পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্য। ] পরিলেন। এই উমাই শক্তিরূপিনী এবং উপনিষৎকার দেখাইতেছেন, ইহার অন্তদৃষ্টি দেবতাদিগের অপেক্ষা ংলমুতর। উমা হিমবৎকন্ত ও পরম সুন্দরী । অদিতিও সংহারকারিণী শক্তির কল্পন, আবার এই অদিতিই দেব ও দৈত্যকুলের প্রস্থতি । ব্ৰহ্মজ্ঞানের পূর্ণত উপনিষদ-সমুহে যেরূপ লক্ষিত হয় আর কোনও দেশের কোনও ধৰ্ম্মগ্রন্থে সেরূপ দেখিতে পাওয়া যায় না। এই গভীর তত্ত্ব যেমন চিন্তাপূর্ণ ইহার উপলব্ধিও সেইরূপ কঠিন। উপনিষদের একমাত্র দেবতাকে ঋষিগণ নানা নামে সম্বোধন করিয়াছেন। তিনি পূ্যন তিনি প্রাজাপত্য, তিনি কল্যাণতমম্, তিনি একমেবাদ্বিতীয়ং । তিনি শান্তং শিবমদ্বৈতং, তিনি সৰ্ব্বাক্তে, তিনি অন্তর্যামী । কিন্তু মনুষ্যলোকে যে পিতৃমাতৃসম্বন্ধ আছে সেরূপ সম্বন্ধ ব্রহ্মে আরোপিত হয় নাই । ইহুদীদিগের প্রাচীন ধৰ্ম্মগ্রন্থে সৰ্ব্বত্রই ঈশ্বরের নৈকট্য অনুভব করা যায়, কিন্তু সৰ্ব্বত্রই তাহাকে প্রভু অথবা প্রভু ঈশ্বর নামে সম্বোধন করা হইয়াছে র্যীশুখৃষ্টষ্ট প্রথমে ঈশ্বরকে পিতৃনামে সম্বোধন করেন। তিনি ঈশ্বরের পুল বলিয়া অপরসাধারণকে সে-অধিকার হইতে বঞ্চিত করেন নাই। তাহার প্রবর্তিত প্রার্থন৷ খৃষ্টধৰ্ম্মাবলম্বী মাত্রেই আবৃত্তি করে। সেই প্রার্থনার প্রারম্ভেই আছে— ()ur Father which art in heaven, lHallowed be thy name—হে আমাদের স্বর্গস্থিত পিত:, তোমার নাম পবিত্র হউক । যিনি জগতের স্রষ্টা, জগৎপিতা, তিনি মানব-লোকেরও পিতা, অতএব পিতৃসম্বন্ধে তাহার প্রার্থনা করিলে চিত্তের প্রসাদ হয়। ব্রহ্মবাদীও পিতৃসম্বোধনে ব্রহ্মের উপাসন। করেন। কোন ধৰ্ম্মের উপাদানে চিন্তার একটা প্রবাহ আছে, কোন ধৰ্ম্মে তাহা নাই। ইসলাম ধৰ্ম্মে কোরাণে যাহা প্রচারিত হইয়াছে তাহাই ধৰ্ম্মের আদি ও তাহাই শেয, ইহাতে কোনরূপ সম্প্রসারণ বা বিবর্তন হইতে পারে না । ইহুদীয় ধৰ্ম্মেও তাহাই । বৌদ্ধ ধৰ্ম্মের উল্লেখ করিব না কারণ ঐ ধৰ্ম্মেও অন্তান্ত ধৰ্ম্মে মৌলিক প্রভেদ আছে। এই ভারতে শুধু বিশ্বাস বহুমুখী দেখা যায়। এমন কোন কাল হয় নাই যখন ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে একেবারে নিশ্চিন্তত বা উদাসীনতা দেখা দিয়াছে। যদি জ্ঞানের সোপান দেখা যায় তাহা হইলে বেদ ب: دجاج আদ্য শক্তি لا سر ۹ হইতে আরম্ভ করিয়া উপনিষদের সোপানই সৰ্ব্বোচ্চ । ঔপনিষদ-ব্ৰহ্মজ্ঞান আয়ত্ত করা অত্যন্ত কঠিন, এসম্বন্ধে আয়ত্ত শব্দ ব্যবহার করাই অপরাধ, এবং সেই কারণে জ্ঞানমার্গের পথিক অল্প । যে-তীর্থে শারীরিক ক্লেশ স্বীকার করিয়া উপনীত হওয়া যায়, সে-তীর্থের অনেক যাত্রী, কিন্তুষেতীর্থের জন্ত বুদ্ধি, চিত্ত ও মেধার কঠিন শাসনের প্রয়োজন সে-পথে যাত্রী অধিক হয় না। এইজন্ত উপনিষদ-সমূহ বহু প্রাচীন হইলেও উহাদের কোন কালে বহুল প্রচার হয় নাই এবং ভবিষ্যতেও হইরার সম্ভাবনা নাই। পিতৃভাবে দেবতার উপাসনা একটি সোপান। সে সোপান উদ্ধ দিকে কি অধোমুখে সে-সম্বন্ধে কোন মত প্রকাশ করিবার আবখ্যক নাই। তবে যাহাকে পুরুষ বলা হইত তাহাকে পিতা বলতে মানুষ তাহাকে পূৰ্ব্বের অপেক্ষ একটু নিকটে পাইল। পিতা দেবতুল্য, পিতৃভক্তিতে মানুষ ধন্ত হয়, পিতা প্রধান গুরু, পিতার আদেশে সন্তান নিয়ন্ত্রিত হয় । বিশ্বপিতাকে পিতৃনামে সম্বোধন করিলে শাস্তি লাভ হয়, বিভুপাদপদ্মে চিত্ত নিবিষ্ট করিলে গভীর আনন্দ অনুভূতি হয়। ধৰ্ম্মের উচ্চতম শিখরেও প্রেমের অভাব নাই, কেননা যথার্থ ঈশজ্ঞান প্রেমশূন্ত হয় না, কিন্তু যেরূপে দেবতাকে স্মরণ করিবে সেই অনুসারে প্রেমের তারতম্য হইবে । ইহাতে কোন সম্প্রদায় অথবা কোন উপাসনাপদ্ধতির প্রতি কোনরূপ কটাক্ষ নাই । এই ভাব নাই বলিয়াই এদেশে ধৰ্ম্মের এত রূপ বিশ্বাস বিনা বিরোধে স্থান পাইয়াছে। অদ্বৈতবাদী, উপনিষদোক্ত ব্রহ্মোপাসক,শাক্ত, বৈষ্ণব, শৈব, মূৰ্ত্তিপূজক সকলের এই মুক্ত ক্ষেত্র। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের উল্লেখ করিয়াছি, কিন্তু তাহাতে ঔদ্ধত্য নাই। ধৰ্ম্মের কোন নিষেধ নাই, বিশ্বাসে কোন বাধা নাই, এই মূল মহামন্ত্র আর্য্য ধৰ্ম্মের পরাকাষ্ঠ।। আর-এক সোপান মাতৃভাবে দেবতার আরাধনা । পিতা পরমগুরু কিন্তু মাতার তুলনায় তিনি অনেক দূরে । পিতা গম্ভীর, মাতা আনন্দময়ী ; পিতা শাসন করেন, মাত লালন করেন ; পিতা কঠোর, মাত কোমল ; পিতা দুলভদর্শন, মাতা দৃষ্টির অতীত হন না ; পিতা গুরু, মাতা দেবী । পৃথিবীতে প্রায় সকল ভাষাতে যৎসামান্ত পরিবর্তন করিয়া মাতা শবাই ব্যবহার হয়। মা---এই একাক্ষর A" A