পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

veఆ প্রবাসী 38לאכי শিক্ষালাভ করিয়া স্বযোগ্য হইয়া উঠিয়াছিল। তাহাদের মধ্যে এক জন ব্রাহ্মণ-বংশীয় বালক য়্যাডভোকেট হইয়া এখন প্রভূত অর্থ উপার্জন করিতেছেন এবং এখনও অনাথআশ্রমে অর্থ সাহায্য করেন। তিনটি সহোদর ব্রাহ্মণ-বালক অনাথ-আশ্রমে আসে । ইহাদের মধ্যে এক জন ডাক্তারী পাস করিয়া গভর্ণমেণ্টের চাকুরী পাইয়াছেন, এক জন মাৰ্চেণ্ট আপিলে চাকুরী করেন, আর এক জন কম্পাউণ্ডার হইয়াছেন। একটি ছেলে বি-এল পাস করিয়া ওকালতি করিতেছেন, আর এক জন রেলওয়েতে চাকুরী করেন, অপর এক জন রামকৃষ্ণ-মিশনে গিয়া ব্রহ্মচারী হইয়াছেন । এই শেষের তিনটি ছেলে কায়স্থ । ছেলেরা যদি শিক্ষা পাইয় এমন উন্নতি করিতে পারে, তাহা হইলে মেয়ের শিক্ষ। পাইয়া স্বাবলম্বী হইতে পারে কি না সে-বিষয়ে চেষ্টা করিয়া দেখা উচিত, আশ্রম-কর্তৃপক্ষ এইরূপ বিবেচনা করিয়া কয়েকটি মেয়েকে বাহিরে শিক্ষার জন্য বিভিন্ন শিক্ষালয়ে ভৰ্ত্তি করিয়া দেন। নগেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কন্যা শৈলবালা দেবী শিক্ষিত হইয়া ঘাটালে একটি বালিক-বিদ্যালয়ে শিক্ষয়িত্রীর কাজ পান । বাণী নামে একটি বালিকা বয়ন-বিদ্যার পরীক্ষায় পাস হইয়া চুচুড়ার একটি বয়ন-বিদ্যালয়ে কাজ পান। লতিকা ও অপর একটি মেয়েকে লেডি ডফরিন হাসপাতালে নাসের কাজ শিখিবার জন্য পাঠানো হয় । উহারা ঐ কাজ শিক্ষার পর মেয়ে হাসপাতালে চাকুরী পান । ইহঁার চাকুরী পাইয়া নিজের উপাজ্জনে নিজের খরচ চালাইতে সমর্থ হইলেন, কিন্তু কোন অভিভাবক না থাকাতে এই চাকুরী তাহদের পক্ষে বিড়ম্বন-স্বরূপ হইল । ইহারা সকলেই কিছু দিন চাকুরী করিবার পর আশ্রম-কর্তৃপক্ষকে জানাইলেন, ইহা অপেক্ষ বিবাহিত জীবন বরং তাহাদের পক্ষে সহজ । কারণ অভিভাবকহীন এই সকল মেয়ের উপর পুরুষের উৎপাত সৰ্ব্বদাই রহিয়াছে। প্রায়ই প্রেম-নিবেদন উপস্থিত হয়, কিন্তু সে-নিবেদনে বিবাহের কোন প্রস্তাব নাই । কারণ নিবেদনকারিগণের জাতি আছে, সমাজ ও আত্মীয়কুটুম্ব আছে, ইহাদের উপেক্ষা করিয়া তাহার এরূপ অনাথ কন্যাকে বিবাহ করিতে পারে না। এইরূপ প্রেম-নিবেদনের উৎপাতে তাহাদের জীবন অতিষ্ঠ হইয়া উঠিয়াছে। শৈলবালা শিক্ষয়িত্রীর কাজ করিয়া সামান্ত বেতন পাইতেন, তথাপি তিনি আশ্রমে মাসে এক টাকা করিয়া সাহায্য করিয়া তাহার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করিতেন । অবশেষে বৰ্দ্ধমান জেলার এক বয়স্ক বিপত্নীক ব্রাহ্মণ র্তাহাকে বিবাহ করেন ও তিনি শিক্ষয়িত্রীর কাজ ছাড়িয়া দেন । ব্রাহ্মণের প্রথম পক্ষের একটি ছেলে ছিল । তিনি ছেলেটিকে সন্তানের স্তায় স্নেহে পালন করিতেন । কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত: কিছু দিন পরে তাহার স্বামীর মৃত্যু হইল ও বাড়ীর অন্যান্য মেয়েদের ব্যবহারে তাহাকে স্বামীর বাড়ী ছাড়িয়া আবার এবটি স্কুলে চাকুরী জুটাইয়া সইতে হইল। বীণা বয়ন-শিক্ষয়িত্রীর কাজ ছাড়িয়া এক জন পাঞ্জাবী যুবককে বিবাহ করেন। হাসপাতালের মাস দুটির মধ্যে এক জন একটি সিন্ধুদেশীয় যুবককে বিবাহ করেন, অপরের সবাদ জানা নাই । এই সব ঘটনায় বুঝা যায় আমাদের দেশের ও সমাজের বর্তমান অবস্থায় কোন অভিভাবকহীনা হিন্দু কুমারীর পক্ষে স্বাধীন ভাবে জীবিকা অর্জন করা স্ববঠিন। মুখে আমরা যতই হিন্দুসভ্যতা সম্বন্ধে গৌরব করি না কেন, মাতৃজাতির প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা, সন্ত্রম ও স্নেহ-করুণা এখনও হিন্দু পুরুষের মনে জাগ্রত হয় নাই । পুরুষদের উৎপাত হইতে এই সকল অমাথা স্বাবলম্বিলী বালিকাকে রক্ষা করিবার জন্তু হিন্দু মহিলাগণের প্রতিষ্ঠিত যদি কোন সমিতি তাঁহাদের অভিভাবকত্বের ভার গ্রহণ করেন তাহা হইলে বোধ হয় এসমস্তার কতকটা সমাধান হইতে পারে । অনেক কায়স্থ-বালিকা এই অtশ্রমে আশ্রয় পাইয়াছে ; আশ্রমের কর্তৃপক্ষগণের মধ্যেও কায়স্থ পরিচালক সৰ্ব্বাপেক্ষ অধিক, এবং ইহঁাদের অনেকেই ধনে মানে স্ববিখ্যাত ও সমাজের নেতৃস্থানীয় ; তথাপি এই আশ্রমের কায়স্থ-কুমারীগণের বিবাহের জন্ত স্বজাতীয় বর জুটে না, তাহাদের নমঃপূদ্র প্রভৃতি জাতীয় ছেলেদের সহিতই বিবাহ হয়। কায়স্থ জাতির উন্নতির জন্তই বঙ্গদেশীয় কায়স্থ-সমাজ ও কায়স্থ-সভা এই দুইটি প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হইয়াছে । কিন্তু অনাথা অসহায়া কায়স্থ-কুমারীদিগের সম্বন্ধে তাহার উদাসীন হইয়া রহিয়াছেন। আশ্রম-কর্তৃপক্ষ ঘটনাবিশেষে বুঝিয়াছিলেন, নারায়ণশিলা সমক্ষে হিন্দুমতে অসবর্ণ বিবাহ হইলেও বিবাহের