পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] পরভূতিকা ৩২৩ মুন্দর দেখতে হয়েছে দেখ, ঠিক যেন গোলাপের कुँफ़ि;ि !” ভবানী বলিল, “সে কি বুঝি না মা ? মেয়ে, ছেলের চেয়ে কম কিসে? আর যদি পাচট হবার আশা থাকৃত ভানুর, তা হ’লে একে ত মাখায় ক’রে নিতুম। কিন্তু এই যে সব মী, আর ত হবে না ! ভান্থর ধে সৰ্ব্বস্ব যাবে, তার চার দিকে শক্র, এখন তারা ত আয়ো পেয়ে বসবে। লাখ লাখ টাকা যাবে তাদের হাতে, তখন তারা কি আর এদের আস্ত রাখবে ? পথের কাট, দূর করুবার জন্তে উঠে পড়ে লাগবে। এতদিন যে কিছু করতে পারেনি, হাতে পয়সা ছিল না ব'লেই না ? হে ভগবান, এ কি কবুলে ?” মিসেস মিত্র সাম্বনার স্বরে বলিলেন, “কি আর করবে বাছা, এখন ওঠ, মেয়েকে দেখ । ষা হ’য়ে গেছে তার ত চার নেই, এ ত মানুষের হাত না ?” ভবানী হঠাৎ তাহার দুই হাত জড়াইয়া ধরিয়া বলিল, “দোহাই মা, তুমি ইচ্ছ। করলে এর বিহিত করতে পার একটা । যা চাও তুমি তাই দেব।” লেডী ডাক্তার বিস্মিত হইয়া বলিলেন, “আমি কি করব গা ? আমি ত আর বিধাত নই যে মেয়েকে ছেলে ক’রে দেব ? এখন ছাড়, পোয়াতিকে দেখি, তার এখনও ইস হয়নি ভাল ক’রে। ও বসন্ত, নে নে শিগগির করে তোর কাজ সেরে নে।” ভবানী বলিল, “ওর এখন হ’স হয়ে কাজ নেই মা, আমি যা বলছি শোন। তোমার কোনো পাপ হবে না মা, যা হবার আমারই হবে । তোমায় হাজার টাকা দেব, ছু হাজার চাও, হাজার দেব। এ মেয়েকে তুমি নিয়ে যাও, তোমার বাড়ীতে দু দিনের যে খোকাটি রয়েছে, মা মরা, তাকে এখানে দিয়ে যাও । আমরা তিন প্রাণী ছাড়া কেউ জানবে না, সব দিক রক্ষে হ’ষে। সেও কায়স্থের ঘরের ছেলে, কোন মন্তায় হবে না। এ মেয়েকে তুমি রাখ মা, পালতে বত টাকা লাগে, আমি দেব।” মিসেস মিত্র গালে হাত দিয়া বলিয়া পড়িলেন, বলিলেন, “তুমি ঘল কি বাছা । এমন কথা বাপের জন্মে শুনিনি । শেষে কি বুড়ে বয়লে জেল খাটব ।” ভবানী বলিল, “কে তোমায় জেলে দিচ্ছে মা ? জানবে কে ? বাড়ীর সকলে ত মড়ার মত ঘুমচ্ছে, ভাস্করও এখনও জ্ঞান হয়নি। জানবার মধ্যে তুমি, আমি অীর বসস্ত। তা ও বেটীকে ঠাও রাখবার ভারও আমি নিলুম। দোহাই মা তোমার, অমত কোরো না । তোমায় হাজার টাকা এখনি গুণে দিচ্ছি। বসন্তকে ঘুশ’ ििझ ।” বসন্ত এতক্ষণ ভানুমতীকে লইয়া ব্যস্ত ছিল ; সে ছুটিয়া আসিয়া তাহার মনিবের কাণের কাছে মুখ লইয়া বলিল, “নিয়ে নাও মা, নিয়ে নাও । এক বছরেও তোমার এত রোজগার হবে না। আর আমার কথা যদি ৰল, আমায় চারটুকরো ক'রে কাটলেও একথা আমার মুখ দিয়ে বেরুবে না। গিয়ে নিয়ে আসব খোকাটাকে ?” মিসেস মিত্রের মনে তখন ধর্শ্ববুদ্ধি এবং লোভের প্রবল দ্বম্ব চলিতেছিল। ভবানী দেখিল সময় বহিয়া যায়, চুটিয়া পাশের ঘরে গিয়া লোহার সিন্ধুক খুলিয়া তাড়া তাড়া নোট বাহির করিয়া আনিল । এবার টাকা আর সে ব্যাঙ্কে পাঠায় নাই, প্রসবের সময় যদিই প্রয়োজন হয়, বলিয়া ঘরেই হাজার দুই টাকা জমা করিয়া রাখিয়াছিল। মিসেস মিত্রের হাতে হাজার টাকার নোট গুজিয়া দিয়া বলিল, “এই নাও মা, আরো চাও আরো গিয়ে কাল দিয়ে আসব।” বসন্তর হাতেও দুশো টাকার নোট গিয়া পড়িল । গরীব ছোট লোকের মেয়ে সে এত টাকা কখনও একসঙ্গে হাতে পায় নাই। পাছে ইহা হাত-ছাড়া হইয়৷ যায়, এই ভয়ে সে পাগলের মত হইয়া উঠিল। নিজের কাপড় চোপড় ঠিক করিয়া লইতে সইতে ব্যস্ত হইয়া বলিল, “হেই মা, অমত কোরোনা, হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলতে নেই। যাই খোকাকে নিয়ে আলি ?” লেডী ডাক্তার মাথা হেলাইয়া সম্মতি দিলেন । বসন্ত দরজা খুলিয়া তীরের মত বেগে অদৃপ্ত হইয়া গেল। ভবানী সদ্যোজাত শিশুটিকে লইয়া তাহার পরিচর্ধ্যা করিতে লাগিল। তাহার অনিদ্যহম্বর মুখের দিকে চাহিয়া এই কঠোরহৃদয়া প্রৌঢ়ারও চোখ বারবার জলে ভরিয়া উঠিতে লাগিল। স্লাজার নদিনী হইয়া ৰে জন্মিল,