পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৩৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. وق جاني . এই সময়ে মণ্ডপের তোরণে কোলাহল উখিত হইল । গৌড়েশ্বর দূতের কথা শেষ হইবার পূঞ্চেই কহিলেন, “দুতপ্রবর। গোবিদের প্রার্থন যাহাই হউক না কেন তাঙ্গা পূর্ণ হইবে।” এই সময়ে জনৈক কৃশকায় বৃদ্ধ দ্রুতপদে সভামণ্ডপে প্রবেশ করিল এবং উচ্চৈঃস্বরে কহিল, “মহারাজ, সৰ্ব্বনাশ করিবেন না, সৰ্ব্বনাশ করিবেন না।" ধৰ্ম্মপাল বিস্মিত হইয়া উহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কে? কি বলিতেছ?” বৃদ্ধ সিংহাসনের সম্মুখে দাড়াইয় অবনত মস্তকে কহিলেন, "মহারাজাধিরাজ, আমি বিশ্বাসঘাতক, আমি নরঘাতী, আমি বুদ্ধভদ্র।" - ধৰ্ম্মপাল ঈষৎ হাস্ত করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কে ? সঙ্ঘস্থবির ? আপনি গৌড়রাজ্যে কেন ? গুর্জররাজ কি দূত প্রেরণ করিয়াছেন ?” বৃদ্ধ মস্তকেত্তোলন করিয়া কহিলেন, "গৌড়েশ্বর, তুমি বালক, বুদ্ধকে উপহাস করিও না। আমি সঙ্ঘস্থবির নহি, নরঘাতক পিশাচ, ভগবান বুদ্ধ আমার শাস্তি বিধান করিয়াছেন। চক্রের পরিবর্তন বুঝিতে পারি নাই, আমি বণিকের পুত্র, সুবর্ণের লালসায় অন্ধ হইয় গুর্জররাজের আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলাম। সহস্ৰ সহস্ৰ নরনারীর রক্তস্রোতে আর্য্যাবৰ্ত্ত প্লাবিত করিয়া আমার মহাপাতকের প্রায়শ্চিত্ত হইয়াছে। বুদ্ধকে উপহাস করিও না ; তুমি গৌড়েশ্বর হইলে কি হয়, সামান্য জীবের ন্যায় তুমিও চক্রে আবদ্ধ। আপনার সর্বনাশ করিও না, গোবিন্দের প্রার্থন পূরণ করিও না, তাহা হইলে জন্মের মত শান্তি হারাইবে— ইহাই বিধিলিপি।" এই সময়ে বিশ্বানন্দ সিংহাসনের নিকটে গিয়া বৃদ্ধকে কহিলেন, “সজঘস্থবির আপনি কি বলিতেছেন?" বৃদ্ধ তাহার দিকে দৃষ্টিপাত না করিয়া কহিলেন, “সত্য কহিতেছি, গণনা মিথ্যা হইবার নহে; গোপালের পুত্র ধৰ্ম্মপাল, তুমি যদি অদ্য ধ্রুবের পুত্র গোবিন্দের প্রার্থনায় কর্ণপাত কর, তাহ হইলে তোমার সর্বনাশ হইবে।” গৌড়েশ্বর ধীর স্বরে কহিলেন, "সঙ্ঘস্থবির, আপনি গৌড়রাজ্যের মিত্র কি শক্র তাহা বুঝিতে পারিতেছি না। প্রবাসী-ভদ্র, ১৩২২ [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড রাষ্ট্রকুটরাজ গোবিন্দ আমার রক্ষাকৰ্ত্ত, তিনি আধ্যাবৰ্বের পরিজ্যুত, তাহাকে আদেয় আমার কিছুই নাই, আমি এইমাত্র মহারাজাধিরাজ গোবিন্দের প্রার্থনা পূরণ করিব স্বীকার করিয়াছি।" বৃদ্ধ ধীরে ধীরে অবনত মস্তকে কহিলেন, "ধৰ্ম্মপাল, বিধিলিপি অখণ্ডনীয়, আমি কীট খুকীট, চক্রের গতিরোধ করি আমার কি সাধ্য আছে।" বুদ্ধ এই বলিয়। ধীরে ধীরে সভা-মণ্ডপ পরিত্যাগ করিলেন। কিয়ংক্ষণ পরে গৌড়েশ্বর রাষ্ট্রকূটরাজদূতকে জিজ্ঞাসা করিলেন, "দতপ্রবর, রাষ্ট্রকূটরাজ কি প্রার্থনা করেন ?" দত কহিলেন, "গৌড়েশ্বর, ধ্রুবের পুত্র গোবিন্দের প্রার্থন এই যে গৌড়েশ্বর এক রাষ্ট্ৰকুট-রাজকুমারীর পাণিগ্রহণ করিয়া তাহাকে গৌড় সাম্রাজ্যের পটুমহাদেবীরূপে গ্রহণ করেন।" পরমেশ্বর পরম ভট্টগ্রক পরম সৌগত মহারাজাধিরাজ ধৰ্ম্মপালদেব বাত্যাহত কদলীবৃক্ষের ন্যায় সিংহাসনে পতিত श्लन । চতুর্থ পরিচ্ছেদ । মেক্ষমাগ। সভামণ্ডপে গৌড়েশ্বর যখন রাষ্ট্রকূটরাজদূতের অভ্যর্থনা করিতেছিলেন, তখন মহাদেবী দেদদেবী কল্যাণীদেবী ও অমলা অন্তঃপুরে লোকনাথের মন্দিরের সম্মুপে মণ্ডপে উপবেশন করিয়া পুরমহিলাদিগের সহিত আলাপ করিতেছিলেন। মহাদেবীকে প্রণাম করিয়া কহিল, "দেবী, জনৈক ভিক্ষু দেবদর্শন-মানসে অন্তঃপুরের তোরণে দাড়াইয়া আছেন, আপনারা লোকনাথের মন্দিরে আছেন শুনিয়া অন্ত:প্রতীহার তাহাকে প্রবেশের অনুমতি দিতে পারিতেছেন না। ভিক্ষু মহাদেবী ও পট্টমহাদেবীর সমীপে দেব দৰ্শনবাঞ্ছা জ্ঞাপন করিতে কহিয়াছেন।” দেদদেবী কহিলেন, "ভিক্ষু দেবদর্শনে আসিবেন ইহাতে দোষ কি ? তুমি অন্ত:প্ৰতীহারকে পথ ছাড়িয় দিতে বল।" - মহল্লিক। পুনরায় প্রণাম করিয়া চলিয়া গেল। দেদদেবী তখন সেই সময়ে একজন মহল্লিকা আসিয়া । ৫ম সংখ্যা] • ধৰ্ম্ম সেদিন যুদ্ধের কথা হইতেছিল । গুর্জরযুদ্ধে বহু গৌড়ীয় বীর প্রাণ বিসর্জন দিয়াছিল, তাহাদিগের স্ত্রী পুত্র আত্মীয় স্বজন যুদ্ধে নিহত হইয়াছিল, তাহার সাশ্রনেত্রে যে যে যুদ্ধে তাহার। জীবন বিসর্জন দিয়াছিল, সেই-সকল যুদ্ধের কথা বলিতেছিল। মহাদেবী বাকৃপাল কর্তৃক গুর্জর রাজ্য আক্রমণের কথাই বলতেছিলেন। এইবার গৌড়ীয় সেনা কান্তকুঞ্জ পার হইয়া বহুদূরে বাইবে। ইতিহাসপুরাণবিশ্রুত শতদ্রু বিপাশা ও ইরাবতী পার श्ञा निकृडौद्र १६थ् १३८ड श्¢द । पाशद्र वाइंद তাহাদিগের কয়জন ফিরিবে ? ধৰ্ম্মপালের সহিত যাহারা চক্রায়ুধের রাজ্য উদ্ধার করিতে গিয়াছিল, তাহাদিগের অৰ্দ্ধেক ও ফিরে নাই, যাহারা ফিরিয়াছিল, তাহারা মগধে গৌড়ে এবং রাঢ়ে স্বদেশ রক্ষার্থ প্রাণত্যাগ করিয়াছে। গুর্জররাজের সাহায্যে যুদ্ধ জয় হইয়াছে বটে কিন্তু চারিদিকে হাহাকার ব্যতীত অন্য শব্দ শুনা যায় না। বাক্পালের সহিত যাহারা পঞ্চনদে যাইবে তাহার। পিতা মাত ভ্রাত ভগিনী—স্ত্রী পুত্র কন্যার নিকট বিদায় গ্রহণ করিয়াছে। একজন বিধবার চারিজন পুত্র সমরক্ষেত্রে শয়ন করিয়াছে, কনিষ্ঠ পুত্র মহাকুমারের সহিত যুদ্ধে যাইবে বলিয়৷ মতার নিকট বিদায় লইয়াছে। অভাগিনী মাত৷ সংসারের সকল বন্ধন হইতে মুক্ত হইয়া মহাদেবীর আশ্রয়ে আসিয়াছে। এই সময়ে একজন ভিক্ষু লোকনাথের মন্দিরে প্রবেশ করিলেন। কিয়ংক্ষণ পরে মন্দিরাভ্যন্তর হইতে গম্ভীর মধুর কণ্ঠে লোকনাথসাধন উচ্চারিত হইতে লাগিল – “লোকনাথং শশিপ্রভং স্ত্রী; কারাক্ষরসস্তৃতং জটামুকুটমণ্ডিতং বজ্ৰধৰ্ম্মজটান্তঃস্থং অশেষরোগনাশনং বরদং দক্ষিণে হস্তে বামে পদ্মধরং তথা ললিতাক্ষেপসংস্থং তু মহাগৌম্যং প্রভাস্বরং বরদোৎপলক সৌম্য তার দক্ষিণত: স্থিত। বন্দনা দণ্ডহস্তম্ভ হয়গ্ৰীবোথ বামত: ক্সবর্ণে মহারেীত্রে ব্যাঘ্ৰচৰ্ম্মাম্বর প্রিয় ওঁ হী: স্বাহ৷ ” পাল y ৬২৭ ,- -ഹ~ গেল, দুই একজন পুরমহিলা মন্দিরের নিকটে আসিয়৷ স্তম্ভের অন্তরালে দাড়াইয়। ভিক্ষুর পূজা দেখিতে লাগিলেন। পূজা সমাপ্ত হইলে ভিক্ষু মন্দিরের বাহিরে আসিয়া অবনত মস্তকে প্রস্থান করিতেছিলেন, এই সময়ে যে বিধবা রমণীর চারিজন পুত্র হত হইয়াছে, সে ভিক্ষুর সম্মুখে যাইয়৷ তাহাকে প্রণাম করিল। ভিক্ষু বাধা পাইয়া দাড়াইলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, “ম, তুমি কি চাও?” রমণী কহিল, "প্রন্থ, অভাগিনীর চারি পুত্র যুদ্ধে নিহত হইয়াছে, সৰ্ব্বশেষে পঞ্চম পুত্ৰ মহাকুমারের সেনাদলে বোগদান করিয়াছে, সে কি ফিরিবে ?” “মা, আমি কেমন করিয়া বলিব ?” “প্ৰভু, আপনারা সৰ্ব্বঞ্জ, আমি অনাথিনী, এই যুদ্ধে আমার সর্বনাশ হইয়া গিয়াছে। আমার সংসার ছিল, গুর্জর যুদ্ধে তাহা ছারথার হইয়া গিয়াছে। প্রভু তিনটি বিধবা বধূ আর বৃদ্ধ বয়সের শেষ অবলম্বন অন্ধের স্বটি সপ্তদশ বর্ষীয় বালক লইয়। বাস করিতেছিলাম, রাজার আহানে সেও যুদ্ধে চলিয়। গিয়াছে। তাহাকে বুকের ভিতরে চাপিয়া রাশিয়াছিলাম কিন্তু সে বন্ধন ছিড়িয়া চলিয়া গিয়াছে। প্রন্থ, সে কি আর আসিবে না? বলুন, আপনার কথা অচল।” রমণী এই বলিয়। ভিক্ষুর পদযুগল ধারণ করিয়া মন্দির-প্রাঙ্গণের পাষণে মন্তক ঠকিতে লাগিল। তখন ভিক্ষু ব্যস্ত হইয়া কহিলেন, “ম, অধীর হইও না, উঠ।" রমণী উঠিল, তাহার কপাল কাটিয়৷ গিয়াছিল, রক্তধারায় শুভ্র বস্ত্র রঞ্জিত হইয়া গিয়াছিল। ভিক্ষু কহিলেন, “ম, তোমার হাত দেখাও।” রমণী তাহার বাম হস্ত প্রসারিত করিল, ভিক্ষু তাহ পরীক্ষা করিয়া মন্দিরের পাষাণাচ্ছাদিত প্রাঙ্গণে বসিয়া রেখাঙ্কণ করিতে লাগিলেন। ক্রমে গুরমহিলাগণ আসিয়া ভিক্ষু ও পূৰ্ব্বোক্ত রমণীকে বেষ্টন করিলেন, সকলেই ভাগ্যগণনার জন্য ব্যস্ত। ভিক্ষু কিয়ুংক্ষণ পরে গণনা শেষ করিয়া কহিলেন, “ম, কোন ভয় নাই, তোমার কনিষ্ঠপুত্র ফিরিয়া আসিবে।" রমণী কৃতজ্ঞ হৃদয়ে ভিক্ষুর পদতলে লুটাইয়া পড়িল। দেখিতে দেখিতে দুই দণ্ড অতিবাহিত হইয়া গেল; ভিক্ষু মহিলাগণের পুরমহিলাদিগের সহিত বাক্যালাপ আরম্ভ করিলেন। BB BB BBB DD BBBBBB BBBB DD DBBS BB BBBS BBBS BBBB BBBB BBBB BBBBBBB - >>