পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আণশ্বিন মুনয়নী গুইয়া পড়িবার উদ্যোগ করিলেন। হাসি থামাইয়া মেয়েটি পুনরায় কহিল, ‘মার মাসীর কথাটা শুনুন। ওই যে খন্থের স্কার্ট শাড়ী পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দসি'র মত, উনি। ও-মহলে গিয়েছিলেন কাজ করতে। বলেন, ‘কাজের বাড়ী, গতর কোলে ক’রে বসে থাকা কি ভাল । বউরাণী কি বলেছেন জানেন ? বলেছেন, আপনার নিকট-আত্মীয়, আপনাদের কি খাটাতে পারি। ও-সব ঠাকুর-চাকরের কাজ ওরাই করবে।' কথাটার মানে বুঝিতে না পারিয়া স্বনয়নী অবাক হইয়া চাহিয়া রহিলেন । মেয়েটি হাসিতে ফাটিয়া পড়িয়া কহিল, “আপনি ত ভারি বোকা! বুঝলেন না পরকে কেউ কি বিশ্বাস ক'রে ভাড়ারে হাত দিতে দেয় । আমরা খুব নিকটআত্মীয় কি না ? স্বনয়নী শুইয়া পড়িয়া কহিলেন, ‘আম, মাথাটা ধ ধরেছে। মেয়েট হাসি থামাইয়া কহিল, টিপে দেব একটু ? ন, বেশ ত আপনি ! ওঁর। বড়লোক, ওঁদের সঙ্গে সত্যিকারের সম্বন্ধ হয়ত গড়ে ওঠে না, কিন্তু আপনার আমার মধ্য কেন ফাক থাকবে ? দিই না টিপে ? মুনয়ন বিরক্ত হইয়া ঝাঝিয়া উঠিলেন, ‘না।’ অগত্যা মেয়েটি ক্ষুণ্ণমনে উঠিল এবং দুয়ারের বাহিরে পা দিয়াই হঠাৎ ফিরিয়া দাড়াইয়া কহিল, "কিন্তু বললেন না ত—আপনি রমলাদির কে ? ঝাঝের মুখেই মুনমুনী উত্তর দিলেন, ‘কেউ নই।" মেয়েটি হাসিতে হাসিতে চলিয়া গেল । ξy" স্বনয়নী ঝাঝের মুখে উত্তর দিলেন বটে ‘কেউ নই', কিন্তু মন স্থির করিয়া আর একবার সম্বন্ধ-বন্ধনের কথাটা ভাবিতে বসিলেন । কে বলিল, রমলার সঙ্গে তার আত্মীয়তা ওই পাতানো মাসী-পিসির মতই মৌখিক । রমলার মৃত্যুসংবাদ প্রাপ্তি মাত্র তিনি চীৎকার করিয়া কাদেন নাই সত্য, ইচ্ছা করিলে সেই মূহূৰ্ত্তে চোখে নদী বহাইয়া কাটা কিছু বিচিত্র ছিল না। স্নেহ ন থাকিলে রমলা ঠাঁহাকে মাস-মাস টাকা في اسبايس 8 لاتم সুনয়নীর মৃত্যু পাঠাইত না। আর তিনিও কি ওই ছুশীলা পিনৃশগুড়ীর মত কম প্রাপ্তির লোভে রমলার মেয়ে বউকে শাপান্ত করিতে পারিতেন । রমলার মেয়ে ও বউ যদিও ঐ সমস্ত মুখসৰ্ব্বস্ব আত্মীয়ের ব্যবহারে আসল-নকলের পার্থক্য বুঝিতে না পারিয়া উহার বাসস্থানও এই অতিথিশালায় নির্দেশ করিয়া দিয়াছে, তবু, আজ হউক কাল হউক, সে ভুল তাহাদের ভাঙিবেই। বাল্যের সাহচর্ঘ্যে মধু বা বিষ কোনটাই দুই বোনের অন্তরে জমা ছিল না, যৌবনের হৃষ্ঠতায় আন্তরিকতা খানিকট ছিল বইকি। ষে দূরসম্পর্কের খুড়তুত বোনের ঐশ্বৰ্ষা লইয়া তিনি পাঁচ জনের কাছে নিজেকে বিস্ফারিত করিয়া অতুল আনন্দ ও গৌরব উপভোগ করিয়াছেন, হয়ত নিরালা মুহূৰ্ত্তে সেই ঐশ্বর্ধ্যের অগ্নিশিখা নীরবে তাহাকে দগ্ধ করিয়াছে । দগ্ধ করিলেও সেই ভস্মরাশি তিনি কোন দিনই মুখে মাখেন নাই। বাড়ী ফিরিদ্র তিনি প্রতিবেশিনীদের কাছে গল্প করিবার অনেক কিছু পাইবেন । চোখোচোথি এমন সমারোহময় প্রাসাদ ও রাণীতুল্য বউঝির দেখা কম ভাগ্যের কথা নহে। তিনি ভাগ্যবর্তী বলিয়াই এমনধারা একটা রাজসিক ব্যাপারে নিমন্ত্রিত হইয়াছেন। 爱 সঙ্গে সঙ্গে তিনি চক্ষু মুদিলেন ও কল্পনা করিলেন, এই প্রাসাদের চেয়ে সেই দুখানি স্যাতসেতে এক তলার চূণবালি-খসা অন্ধকারময় ঘরের মূল্য কতখানি। তুলনা করিলেন, এখানকার ফরসা চাদর, নূতন মাছর ও বালিশতোধকের সঙ্গে সেই দুৰ্গন্ধযুক্ত ময়লা ছেড়া কথা, ফুট। বালিশ ও ছেড়া মাছুর। এখানে দিনে পাচ তরকারি ভাত, রাত্রিতে লুচি আর সেখানে মোট চালের সঙ্গে একটিমাত্র তরকারি, এক বেলার আয়োজনে দুই বেলা চলিয়া যায় । আর লাভের কথা ? এই কল্প দিন রাজভোগ ছাড়া বিদায়কালের মোট লাভট,—এই বিছান, বালিশ, মাছুর, চাদর, ঐ বালতি, ঘটি, মাস, গামছা । আর পাচ টাকা মাসোহারার এককালীন পঞ্চাশ টাকা প্রাপ্তি। কাজ করিতে হইবে না, কাদিতে হইবে না, চাই কি, ওই পিস্শাশুড়ীর মত শাপমল্লি দিলেও এককালীন টাকাটা কেহ বন্ধ রাখিতে পাব্লিবে না। খাণ্ডাষ্ট্র রমলার নিজের হাতের লেখা যে - • •