পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 প্রবাসী-ভাদে, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ,১ম খণ্ড টেরি গবষ্মেন্ট উহা এই কারণে তাড়াতাড়ি বসাইতে চাহিতেছেন, যে, তাহা হইলে তাহার! স্বয়ং তাহদের মনোমত লোক বাছিয়া বাছিয়া উহার সভ্য নিযুক্ত করিতে পারিবেন ; ১৯২৯ সাল পর্যস্ত অপেক্ষা করিলে যদি তখন পালেমেণ্টে শ্রমিকদল প্রবল হয়, তাহা হইলে শ্রমিক গবন্মেণ্ট এমন সব লোককে সভ্য নির্বাচন করিয়া বসিতে পারেন, যাহারা ভারতীয়দিগকে ভয়ানক বেশী রাষ্ট্রীয় অধিকার দিয়া ফেলিতে পারে—যদিও আমাদের সেরূপ কোন সম্ভাবনায় বিশ্বাস নাই । খবরের কাগজে রাষ্ট্র হইয়াছে, ধে, বৰ্ত্তমান বিলাতী গবন্মেণ্ট কমিশনে একজনও ভারতীয় সভ্য নিযুক্ত করিবেন না, সব সভ্যই বিলাতী মনুষ্য হইবেন । অন্তদিকে ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভার সভাপতি বিলাত হইতে সদ্য-প্রত্যাবৃত্ত পটেল মহাশয় বলেন, যে, কমিশনে জনকতক ভারতীয় সভ্য থাকিবেন, যদিও তাহাদের সংখ্যা বিলাতী মনুষ্যদের চেয়ে কম হইবে । আমাদের বোধ হয় পটেল মহাশয়ের কথাই ঠিক হইবে । কারণ, যদি একজন ভারতীয় লোককেও সভ্য না করা হয়, তাহা হইলে বিলাতী গবন্মেণ্ট জগতের কাছে একথা ঘোষণা করিতে পরিবেন না, যে, ভারতবর্ধের লোকদের মতও শুনা হইয়াছে। ইহা করা তাহাদের পক্ষে একান্ত আবশ্যক । কেন না, যদিও ইংরেজ জাতি নিজেদের মত ও স্বার্থ অনুসারে ভারতশাসন করে, তথাপি জগৎকে জানান দরকার মনে করে, যে, ইংরেজ রাজত্ব ভারতীয় লোকদের অনুমোদিত, কেবল দুচারজন বিকৃতমস্তিষ্ক, বা নগণ্য, বা বাজে লোক তাহার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে । জনকতক ভারতীয় লোককে কমিশনের সভ্য করিলে, ইংরেজের কোন স্বার্থহানিও হইবে না। কারণ, প্রথমতঃ ভারতীয় কিরূপ লোককে সভ্য নিযুক্ত করা হইবে, তাহ বিলাতী গবন্মেণ্টই স্থির করিবেন ; দ্বিতীয়তঃ, ভারতীয় সভ্যের সকলে একমত হইলেও তাহারা সংখ্যায় নৃান হইবেন, সুতরাং তাহদের কথা সেই কারণেই অগ্রাহ হইতে পারিবে ; তৃতীয়তঃ, ভারতীয় সভ্যের। সংখ্যায় বেশী হইলেও বিলাতী গবন্মেণ্ট তাহাদের কথা অমুসারে কাজ করিতে বাধা মহেন—অনায়াসে অগ্রাহ করিতে পারেন। কমিশনের সব সভ্য বিলাতী, কিম্ব কমসংখ্যক কয়েকজন সভ্য ভারতীয় হওয়ার ফল কাৰ্য্যতঃ একই হইবে । তবে বিলাতী মমুবাদের মধ্য হইতে সব সভ্য নির্বাচিত হইলে, একটি যে অস্থবিধ হইবে, তাহ আগে বলিয়াছি ; আর-একটির উল্লেখ করিতেছি । ইংরেজরা বঙ্গে, রুশিয়৷ সৰ্ব্বদাই ভারতে ইংরেজ শাসনের উচ্ছেদ সাধনের জন্ত বড়যন্ত্রাদি করিতেছে । সে-বিষয়ে আমাদের সাক্ষাৎ কোন জ্ঞান নাই। কিন্তু ইংরেজদের বিশ্বাস যদি সত্য হয়, তাহা হইলে কমিশনের সব সভ্য ইংরেজদের মধ্য হইতে নিৰ্ব্বাচন করিলে তাহ রুশিয়াকে স্পষ্ট ভাবায় বেশী করিয়া ষড়যন্ত্রাদি করিতে বলার সমান হইবে। কারণ, শুধু কুশিয়া কেন, ইংরেজদের মিত্র দেশের লোকেরাও মুখে না বলিলেও মনে মনে বুঝিবে, যে, ভারতশাসনব্যবস্থার ভবিব্যৎ পরিবর্তন বিবয়ে কমিশনের সভ্যরূপে ভারতীয়দের মত প্রকাশের স্বযোগটুকুও না থাকিলে ভারতবর্ষে খুব বেশী অসন্তোষ ও ইংরেজশাসন হইতে কল্যাণের সম্ভাবন সম্বন্ধে সম্পূর্ণ নৈরাপ্ত জন্মিবে ; সুতরাং ইংরেজবিরোধী বিদেশী শক্তির তাহাতে ইংরেজশাসনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিবার খুব সুবিধা হইবে । আমাদের নিজের মত এই, যে, জনকতক ভারতীয় কমিশনের সভ্য হইলেও আমাদের কোন লাভ নাই । র্তাহাদের কথা ইংরেজরা শুনিবে না । এই কারণে সব সভ্য বিলাতী হওয়াই ভাল। কূটনীতির খাতিরে ভারতের জনকতককে সভ্য করিয়া জগতের কাছে ইহা প্রচার করিবার স্ববিধ ইংরেজ গবষ্মেন্টের না হইয়াই ভুলে, যে, আমাদের কথ। দস্তুরমত শুনিবার পর একটা সিদ্ধাস্ত ভারতের শাসনকৰ্ত্তার করিয়াছে। তার চেয়ে, ইংরেজরা যে সম্পূর্ণ নিজের মতলব অনুসারে কাজ করে, তাহাই বিন! আবরণে জগতের সমক্ষে প্রকাশিত হওয়া শ্রেয় । যদি সকল বা অধিকাংশ সভ্য ভারতীয় হইবার ও র্তাহাজের ভারতবর্ষের প্রকৃত প্রতিনিধিদের দ্বারা নির্বাচিত হইবার সস্তাবনা থাকিত, এবং তঁrহাদের রায় অম্বুসারেই কাজ হুইবার নিশ্চিত সম্ভাবনা খার্কিত, তাহ হইলে আমরা কমিশন হইতে অন্ততঃ কিছু স্বফলের প্রত্যাশা করিতাম। কিন্তু ষখন ওরূপ কোন সম্ভাবনা