পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] অভাব। কল্পিত দেবদেবীর সংখ্য বিস্তর হইলেও ষ্টাহার অমূৰ্ত্ত, যাঙ্গর মূৰ্ত্তি নাই তাহাকে মূর্তিমান অথবা মূৰ্ত্তিমতী করিলেই দেবতা লঘু হইবেন। মূর্তিপূজার মূলে ধৰ্ম্মভাবের দৈন্ত, সে-ভাব বলশালী ঐশ্বৰ্য্যশালী হইলেই মুক্তিপূজার তার স্থান থাকে না । দেবতার মাহাত্ম ধ্যান-ধারণার বস্তু, কোন ইন্দ্রিয়ের আয়ত্ত নয়। বেদের কালে দেবতার মূৰ্ত্তি কল্পিত হইত, হস্ত দ্বারা প্রতিফলিত তই লিক্ষিপ্ত দেবকল্পন উপনিষদে এক বহ্মে কিন্তু এই দেবতাকে মানুষে কেমন করিয়া বুঝিবে ? নৈব বাচ ন মনস। প্রাপ্তং শকো ন চক্ষুঘ-ঙ্গতাকে বাক দ্বারা, মন দ্বারা বা চক্ষু দ্বারা প্রাপ্ত হইতে পার যায় নাঙ্গ । মানব ঠাতাকে কেমন করিয়া জানিবে ? যে কয়েক ইন্দ্রিয়ের উল্লেথ হইয়াড়ে ইহা ব্যতীত সাধারণ মানবের আর কি ক্ষমতা আছে ? উপনিষদের যুক্তি, উপনিষদের গভীরতা সাধারণ লোকের উপলব্ধির অতীত, এবং সেই বিশ্বাসে ক্রমে শৈথিল দেখা দিল । এইসকল সংক্ষিপ্ত কঠিন মন্ত্রে সাধারণ লোকের তৃপ্তি হইল না। পর বৃহদায়তন, রূপকে উপকথায় পরিপূর্ণ অভূতপূৰ্ব্ব, অলৌকিক ঘটনাবলী-সম্বলিত, অতিরঞ্জিত পুরাণ-সমূহ বিরচিত হইল । বেদবেদান্ত অল্পসংখ্যক লোকের মধ্যে আবদ্ধ রহিল, পুরাণ উপপুরাণ লোকসাধারণে সৰ্ব্বত্র ব্যাপ্ত হইয়া পড়িল । আদ্যা শক্তির অস্তিত্ব-রহস্য বুঝিবার চেষ্টা করিতে হইলে সৰ্ব্ব প্রথমে মূৰ্ত্তিকল্পনা চিত্ত হইতে অপসারিত করিতে হইবে। নিরাকারাকে সাকার করিতে পারা যায় না, অমূৰ্ত্ত মূৰ্ত্তির গভীর মধ্যে আবদ্ধ হয় না। পুরাণের মতে ক্রোধের আতিশয্যে দেবীর গৌর বর্ণ মসীবর্ণে পরিণত হয়। ক্রোধে বর্ণ সচরাচর আরক্ত হয়, কৃষ্ণ হয় না। আর-এক আপত্তি আরও সমীচীন। যদি স্বীকার করা যায় যে, কোন কারণে শিবানীর বর্ণ পরিবর্তিত হয় তাহা হইলে আদ্য শক্তি কে ? দেবীর মুখের বর্ণ অন্তরূপ হইবার পূৰ্ব্বে যে বর্ণ ছিল তাহাই ত র্তাহার আদি রূপ, বিবর্ণ আকৃতি কেমন করিয়া আদি হইতে পারে? প্রথমেই এই কৃষ্ণবর্ণ এবং ইহার কোনরূপ বিকৃতি হয় নাই। আমরা বলি কৃষ্ণ একটি বর্ণ, কিন্তু না ! এই • কেন্দ্রীভূত হইল, তবে কারণে নীরস, ভাঙ্গার আদ্য শক্তি

  • কঠোপনিষৎ ।

ԳԳչՏ প্রকৃত পক্ষে কৃষ্ণতা সকল বর্ণের বিলুপ্তি । আলোকের প্রতিফলনে নানা বর্ণ দেখা যায়, আলোক না থাকিলে কোন বর্ণ থাকে না, সমস্তই মসীলিপ্ত হয়। সৃষ্টিপ্রকরণের পূৰ্ব্বে যে অবিভাজ্য গাঢ় অন্ধকার ছিল তাহাই আদ্যশক্তির কল্পিত বর্ণ। বেদ-বর্ণিত সেই অতি গম্ভীর বর্ণনা স্মরণ করিতে হয়। তখন অসৎ ছিল না, সৎ ছিল না, রজরূপী বাবু ছিল না, ব্যোম ছিল না, না ছিল মৃত্যু না ছিল অমৃত না রাত্ৰি ন দিন । কালপ্রবাহের কোন চিহ্ন ছিল ন!, ত্রিকাল নির্ণয়ের কোন উপায় ছিল না | তমঃ আসীং তমসা গৃং–অদৃশ্ব অন্ধকারে অন্ধকার আচ্ছন্ন ছিল, নিৰ্ব্বাক, নিম্পন্দ। কৃষ্টির প্রণব বাণী সেই সৰ্ব্বব্যাপী স্তব্ধতায় উচ্চারিত হয় নাই। সৃষ্টির পূৰ্ব্বে ঘোরা তমসাতিমিরমপ্যবর্কিনী যে শক্তি তাতাই আদ্যাশক্তি । আবার এই শক্তি অসুরদলনী, মহিষমৰ্দ্দিনী, শুম্ভনিশুম্ভঘাতিনী ৷ রূপকে রূপকে পৌরাণিক ধৰ্ম্ম-সাহিত্য সমাচ্ছন্ন, কিন্তু এখন সেইসকল রূপকের গুঢ়াৰ্থ লোকে সহজে বুঝিতে পারে না, হয় সত্য বলিয়। বিশ্বাস করে, না হয় অবিশ্বাসযোগ উপকথা বলিয়। উড়াইয়া দেয়। হিরণ্যকশিপুকে বধ করিবার জন্য স্তম্ভ ভেদ করিয়া মসিংহ অবতারের আবির্ভাব গভীর ও সদর্থপূর্ণ রূপক । কিন্তু সে-কথা কয় জন বিচার করে ? চণ্ডিকা মূৰ্ত্তিতে কালীর দৈত্যবিনাশ, তাঙ্গর বিভূতিতে সৈন্তস্থষ্টি সবই রূপক এবং সেই সকল রূপকের অর্থ বুঝিতে পারিলে কালীভক্তের মনের ভাব কিছু বুঝিতে পারা যায়। চণ্ডিকার যুদ্ধের রঙ্গস্থল মানুষের হৃদয়ে, মানুষের প্রকৃতিতে যে-সকল রিপু আছে তাহারাই অমুর। রক্তবীজ কে ? যে রিপুকে দমন করিয়া আমরা মনে করি তাতার বিনাশ হইয়াছে অথচ পর মুহূর্তেই সেই রিপু আবার প্রবল হইয়া উঠে সেই রক্তবীজ। তান্ত্রিকের শবাসন। ভৈরবীর কল্পনা সংক্রারিণী দেবীর উৎকট উপাসনা । রামপ্রসাদ সেনের দ্যায় ভক্ত কবি অথবা রামকৃষ্ণ পরমহংসের ন্যায় লোকগুরু মহাপুরুষ কালীকে এ ভাবে দেখেন নাই। জগজ্জননীর যে শক্তি, দেবীতে তাহার সেই আদ্য মাতৃশক্তি দেখিতেন। র্তাহাদের উপাসনা মাতৃবৎসল সন্তানের পূজা। ধৰ্ম্মে বিস্ময়মাৰ্গ, ধ্যানমাৰ্গ, জ্ঞানমার্গ বেদ-বেদান্তে প্রদর্শিত হইয়াছিল। এখন ভক্তিA. Ať §