Փ8Հ দিতেছি। আমি যখন দ্বিতীয়বার আলিপুর সেন্টাল জেলের কয়েদী হইয়াছি সেই সময় জেল-সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট জেলের গোশাল সম্বন্ধে উদ্বেগ বোধ করিতেছিলেন। অনেক গরু ছিল, অথচ দুধ না-হওয়ার মত । একটি সাহেব-কয়েদীর হাতে গোশালার ভার ছিল, তাহার কাজে সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট সন্তুষ্ট হইতে পারিতেছিলেন না। একদিন স্বপারিন্টেণ্ডেণ্ট মেজর পাটনী সঙ্কোচের সহিত প্রস্তাব করেন যদি গোশালার ভার আমি লই । আমি আগ্রহের সহিত স্বীকার করি । তথন দেখি, গোশালায় মাত্র আট সের দুধ হয় অথচ গোশালে সব মিলিয়া সংথ্যায় গরু আছে চল্লিশটি । বাছুর মরিয়া যাইত। বংসর ধরিয়া গাহকে খাওয়াইয়া যত্ন করিয়া দুধ পাওয়ার সময় হইলে বাছুর মরিয়া যাওয়ায় সমস্ত শ্রম ও ব্যয় পণ্ড হইত। বাছুর মরার মত অপরাধ গোশালায় দ্বিতীয় নাই। সেই অপরাধ পুনঃপুনঃ ঘটিত এবং জেলে বাছুর বাচিত না, দুধও হইত না। অন্য কারণও ছিল । উহাদের খাদ্যের সংস্কার সাধন করা, ষ ড়ের ব্যবস্থা করা ইত্যাদির দিকে দৃষ্টি দিই। সংস্কার করিতে প্রতি পদে জেল-আইনের বাধা আসিত। কিন্তু মেজর পাটনী সমস্ত আইনের দায়িত্ব নিজে লইয়া গোপালনের রাস্তা সাফ করিয়া দেন। গোশালার উন্নতি আরম্ভ হয়। নূতন ধরণে খাতাপত্র রাখা আরম্ভ হয়। ফৰ্ম্ম ও হিসাব-পদ্ধতি বদলাইয়া যায়। গোশালার অবস্থান নিম্ন ভূমিতে ছিল, উহার পরিবর্তন করার চেষ্ট হয় । গো-খাদ্যের কণ্টাক্টরের অন্যায় উপার্জন বন্ধ হয়। কবে কে গfভণী হইয়াছিল তাহা হইতে পূৰ্ব্বেই প্রসবের আনুমানিক ভারিখ স্থির করিয়া প্রসবকালে গরুর যথাযোগ্য যত্ন লওয়ার ব্যবস্থা হয়। পূর্বেই বলিয়াছি, আমি যথন গোশালার ভার লষ্ট তথন দুধের পরিমাণ দৈনিক আট সের ছিল । নয় মাস পরে আfম যখন চলিয়া আসি তখন দুধের পরিমাণ দশ গুণ হইয়াছে— দিনে দুই মণ দুধ ইত । গতিমধ্যে ইনস্পেক্টর-জেনারল মি: ফ্লাওয়ার ডিড দুইবার আসেন । শেষবারে সমাদরের সহিত বলেন যে আমাকে আর মুক্তি দেওয়াই হইবে না। পরক্ষণেত কৃতজ্ঞভাবে বলেন যে আমি যেন আর জেলে ফিরিয়া না আসি। তাহার হাতে কয়েদীকে নিদিষ্ট সময়ের পূৰ্ব্বে খালাস দেওয়ার যতটা অধিকার ছিল তাহা ব্যবহার করিয়া প্রবাসী SNご33 নয় মাসেই আমাকে এক বৎসরের জেল পূর্ণ করিয়া খালাস দেন। তাহার কৃতজ্ঞতার কোনও কারণ ছিল না—আমি কয়েদী, কাজ করিয়া গিয়াছি । কৃতজ্ঞতার হেতু আমার পক্ষেই ছিল—তাহারা যে গো-সেবার অপূৰ্ব্ব অবকাশ দিয়াছিলেন সেজন্য । বস্তুত: গো-সেবার আনন্দের আতিশয্যে জেল আমার নিকট রম্যস্থান হুই পড়িয়াছিল । জেলে যেমন সেবা দ্বারা তাৎকালিক দুধের পরিমাণ বাড়াইতে পারিয়াছি অন্যত্রও তেমনি বিশেষ ফল পাইয়াছি । জেলের গরুগুলি সবই পশ্চিম জাতের ছিল--অযত্বে খারাপ হইয়াছিল। দেশী গাইয়ের দুধ দৈনিক আধ সের হইতে দুষ্ট সের পর্য্যস্ত বাড়াইবার সুযোগ আমার ঘটিয়াছে । আবার এমন গে-বাথান দেখিয়াছি সেখানে পৌষ-মাঘ মাসে বাথানের গাই প্রতি দৈনিক গড়ে চার সের দুধ দাড়ায় । জেলে চেয়ারী নামে একটি গাই আমি থাকাকালে একবারকার বিয়ানে মোট পাচ হাজার পাউণ্ড বা ষাট মণ দুধ দিয়াছে । থাদি প্রতিষ্ঠানের সোদপুর গোশালায় আমরা পশ্চিম গাই হইতে এক বিয়ানে ৩৮ হইতে ৪৫ মণ দুধ পাহয়া থাকি । সে-স্থলে একটা দেশী গাহ হইতে আমি এক বিয়ানে মাত্র নয়ু মণ দুধ প্রত্যাশা করিড়েছি । ঘি প্রস্তুত-তুধটানা দুধ বা দই মন্থন করিয়া ননী বা মাথন বাতির করা যায়। উহা উপযুক্ত তাপে গলায় ঘি হয় । দুধ মন্থন করিয়া বা টানিয়া ঘি প্রস্বত করা কিছু ক্লেশসাধ্য হইলেও উহাই উৎকৃষ্টত র । সহজেই দুধ হইতে ননী তোলা যায়, কিন্তু সকলের পক্ষে সেপারেটর মেশিন বসান সম্ভব বা যুক্তিযুক্ত হইবে না। হাতে টানার জন্য দুধ একটু গরম কfরয় তাহার পরে নদী বা পুকুরের জলে পারটি ভাসাইয়৷ তাড়াতাড়ি ঠাও। করিয়া লইতে হয় । একট পরিষ্কার কেরোসিনের টিনে ঠাণ্ড দুধ ঢালয় মন্থন-দণ্ড দিয়া টানিতে হয়। উহাতে ননী ভাসিয়া উঠে এবং নন গালাইম্বা ঘি প্রস্তুত করা হয় । ননী উঠাইয়া লইলে যে দুধ রহিল উহাই মনী-তোল বা টানা দুধ। সেপারেটর মেশিন ব্যবহার কfরলে