঃ সপ্ত প্রোক্ত মহৰ্ষয়: ॥" I, pp. 348.

  1. Mahavastu, cdited by 352.

প্রবাসী-শ্রাবণ, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড SumitaBot (আলাপ) ০৮:৩৬, ১৯ এপ্রিল ২০১৬ (ইউটিসি)ു কপিলের সাংখ্যকে বুদ্ধ অপেক্ষা প্রাচীনতর মনে করিান্ত পারিলে বুদ্ধের মতকে সাংখ্যমতের রূপান্তর মনে কর অবখ্যম্ভাবী। বুদ্ধের ধৰ্ম্মের গোড়ার কথা যেমন দুগ্ধ আর্য্যসত্য, সাংখ্যমতের গোড়ার কথাও "দুঃখত্রয়াভিঘাত"। বুদ্ধের মতে জন্মান্তরে কৰ্ম্মফলের বাহক যেমন আত্মা নন্ধে সাংখ্যমতেও জন্মাস্তরে কৰ্ম্মফলের বাহক আত্মা নহে, আত্ম৷ ব। পুরুষ নির্লিপ্ত। সাংখ্যমতে লিঙ্গ-শরীরকে কৰ্ম্মফলের বাহক ধরা হইয়াছে ; বুদ্ধ আর একটু অগ্রসর হই। কৰ্ম্মক্ষেত্র হইতে লিঙ্গ-শরীরকেও বিদায় করিয়া দিয়াছেন। উপনিষদের সহিত বুদ্ধের ধৰ্ম্মমতের যে সম্বন্ধ, সাংখ্যের সহিত বুদ্ধের মতের সম্বন্ধ তার চেয়ে অনেক বেশী। কিন্তু সাংখ্যকে বুদ্ধের পূর্ববর্তী মনে করিবার এক গুরুতর অস্তুরায়, আমরা যে-সকল গ্রন্থে এখন সাংখ্যমতের পরিচয় পাই তাহ অনেক পরবর্তীকালের রচনা। যাহারা বিশ্বাস করিতে পারেন এইসকল গ্রন্থ অপেক্ষাকৃত আধু নিক হইলেও এই সকল গ্রন্থে যে মত নিবন্ধ হইয়াছে তাহা অতি প্রাচীন, তাহারা অবশুই বুদ্ধের ধৰ্ম্মকে সাংখা মূলকই মনে করিবেন। কিন্তু এইরূপ বিশ্বাস করা সকলের পক্ষে সহজ নহে । এই সম্পর্কে অধ্যাপক ডয়ুসেন একটি “মধ্যম প্রতিপদ" বাহির করিয়াছেন। মহাভারতের অন্তর্গত সনংমুজাতপৰ্ব্ব, ভগবদগীত, মোক্ষধৰ্ম্মপৰ্ব্বাধ্যায় এবং অনুগীত একত্র বিচার করিয়া ডয়সেন সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, ভারতীয় দর্শনের ইতিহাসে তিনটি স্বতন্ত্রযুগ ধরিতে হইবে। প্রথম যুগ উপনিষদে নিবন্ধ দার্শনিক মতের যুগ। তৃতীয় যুগ, সূত্র কারিকা এবং ভাষ্যাদিতে নিবন্ধ যড়দর্শনের যুগ। এই দুই যুগের মধ্যে দ্বিতীয় যুগ, মহাভারতীয় দর্শনের যুগ। উপনিষদের যুগের এবং মহাভারতীয় যুগের সন্ধিস্থলে কাঠক, শ্বেতাশ্বতর, মৈত্রায়ণীয় প্রভৃতি উপনিষদের দার্শনিক মত। মহাভারতে নিবন্ধ দার্শনিকমতকে ডয়ুসেন প্রাচীন সাংখ্য s:ti itut:taf: c:Wt: (realistic Vedanta) সংজ্ঞা প্রদান করেন, এবং এই প্রাচীন মত হইতে ঈশ্বর কৃষ্ণের কারিকার সাংখ্য এবং শাস্কর ভায্যের বেদান্ত উৎপন্ন - Society," 1907, pp. o "Journal of the Royal. 162-463, I I

  • ৪র্থ সংখ্যা]*

হইয়াছে এইরূপ মনে করেন। বৌদ্ধমত সম্বন্ধে ডয়সন বলেন, "কোন কোন পণ্ডিত মনে করেন বুদ্ধের ধৰ্ম্ম সাংখ্যদর্শনের একটা শাখা, আবার কেহ কেহ বলেন বৌদ্ধধৰ্ম্ম সাংখ্যের পূর্ববৰ্ত্তী। উভয় সম্প্রদায়ই ঠিক কথা বলেন। এখন আমরা যাহাকে সাংখ্য বলি বৌদ্ধধৰ্ম্ম নিশ্চয়ই তাহার পূর্ববৰ্ত্তী, কিন্তু মহাভারতীয় সাংখ্যের অনুগত।” * ডয়সেন বলেন, মহাভারতীয় সাংখ্যের সারকথা, প্রকৃতি এবং বহুপুরুষ এই উভয়ই নিত্য, অথচ উভয়ের অতিরিক্ত ব্রহ্মের অমুগত। প্রমাণ-স্বরূপ মহাভারতের শাস্তিপর্কের দুইটি শ্লোক ( ১১৭৬৭ ) উদ্ধৃত করা যাইতে পারে,—“তত্ব জানিতে হইলে অব্যক্ত অর্থাং প্রকৃতি এবং পুরুষ উভয়কেই জানিতে হইবে। প্রকৃতি এবং পুরুষ হইতে যাহা স্বতন্ত্র এবং উচ্চতর সেই বিশিষ্ট বস্তুকে অর্থাং পরমাত্মাকে বিচক্ষণ ব্যক্তি বিশেষভাবে দর্শন করিবেন। এই উভয়ই অর্থাৎ প্রকৃতি এবং পুরুষই আদি-অন্ত-রহিত এবং অলিঙ্গ " + মহাভারতীয় দার্শনিক মতের মৌলিকতা এবং প্রাচীনতা সম্বন্ধে ডয়সেনের মত এখনও সৰ্ব্বত্র সমাদর লাভ করে নাই। এখনও অনেকে মনে করেন মহাভারতীয় দার্শনিক মত সাংখ্য-বেদাস্তের খিচুড়ী। কিন্তু মহাভারতীয় সাংখ্যের মৌলিকতা সম্বন্ধে অশ্বঘোষ-বিরচিত বুদ্ধচরিতের প্রমাণ উপস্থিত করা মাইতে পারে। বুদ্ধচরিত কাব্যের দ্বাদশ অধ্যায়ে অরাড়কালাম কর্তৃক ভাবী বুদ্ধের নিকট যে মত ব্যাখ্যাত হইয়াছে তাহার সহিত মহাভারতীয় সাংখ্যের বিশেষ সাদৃশ্ব লক্ষিত হয়। প্রকৃতি, তাহার বিকার এবং ক্ষেত্ৰজ্ঞ বা পুরুষ সম্বন্ধে অশ্বঘোষ লিখিতেছেন- - --.--م۔۔۔مہ۔--

  • "Some scholars maintain that the religion of

Buddha is an off-shoot of the Samkhya system, others that Buddhism is anterior to the Samkhyam. Both are right, Buddhism certainly precedes what we call now the Samkhya system, but it depends on what is called Sankhyam in the Mahabharatam." Indian Antiquary, Vol. XXiX, p, 398. “তদেবমেতে বিঙ্গেরাবণাক্ত পুরুত্বাবুভৌ৷ অব্যক্তপুরুষাভ্যাং তু যং স্যান্তৰ্ম্মহত্তর। তং বিশেৰমবেক্ষেত বিশেষেণ বিচক্ষণঃ। অনাদাতাৰূভাবেতাবলিংগে চাপু ভাবপি । (শান্তিপৰ্ব্ব, ১১৭৬-৭ ) --গৌতম বুদ্ধের ধর্ম ৫২৭ MMMMMSMSMSMS তত্ৰ তু প্রকৃতির্মম বিদ্ধি প্রকৃতিকোবিদ। পঞ্চভূতান্তহংকার বুদ্ধিমব্যক্তমেব চ। বিকার ইতি বুদ্ধিং তু বিষয়ানিজিয়াণি চ | পাণিপাদং চ বাদং চ পায়ুপস্থং তথা মনঃ ॥ অস্ত ক্ষেত্রস্ত বিজ্ঞানাং ক্ষেত্ৰজ্ঞ ইতি সংজ্ঞি চ। ক্ষেত্ৰজ্ঞ ইতি চাত্মানং কথয়ন্ত্যাত্মচিন্তকাঃ।।১৮২৯। মুক্তি বা মোক্ষ সম্বন্ধে অরাড় বলিতেছেন “ততে মুজা ইষীকেব শকুনি পংজরাদিব। ক্ষেত্রজ্ঞো নিঃস্বতে দেহান্মুক্ত ইত্যভিধীয়তে। এতং তং পরমং ব্রহ্ম নির্লিঙ্গং ধ্রুবমক্ষরং। যন্মোক্ষ ইতি তত্ত্বজ্ঞা কথয়ক্তি মনীষিণ: ॥”৬৪-৬৫ ৷ মুক্তক্ষেত্ৰজ্ঞ এবং পরমব্রহ্ম এক পদার্থ-অশ্বঘোষের এই বচন গীতার "ক্ষেত্ৰজ্ঞ চাপি মাং বিদ্ধি সৰ্ব্বক্ষেত্ৰেষু ভারত" স্মরণ করাইয়া দেয়। মোক্ষের উপায় ব্রহ্মচৰ্য্য এবং জ্ঞান সম্বন্ধে অশ্বঘোষ লিখিয়াছেন— * - “তত্র সম্যগতি-বিদ্যান্সোক্ষকাম চতুষ্ট্রং।-- প্রতিবুদ্ধা প্রবুদ্ধৌ চ ব্যক্তমব্যক্তমেব চ। ৫ ঘথাবদেতদ্বিজ্ঞায় ক্ষেত্রজ্ঞে হিচতুষ্টয়ং। ി আৰ্জবং জবভাং হিতা প্রাপ্নোতি পদমক্ষয়ং। ইত্যর্থং ব্রাহ্মণ লোকে পরমব্রহ্মবাদিনঃ। ব্রহ্মচৰ্য্যং চরংতীহ ব্রাহ্মণান বাসস্থতি চ ॥৪৮-৪২।” এখানে দেখা যাইবে অশ্বঘোষের মতে জরাড যেমন একদিকে জগতের মূলকারণ আত্ম হইতে পৃথক প্রকৃতির অস্তিত্ব স্বীকার করিতেন, তেমন আর-একদিকে তিনি পরমব্রহ্মবাদীও ছিলেন। ইহাই মহাভারতীয় সাংখ্য বা realistic Vedanta । অশ্বঘোষ এই মতকে সাংখ্যের এবং বেদাস্তের খিচুড়ী মনে করিতেন না। একটা গোটা মৌলিক । মত—কপিলের মত বলিয়া মনে করিতেন। কারণ তিনি এই প্রসঙ্গে কপিলেরও উল্লেখ করিয়াছেন। যথা— “সশিষ্য কপিলশ্চেহু প্রতিবুদ্ধ ইতি পতিঃ। সপুত্র প্রতিবুদ্ধশ্চ প্রজাপতিরিহোচ্যতে ॥২১]” অশ্বঘোষের সময়ে এই সাংখ্যই বোধ হয় বৌদ্ধমতের প্রধান প্রতিযোগী ছিল ; তাই অশ্বঘোষ অরাড়ের মুখে এই মত বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা করিয়া ভাবী ৰূদ্ধের দ্বারা তাহ খণ্ডন করাইয়াছেন। অশ্বঘোষ আঠার শত বৎসর পূৰ্ব্বে