পাতা:প্রবাসী (পঞ্চদশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রহণ কর । সকল গীতার সার। হোমার, এস্কাইলাস, এবং আরো যত প্রাণময় গ্রীক পুরাণ আজ আদরে বরণ করিয়া লও ; কারণ উহ নববসন্তের প্রাণশক্তি ধারণ করে, এবং উহ। পরিণত বসন্তের নিবিড় নীলাকাশের মত দীপ্তিমান । বেদে উহার প্রথম অরুণরাগ ; রামায়ণে উহার রক্তিম । গোধূলি; স্বষ্টির নিৰ্ম্মল শৈশবে প্রকৃতির কোলে, দেবতা ফুল তরু ও পশুপক্ষীর সরল ক্রীড়া এখানে মানব-মনকে বিস্ময়ে বিমুগ্ধ করিয়া ফেলে । অামার কাছে ১৮৬৩ খ্ৰীষ্টাব্দ অতি স্মরণীয় বৎসর। ঐ বৎসর আমি সৰ্ব্বপ্রথম ভারতের চির অমৃতের খনি রামায়ণ পাঠ করি । যখন এই কাব্য প্রথম উচ্চারিত হইয়াছিল স্বয়ং ব্রহ্মাও নাকি আত্মহারা হইয়া গিয়াছিলেন। দেবগণ পশুপক্ষী ও সরীস্বপ সংসারী ও সন্ন্যাসী সকলে মুগ্ধ হইয়া গিয়াছিল। যে এ মহাকাব্যের সমগ্র পাঠ করিয়াছে তাহার কি সৌভাগ্য ! যে ইহার অৰ্দ্ধেক পাঠ করিয়াছে সেও কত ভাগ্যবান রামায়ণপ্রবণে ব্রাহ্মণ জ্ঞানী হয়, ক্ষত্রিয় বললাভ করে, বৈশ্বের ধনপ্রাপ্তি হয়। দৈবাৎ যদি শূদ্র রামায়ণ শুনিতে পায় তবে তাহার শুদ্রত দূর হয়। যে রামায়ণ পাঠ করে সে সকল পাপ হইতে মুক্তিলাভ করে। এ কথা বড় সত্য কথা। এই মহাকাব্যপ্রবাহ আমার যথার্থই চিত্তশুদ্ধি করে। সংসারের যত জালাযন্ত্রণ, যত তিক্ততা তাহ ইহ ধৌত করিয়া দিয়া বিমল আনন্দরসের সঞ্চার করে । যাহার হৃদয় শুষ্ক হইয়া গিয়াছে তাহাকে এই রামায়ণ পড়িতে দাও। যদি কেহ তাহার প্রিয়জনকে হারাইয়া শোকে জর্জরিত হইয় থাকে তাহাকে এই রামায়ণ পড়িয়া প্রাণ জুড়াইতে দাও। যদি কেহ জীবনসংগ্রামে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত । হইয়া পড়িয়া থাকে তাহাকে এই রামায়ণস্থধ পান করিতে দাও, তাহার সকল শ্রান্তি ও অবসাদ দূর হইবে। মানুষ অবিশ্রান্ত খাটিতে পারে না। প্রতি বৎসর তাহার বিশ্রাম চাই ; তাহাকে দম লইতেই হইবে ও জীবনের উৎস হইতে নবজীবনধারা পান করিয়া তাহাকে নূতন কাজের জন্ত প্রস্তুত হইতে হইবে। সে নবজীবনধারা • আমাদের পূর্বপুরুষদের গৃহ ছাড়া আর কোথায় সঞ্চিত প্রবাসী—বৈশাখ, )\లిపిన अश्त्रिभित्र भड डखन हे आत्तख शक्डि आर्ट्ज बन? दकि ॐ हिबिंबिहाड क्रि. w গঙ্গা, অপরদিকে পারস্যের ক্ষীরনদীগুলি তাহাকে ঐ জীবনধারা জোগাইবে, আর কাহারো উহা দিবার সাধা নাই। পাশ্চাত্য জগতে সবই সঙ্কীর্ণ। গ্রীস্ এত ক্ষুদ্র যে সেখানে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হইয় আসে ; জুডিয়া এত শুষ্ক যে সেখানে তৃষ্ণায় আমার ছাতি ফাটে। তখন আমি একবার এশিয়ার উদার উচ্চভূমির প্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ করি, —গভীর প্রাচ্যের দিকে চাহিয়া থাকি। তখন ভারতমহাসমুদ্রের মত স্বর্যালোকে-সমুজ্জল একটি বিরাট কাব্য আমার সম্মুখে দেখিতে পাই , তাহার মধ্যে এক অপূৰ্ব্ব ঐক্যের স্বর শুনিতে পাই, দ্বন্দ্ব তাহার কাছেও ঘে যিতে । পারে না। একটি পরিপূর্ণ শান্তি সমস্ত গ্রন্থখানিতে ছড়াইয়া পড়িয়াছে, এমন কি উহাতে বর্ণিত যুদ্ধগুলির মধ্যেও একটা সীমাহীন মাধুর্য্য, একটি উদার ভ্রাতৃত্ব অমু ভব করি —সে ভ্রাতৃত্ব শুধু মাহুষকে আলিঙ্গন করিয়া । ক্ষান্ত হয় নাই—জীবমাত্রেই সে ভ্রাতৃত্বের আস্বাদনে অধিকারী ; সীমাহীন অন্তহীন একটা বিরাট সমূদ্র , প্রেম প্রীতি ও করুণার অনন্ত পারাবার। আমি যাহা খুজিতেছিলাম রামায়ণে তাহ পাইয়াছি ; সে কি ? সে প্রেমের গীত। মহাকাব্য! আমাকে গ্রহণ কর! ক্ষীরসমূদ্র । আমি একবার তোমাতে অবগাহন করি! রামায়ণ শুধু কাব্য নয়! ইহা একটি বিরাট ধৰ্ম্মগ্রন্থ। "ইহাতে ভারতের ইতিহাস পাইবে। ভারতের লোক প্রকৃতি, সমাজ, শিল্প, প্রকৃতির সুষম, তরুলতা, পশুপক্ষী ও ষড়ঋতুর বিচিত্র লীলা ও অপূৰ্ব্ব ইন্দ্রজাল ইহার মধ্যে দেখিতে পাইবে। ইহার সঙ্গে ইলিয়ডের তুলনা হইতে পারে না । ইহার মধ্যে একদিকে যেমন প্রাচীন ভারতের চিত্র দেখিতে পাইবে তেমনি আধুনিক ভারতের আভাসও পাইবে ; স্নিগ্ধ রসমাধুর্যো ও লালিতো উহা একমাত্র ইটালীয় কাব্যকলার সহিত তুলনীয়। পাশ্চাত্য জগতে যেমন আটঘাট বাধিয়া, মাপসই করিয়া সব জিনিস রচিত হয়, রামায়ণের মধ্যে সেরূপ একটা । কৃত্রিম বাধাবাধি দেখিতে পাইবে না। কেহ সেজন্য মাথা ঘামাইয়া মরে নাই। কিন্তু উহার বিচিত্র ছায়ায়, " বর্ণসম্পাতে ও স্বরে বিরোধের স্বষ্টি না হইয়া এক অপূৰ্ব্ব [ ১৫শ ভাগ, ১ম খণ্ড ১ম সংখ্যা ] ঐক্যের স্থষ্টি হইয়াছে। রামায়ণ-বর্ণিত অরণ্য ও পৰ্ব্বতেরই সহিত কেবল উহার তুলনা হইতে পারে। প্রচুর প্রাণশক্তি-বিশিষ্ট ছোট ছোট তরুলত বিরাট বনস্পতিসমূহের গৌরব বৰ্দ্ধন করিয়াছে ; এইসকল অরণ্যানী আবার শ্ৰেষ্ঠতর প্রাণীর লীলাভূমি। উদ্ধে কত বিচিত্রবর্ণের পার্থীর পক্ষসঞ্চালনশব্দ শুনিতে পাইবে ; ডালে ডালে কত শাখামূগের দোল দেখিতে পাইবে ; আবার ভূতলে তরুলতার নিবিড় শ্বামলতার অন্তরালে কৃষ্ণসারের ভূবনমোহন যুগল আঁখি তোমার মনকে মুগ্ধ করিয়া ফেলিবে। এই অখণ্ড পরিপূর্ণতাকে তুমি একটা মহা শূন্য বলিতে চাও ! কখনই না। এইসকল সৌন্দর্য্যের মধ্যে কেমন একটা মাধুর্য্য বিরাজিত রহিয়াছে। সন্ধ্যায় যখন স্বৰ্য্য গঙ্গার বক্ষে আপনার দুঃসহ দীপ্তিকে মিলাইয় দেন, যখন পৃথিবী শাস্ত হইয় আসে, তখন বনান্তে এই যে বিচিত্র অথচ নিদ্বন্দ্ব জীবনের খেলা, এবং গোধূলির নিবিড় শান্তিতে যুগপৎ মগ্ন পশুপক্ষী ও জড়জীবের যে অপূৰ্ব্ব সন্মিলন, উহার মধ্য হইতে প্রতিদিন এক অনিৰ্ব্বচনীয় সঙ্গীত উখিত হয় । এই মহাসঙ্গীতের নামই রামায়ণ । ঐ অরণ্যসঙ্কল বিরাট পৰ্ব্বতের দিকে চাহিয়৷ দেপ । উহার মধ্যে কিছু কি তোমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে না ? তবে ঐ অতল নীল জলধির নিবিড় নীলিমার দিকে চাহিয়৷ দেখ ; কিছু কি তোমার দৃষ্টিতে ঠেকে ? ঠিক ঐখানে অতলের তলে একটি অতুলন মুক্ত পড়িয়া আছে ; আর ঐ বিপুল পৰ্ব্বতের সাহুদেশে একটি কৌতুহলপূর্ণ অধির উজ্জল দৃষ্টি দেখিতে পাইবে উহা হীরকখণ্ডের দীপ্তি বলিয়া তোমার ভূল হওয়া অসম্ভব নয়। ভারতের গোপনতম আত্মা ঐটি , উহার মধ্যে একটি পরশপাথর আছে ; ভারত নিজেও উহা সৰ্ব্বদা দেখিতে যেন কুষ্ঠা বোধ করে। যদি এ সম্বন্ধে তাহাকে প্রশ্ন কর তবে নীরব মৃদু হাস্য ব্যতীত তুমি তাহার নিকট হইতে আর কোনো উত্তরই পাইবে না। ১৮৩৩ খ্ৰীষ্টাব্দে ঋগ্বেদের সামান্য নমুনা পাশ্চাত্য জগতে প্রথম আনীত হয়। ১৮৬৩ খ্ৰীষ্টাব্দে পণ্ডিতপ্রবর বাণুভ উহার নিগূঢ় অর্থ সাধারণের নিকট ব্যক্ত করেন। তাহার পর হইতে যত দিন যাইতেছে ও গবেষণা যতই গভীরতর o ভঁাতী-বোঁ - ჯć বিষয়সমূহে অনুপ্রবিষ্ট হইতেছে ততই এই সত্যই ੋਣ হইতেছে যে যুরোপ ও এসিয়ায় কোনো বিরোধ ছিল না। এই গবেষণার ফলে আমরা জানিতে পারিয়াছি যে যুগ যুগ ধরিয়া মানুষ একই ভাবে ভাবিয়াছে, অনুভব করিয়াছে ও ভালবাসিয়াছে ; মানবসমাজ এক—মানবহৃদয় এক। সকল যুগ ও সকল দেশের মধ্যে যে একটি পরম ঐক্য নিহিত আছে আজ আমরা তাহার স্থির সন্ধান পাইয়াছি। তর্কবাদী, সংশয়বাদীদের সকল তর্ক, সকল সংশয় আজ দূর হউক। বিশ্ববাসীর গগনপ্লাব একতান-বাদ্যের বিজয়দুন্দুভিতে তাহদের কণ্ঠস্বর আজ ডুবিয়া যাক। শ্ৰীইন্দুপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতী-বে। (প্রবাসীর নবম পুরস্কার প্রাপ্ত গল্প ) চুল ছোট, চোখ কটা, পেট মোটা, আড়ং খাট, নাক চ্যাপটা, ডাক পার্থীর ডাক, হাত ছিনে, মেয়েমানুষ বেশী বয়সের দেখিলে বোধ হয় যেন বিয়ের কনে ঘোমটা-দেওয়া তাতীবে। জন্মস্থান চাকদিঘী, পাড়া ঘোলপুকুর, পরগণা স্থখসাগর, থানা কোতলপুর, জেলা আরামবাগ, বাঙ্গলা দেশ, নলডাঙ্গা রেলষ্টেশন খুব কাছে। উলবুনা, পুথিশুনা, গানবাজনা বয়সে নেই। স্থতার টান দিতে ছেলে-বয়সে শিখেছিল, মাড় মাথাতে শিখেছিল বয়স হলে । মা শীতলার স্বপ্ন পেয়ে সকলে যখন সই পাতিয়েছিল, ছেলেমানুষ তাতী-বোঁ মার কাছে কেঁদে কুমোর-কন্য কাদম্বিনীকে সই করেছিল। বসন্তের তখন খুব দুরন্তু প্রাদুভাব, সাহেবমহলেও মা শীতলার পূজা হচ্ছিল গাধার উপর মার মূৰ্ত্তি গড়ে । কাদম্বিনী ক দুলে। কপালপোড়া, বয়স যখন বারবছর। বাপের বাড়ীতে খুরির কাজ শিখেছিল কুমোরের মেয়ে। এখন সর। মালস গড়ে আর গামলা পেটে, গামলার কান৷ . বাধে, হাড়ির গায়ে রং দেয় নক্স করে । পুতুল গড়ে,