পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

や〉8 প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩e৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড বলা হয়। তিনি খবরের কাগজ প্রকাশিত হইবার আগে সব পড়িয়া দেখেন এবং যাহা আইনবিরুদ্ধ কিম্ব। তাহার বিবেচনায় অন্য কারণে প্রকাশযোগ্য নহে, তাহ বাদ দিয়া দেন । কলিকাতার প্রধান প্রেসিডেন্সী মাজিষ্ট্রেট “নায়ক” কাগজের নামে রাজদ্রোহের মামলায় সম্পাদককে খালাস দিয়াছেন। বলিয়াছেন, যে, “লৰ্ড লিটন কলিকাতায় দাঙ্গাহাঙ্গাম৷ দেড় মাস চলিতে দেওয়ায় ইংরেজের চিরন্তন ভেদনীতি (divide and rule policy) wood oftoa, oftāq লেখায় ‘নায়ক’ অন্যায় অপ্রকৃত কথা বলিয়াছে বটে, কিন্তু উহ। সিডিগুস বা রাজদ্রোহকর নহে ।” তাহার পর তিনি বলিয়াছেন, যে, বিলাতে এর চেয়ে শক্ত কথা মিস্টার কুক্‌ মিস্টার বলডুইনকে বলিয়াছেন । বিস্তু সেই সঙ্গে সঙ্গে ইহাও বলিয়াছেন, যে, বিলাতে যেটা আপত্তিজনক নহে, সেটা ষে ভারতেও আপত্তিজনক হইবে না, এমন নয়। এরূপ আপত্তিজনক কথার প্রকাশ ও প্রচার তিনি সেন্সর নিয়োগের স্বারা বদ্ধ করিবার পরামর্শ দিয়াছেন । বিলাতে যাহ। আপত্তিজনক নয়, সেট কেন এখানে আপত্তিজনক, বিচারক তাহা না বলিলে ৪ বুঝ। কঠিন নয়। বিলাতে কখন এক রাজনৈতিক দল প্রবল হইয়া “গবন্মেণ্ট” নাম লইয়৷ দেশ শাসন করে, কখন অন্য রাজনৈতিক দল প্রবল হইয়। তাহা করে ; কিন্তু “গবন্মে ণ্ট” যাহারাই হউক, এবং তাহারা পরস্পরকে ঘৃত আক্রমণই করুক এবং পরস্পরের প্রতি ঘভ মৰ্ম্ম অভিসন্ধির আরোপই করুক, তাহাতে বিলাত দেশটা ইংরেজদের হাতছাড়া হইয়া পরাধীন হইবার সম্ভাবনা ঘটে না । কিন্তু ভারতে যদিও সরকারী ইংরেজদের সমষ্টি একদল, এবং দেশের লোকের আর একজল, তথাপি ইংরেজরাই “গবন্মের্ণী”, আমরা কখনও “গবন্মেণ্ট’ হই ন । আমরা যদি ক্রমাগত অবাধে গবন্মেটি নামধেয় ইংরেজদের দোষ দেখাইতে ও আমাদের জ্ঞানবুদ্ধিমত তাহাদের সকল অভিসন্ধি জনসমাজে প্রচার করিতে পাই, তাহা হইলে দেশটা ইংরেজদের হাতছাড়া হইতে পারে, এবং আমরাই নিজেদের দেশের গবন্মের্ণট গঠন করিয়৷ ফেলিতে পারি ; এই আশঙ্ক। ইংরেজদের আছে । এইজন্য, ইংলণ্ডে যাহ। আপত্তিজনক নহে, ভারতে তাহ। আপত্তিজনক। বিচারক এই প্রকার / জাপতিজনক লেখার প্রচার বন্ধ করিবার জন্য যে উপায় অবলম্বনের পরামর্শ দিয়াছেন, তাহা সম্বুপায় নহে। ইহাতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নষ্ট হইবে, এযং সম্পাদকদের নিজে নিজেই বিচারপূর্বক লেখনীচালনার শক্তিবিকাশে বাধা ঘটবে। এইজন্য আমরা ইহার সম্পূর্ণ बिम्ब्रायो। “ফরোয়ার্ডে”র রাজদ্রোহের মামূলা "ফরোয়ার্ডে°র নামে রাজদ্রোহের অভিযোগে সম্পাদক ও মুদ্রাকরের যে শাস্তির হুকুম হইয়াছিল, হাইকোর্টের জজের। আপীলে মোটের উপর তাহ কমাইয়া দিয়া এবং সম্পাদকের কারাবাস সম্প্রমের পরিবর্তে শ্রমব্যতিরিক্ত করিয়া দিয়া ভালই করিয়াছেন । একেবারে বেকসুর খালাস দিলেই ঠিকৃ হইত। সম্পাদক ও মুদ্রাকর ক্রটি স্বীকার করিলে খালাস দেওয়া হইত, তাহা বিচারপতি চারুচন্দ্র ঘোষের ইঙ্গিতে বুঝা যায়। কিন্তু যাহার ধারণা, যে, তিনি কোন দোষ করেন নাই, তাহার পক্ষে ক্রটিস্বীকার মিথ্যাচরণ ত হইতই, আত্মাবমাননাও হইত। বিচারপতি ঘোষের সহিত য়্যাডভোকেট জেনারেলের উত্তর-প্রত্যুত্তরে মনে হয়, যে, ভারতীয় রাজনীতির মৰ্ম্মকথা ঘোষ মহাশয়ের অকুভূতির বাহিরে নহে। তথাপি ষে সম্পাদকের সাজ হইল, তাহ! কি কেবল আইনের বাধ্যতাবশতঃ ? যাহাই হউক, কথার ও লেখার রাজদ্রোহ যে কাৰ্য্যগত রাজদ্রোহ নহে, কার্য্যগত রাজদ্রোহে উত্তেজনাও নহে, অতএব তাঙ্গার জন্য লঘু দওই যথেষ্ট, ইহা যে পরোক্ষভাবে জজদের রায়ে স্বীকৃত হইয়াছে, ইহা মনোর ভাল । গবন্মেণ্ট ইহা জানেন কিনা জানি না, যে, ফরোয়ার্ডে পাবনায় দাঙ্গাহাঙ্গামা লুটতরাজ সম্পর্কে যেরূপ অভিপ্রায়ের কথা লেখা হইয়াছিল, ঠিকৃ তাহা না হইলেও কতকটা ঐ রকমের সরকারী অভিসন্ধি ছিল বলিয়া দেশের বিস্তর শিক্ষিত লোক মনে করে ৷ হইতে পারে, যে, শিক্ষিত লোকের ভুল বুঝিয়াছে । কিন্তু সত্য থবর যাহা তাহ মুদ্রিত করিলাম। যে মাছুযগুলির সমষ্টিকে গবন্মেণ্ট বলা হয়, তাহারা ঠিক অন্য মানুষদেরই মত। স্বতরাং তঁtহাদের ভুল ভ্রাস্তি দোষ ক্রটি হইতে পারে ; অপকৰ্ম্মও তাহাদের দ্বার। হইতে পারে । কিন্তু তাহার। ইহা স্বীকার করিতে চান না । যাহা হউক, নানা মোকদ্দমার রায় হইতে এখন এতটুকু বুঝা যায়, যে, অস্তুতঃ পক্ষে সরকারী বিচারকদের মতে গবন্মেণ্টনামধেয় লোকদের ভুল ভ্রাস্তি দোষ ক্রটি হইতে পারে, এমন কি তাহাঁদের দ্বারা অপকৰ্ম্মও হইতে পারে, সমালোচনা উপলক্ষে এত দূর পৰ্য্যস্ত বলা রাজদ্রোহ নহে। ফরোয়ার্ড মামলার রায়ে দেখা যাইতেছে, ধে, গষন্মেণ্টনামধারী ব্যক্তির কোন দুরভিসন্ধি বা গর্হিত উদ্দেপ্তবশতঃ কৰ্ত্তব্যে অবহেলা করিয়াছেন বা দুষ্কৰ্ম্ম করিয়াছেন, ইহা বলিলে রাজদ্রোহ হয় । জজের আইনের বে ব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহা ঠিৰু ব্যাখ্যা কিনা বলিবার মত আইনজ্ঞান আমাদের