পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

نموهواS "ব্র্যাপারটুকুৰ সন্ধান পেলাম। সেদিনও বড় দুৰ্য্যোগ ছিল, ঝড়ঝাপটার ভাগটা আজকের চেয়েও বরং বেশী। রাজপুত্র অরূপকুমার কত দীর্ঘ পথ পিছনে রেখে, কত দীর্ঘডর পথ সামনে ক'রে চলেছেন। আহার নেই, নিদ্র নেই ; ভয় নেই, শঙ্কা নেই ; সঙ্গী, বুকের মধ্যে একটি রূপের স্বপ্ন। যাত্রাপথের শেষে সাগরের অতল তলে মাণিকের তোরণ পেরিয়ে তার পক্ষীরাজ ঘোড়া পৌছল রাজকুমারী কঙ্কাবতীর প্রবাল-পুরীর দ্বারে। "এতটা হ'ল সাধারণ কথা, যাত্রাপথের দৈনন্দিন ইতিহাস । "সেই বিশেষ রাত্রে অরূপকুমার আমি যখন সোনার का*ि डूहेरञ्च * তারাপদ প্রশ্ন করিল, “তুমি আবার কেমন ক’রে বয়স আর অবস্থা ডিঙিয়ে অরূপকুমার হয়ে পড়লে ?” “সাত-আট বছর বয়সের একটা মন্তবড় সুবিধা এই যে, সে-সময় বয়স আর অবস্থা সম্বন্ধে কোন চৈতন্ত থাকে না, স্বতরাং যাকে মনে ধরে নিৰ্ব্বিবাদে তার মধ্যে রূপান্তরিত হয়ে পড়া চলে। এখন তুমি যে অমুক জার তোমার বয়স যে সায়ত্রিশ, এই চেতনা তোমার চারি পাশে গণ্ডী হষ্টি ক'রে তোমাকে একান্ত পক্ষে “তুমি” ক’রে রেখেছে,—একটু গওঁী কাটিয়ে রাজপুত্র কোটাঙ্গপুত্র হয়ে নেওয়া তো দূরের কথা, মুহূৰ্ত্ত কয়েকের জন্য যে নিজে ছেলেবেলা থেকেই ঘুরে আসবে সেটাও দুষ্কর হয়ে ওঠে। জীবনের সাত-আট বছর বয়সটা হ’ল রূপকথারই যুগ এই তরলতার জন্য, যেমন সাইfত্রশ-আটত্রিশ বছর সময়ট তার নিৰ্ব্বিকারত্বের জঙ্ক সাহেব, বড়বাবু প্রভৃতির মধ্যে মূখ বুজে চাকরি করবার যুগ । --যাক, গল্পটাই শোন ; বর্ষ কেটে গেলে বায়ুমণ্ডলের এই ভিজে-ভিজে আমেজের ভাবটি যখন কেটে যাবে তখন আমি গল্পটা ধে চালাতে পারব-—এতে সন্দেহ আছে, কেন-না, তখন নিজে যা বলছি তা নিজেই বিশ্বাস করতে পারব কি না সন্দেহ আছে । “সে-রাত্রে অতিমাত্র বিস্মিত হয়ে দেখলাম সোনার কাঠি ছোয়াতে রূপের পালঙ্কে যে জেগে উঠল সে রাজকুমারী কঙ্কাবতী নয়—সে হচ্ছে আমার সেজবৌদিদির সই নয়নতারা। “কঙ্কাবতী নয়~~হাসিতে যার মুক্তা ঝরে, অশ্রুতে যার হীরে গ'লে পড়ে। সে চাদের বরণ কক্ষের মেঘের বরণ চুল। জেগে উঠতেই ধার চোখের দীপ্তিতে সাত মহলে আলো ঠিকরে পড়ে, সাত সখীতে যাকে চামর দোলায়, যার জন্তে সপ্তবীণায় ওঠে সপ্তম্বরের মূর্ছনা। “তার জায়গায় আমার মুখের দিকে চোখ মেলে চাইলে নয়নতার, যাকে বিনা উগ্র সাধনায়ই জামি প্রত্যহের শ্রবণসী స్సిలిgg কাজে-অকাজে রোজই দেখছি। আমাদের বাড়ীর কাছেঃ বোসপাড়ায় রেলের ধারে তাদের বাড়ী। সামনে পানায় ঢাকা ছোট একটা পুকুর, তাতে একটা বকুলগাছের ছায়াং রাণাভাঙা সিড়ি নেমে গেছে। ঘাটের সামনেই থানিকট দুৰ্ব্বাঘাসে ঢাকা জমি...সেখানে শীতের শেষে বকুলে আর সজনেফুলে কায়ায়-গন্ধে মাখামাখি হয়ে পড়ে থাকত । তার পরেই একটা রকের পিছনে নয়নতারাদের বাড়ীখানিকটা কোঠা, খানিকট গোলপাডার । মোট কথা, সাগরতলের প্রবাল-মহলের সঙ্গে তার কোনই মিন্স ছিল না । “না ছিল স্বয়ং কঙ্কাবতীর সঙ্গে নয়নতারার কোন মিল । প্রথমতঃ, নয়নতারা ছিল কালো—যা কোন রাজকগুfরই কখনও হবার কথা নয়।. তবুও যে সে সে-রাত্রে আমার গঙ্গরাজ্যে আমন বিপৰ্য্যয় ঘটালে কি ক’রে, তা ভাবতে গেলে আমার মনে পড়ে যায় তার দুটি চোখ। অমন চোখ আমি আজ পর্ষ্যস্ত দেখি নি । তোমরা বোধ হয় স্বীকার করবে ফরসা মেয়ের চেয়ে কালো মেয়ের চোখই বেশ বাহারে হয়—সবুজ আবেষ্টনীর মধ্যে কালো জলের মত। পরে আমি ভাল চোখের লোভে অনেক কালো মেয়ের দিকে চেয়েছি, কিন্তু অমন দুটি চোখ আর দেখি নি। তার বিশেষত্ব ছিল তার অদ্ভুত দীপ্তি ; উগ্র দীপ্তি নয়, তার সঙ্গে সৰ্ব্বগষ্ট একটা হালি-হাসি ভাব মিশে থেকে সেটাকে প্রসন্ন ক'রে রাখত । নয়নতার বেজায় হাসত—বেহায়ার মত । যখন হাসত তখন তার কালো শরীর থেকে ধেন আলো ছড়িয়ে পড়তে থাকত ; যখন হাসত না, আমার মনে হ’ত তখনও যেন থানিকটা আলো আর থানিকট হাসির আবশেষ ৪র চোথে লেগে রয়েছে । আমি সে-ছুটি চোখ বর্ণনা করতে পারলাম না, তা ভিন্ন শুধু চোখ নিয়ে পড়ে থাকলে আমাং গল্প শেষ করাও হয়ে উঠবে না। আমি একবার শুধু সে-চোখের তুলনা পেয়েছিলাম,—কতকটা ; মাগুধের মধ্যে নয়, পুথিবীর কোন জিনিষেও নয়। যদি কখন শীতের প্রত্যুষে উঠে চক্রবালরেখার উপরে শুকতার দেখ তো নয়নতারার চোখের কথা মনে ক'রে ; অর্থাং সে অপার্থিব চোখের তুলনা পৃথিবী থেকে অনেক দূরে—ম্বর্গের কাছাকাছি । “রেলের দিকে দেয়াল-দিয়ে-আড়াল-করা পানাপুকুরের ধারের জায়গাটিতে নয়নতারার সময়বয়সী মেয়েদের আড় জমত । পুরুষের মধ্যে প্রবেশাধিকার ছিল শুধু অামার, কারণ কয়েকটি কারণে আমি ঠিক সেই ধরণে ছেলে ছিলাম নবপরিণীড়াদের যারা খুব কাজে লাগে । প্রথমতঃ,বয়সটা খুব অল্প ; দ্বিতীয়তঃ আমি ছিলাম খুব অল্পভাব ধার জন্তে বাইরে বাইরে জামায় খুব হাদা ব'লে বো