পাতা:প্রবাসী (সপ্তবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯২০ শিখের গুরুর আসন গ্রহণ করিয়াছে, এই পবিত্র মন্ত্রগুলির পাঠ ও গীত পুঞ্জ ও আরাধনা শিথমাত্রেরষ্ট কর্তৃবা । সকল গণ্ডী ভাঙ্গিয়া ভারত, বর্ষ যখন তাপনার অভিন্ন, পরিপূর্ণ সত্যকে প্রতিষ্ঠা করিবার চেষ্টায় উন্মুখ হইয়াছিল, নানকদেৰ ইতিহাসের সেই মহাক্ষণে তাহার এই সাধনার অন্যতম নেতারূপে অধিভূত হইয়াছিলেন। তাই, তাহার সেইদিনকার মন্ত্র ৪৫৮ বৎসর পরেও এমন অম্লান ও অপরূপ রস-সমৃদ্ধ হইয়া রহিয়াছে যে, শুধু শিখ নয়, হিন্দু মুসলমান খৃষ্ঠান যে কোনে। ধৰ্ম্মাবলম্বী, যে কোনো দেশবাসী, তাহার মধ্যে আপনার স্বাধীন জীবনের প্রতিরূপ ও আপনার ভক্ত-জীবনের প্রেরণা পাইতে পারেন । ‘জপঞ্জী গুরুমুখী ভাষায় লিখিত ও সাধারণত গুরুমুখী বর্ণমালায় মুদ্রিত হয় । যুক্ত জ্ঞানেন্দ্রমোহন দত্ত মহাশয় বাঙ্গাল অক্ষরে মূল গীতগুলি মুদ্রিত করিয়া, সঙ্গে সঙ্গে অনুবাদ ও বিস্তৃত বাপ৷ সংযোজিত করিয়াছেন। ইহাতে বহু বাঙ্গালীর পক্ষে মূল পাঠও হসাধা হইবে, এবং বাথা ও অনুবাদের সহায়ে অর্থ গ্রহণ সহজ হুইবে । অম্বুবাদ যেমন সরল, তেমনি মৰ্ম্মস্পর্শ ; মূল সঙ্গীতের ভাব ও রেশ তাহার ভিতর দিয়া পাঠককে স্পর্শ করে । ইহা ছাড়া গ্রন্থের ভূমিকা হিসাবে অনুবাদক শিগগুরু নানক, উস্থার জীবন, ও তৎসম্পর্কে প্রচলিত আখ্যায়িকাগুলি, এবং তাহার ধৰ্ম্মমত, আত্মা, কৰ্ম্মফল জন্ম-মরণ, সদগুরু-তত্ত্ব প্রভূতি উপদিষ্ট তত্ত্বগুলি সম্পর্কে একটি বিশদ নাতিদীর্ঘ রচনা সন্নিবদ্ধ করিয়া পাঠক-মাত্রকেত বিশেষ সহায়তা করিয়াছেন। এই ক্ষুদ্র গ্রন্থ বাঙ্গালী ভাষার একটি অমূল্য রত্নরূপে ভক্ত, সাধক, ও রসিকত্তম সকলেরই অশেষ তাদরের হইবে। মুখমণী—অনুবাদক জ্ঞানেলমোহন দত্ত, বি-এল। ফুল ১\ এক টাকা। পৃ: " + ২১৮ । প্রাপ্তিস্থান, গ্রন্থকার, মোড tঃফরপুর, অথবা, গুরুদাস লাইব্রেরী, কলিকাভা । গ্রন্থসাহেবের স্ত্যন্তর্গত মহলা, পঞ্চমগুর অর্জুনদেবের রচিত এই গীতচয় মুখমণী নামে পরিচিত । এই নামের বিভিন্ন তাৎপৰ্যা আছে, কিন্তু তথাপি ঠন্থার অর্থ সাধারণত স্পষ্ট নয় । ‘সুখমণ" মোট ২৪টি শ্লোকে সম্পূর্ণ,-প্রত্যেকটি শ্লোক ‘অষ্ট্রপদীতে অর্থাৎ আটটি খণ্ডাংশে বিভক্ত। এবং এইরূপ প্রত্যেক পদে তাবার দশটি পংক্তি। বর্তমান অনুবাদের এই দ্বিতীয় সংস্করণ, প্রথম সংস্করণ বোধ হয় বাঙ্গালা ১৩১৬ সনে প্রকাশিত হইয়াছিল। ভাবিয়া দেখিলেমলে তয়, গ্ৰন্থখানা বাঙ্গালী সমাজে আদৃত হইয়াছে। ইহাতে আমরা অতান্তু আনন্দ-লাভ করিলাম। যদিও অনুবাদক মহাশয়ের অনুদিত ‘জপঞ্জী গ্রন্থখণ্ডের মত ইহাতে, ব্যাথা সংযোজিত হয় নাই, তথাপি ইহার অম্বুবাদাংশ মূলের অনুরূপে পংক্তি হিসাবে বিভক্ত হওয়ায় পাঠকের আরো সুবিধা হয়। গ্রন্থশেষে ( জপঞ্জীর সম্বকেও এই কথা প্রযোজ্য) যদি গুরুমুখী বর্ণমালার এক প্রতিলিপি ও কোনো পাণ্ডুলিপির প্রতিলিপি অনুবাদক সন্নিবেশ করেন, তাহা হইলে কোনো কোনো কৌতুহলী পাঠকের কৌতুহুল বোধহয় নিবৃত্ত হইবে।— ‘কুখমণী’ বাঙ্গালীয় রস-পিপাসুদের চিত্তে সুখ-সঞ্চর করিবে, এবং বাঙ্গালার ভক্তি-সাধকদের প্রাণ স্পর্শমণির দ্যায় স্পশে ভক্তি-উজ্জ্বল করিকে । 兔 하 বিশ্ব-বৈতালিক (কবিতা)—শ্ৰম্বিজেন্দ্রনাথ ভাদুড়ী। বরেন্দ্র লাইব্রেরী, কলিকাতা । মূল –পাচদিক। পৃ—১৭৪৷১৩৩৪ । চকচকে মলাটু, তক্তফে ছাপা এবং আকারের দাঁতিত্ব যদি কাব্য-কলার পরিমাপ হয়, তাহা হইলে এই বইখানি চমৎকার প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৪ [ ২৭শ ভাগ, ১ম খণ্ড হইয়াছে। কিন্তু গুণের দিক হইতে বলিতে গেলে বলিতে হয়—সুন্দর শিমুল । রবীন্দ্রনাথের অক্ষম অনুকরণে ইহার প্রত্যেক পৃষ্ঠা ভারাক্রশস্ত। যেন কোয়া কাপড়ের উপর ধার-করা ধোপ-দোস্ত জাম পরিয়া কোন দেমাকী পাড়াগেয়ে সহরে চলিয়াছে —লক্ষ্য নাই, যে, জামাটি দেঙ্কের মাপে বড় এবং বেমানান। কবিতার ভাব ও তাম্বা রবীন্দ্রনাথের ধার-কর, কিন্তু প্রকাশের অক্ষমতায় এবং ছন্দজ্ঞানের অভাবে তাহ। ভাংচালিতে পরিবর্কিত। যথা— "অস্তরের সুর অনাহত বাইরের তীনে ক্রমাগত মিলে, মিশে প্রবাহিত হের সুরধুণী : স্নান কর জ্ঞানী গুণী, • মহানন্দে প্রাণ হউক পাগল !” চমৎকার ; অথচ সুদীর্ঘ চারপৃষ্ঠ বাপী একটি দার্শনিক ভূমিকায় কবিবরের শিলজ আমিত্ব প্রসারিত হইয়া পড়িয়াছে এবং ঠান্তার একটি তালোকচিত্রে গ্রন্থের প্রবেশ-দ্বার অলঙ্কত । ধষ্ঠবাদ । র আলুপোড়া— (ছলেদের গল্প)-শহরেশচন্দ্র বলোপধ্যায় প্রণীত। এম, সি, সরকার এণ্ড সন্স কত্ত্বক প্রকাশিভ । মল ছয় আনা, ৬৯ পৃষ্ঠ । গান্থার শৈশব ও কৈশোর অতিক্ৰম করিয়াড়ে তাহদের ও স্ত গল্প উপন্যাস যবিতা ও প্রবন্ধ লিগিয়া দশ অর্জন কর। কঠিন নহে , অস্থত; লেখকের সমমনোভাববিশিষ্ট একদল লোক দে থাকিয়ে তাহাতে সন্দেহ নাই। ওই শ্রেণীর পাঠকদের সকলেরই বৃদ্ধিবৃত্তি সড় গৈ । নানা জিনিষ দেখিয় গুণিয়া ও পাঠ করিয়া, সংসারের থষ্ট বিষয়ে বহু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়া তাহারা প্রত্যেকের শতকে ও মতবাদকে শ্রদ্ধা করিতে ও তাহার যথাযথ মূল দিভে শিগিয়াছে । কিন্তু শিশু ও কিশোরদিগকে সস্তুষ্ট ও তাহদের মনকে অধিকার করিতে গেলে মত বা তথা লইয়া ফাকি দেওয়া চলে না ! স্বষ্টির প্রারস্তু হঠতে তাজ পর্যন্ত সকল শিশু ও কিশোরের এক মন, এক ভাব। গল্প উপকথা ব! কবিত, তাম্বাদের মনকে নাড়া দিতে না পারিলে তাঙ্কীরা সেগুলি ঠেলিয়। রাখে, সেগুলিকে এতটুকু শুদ্ধ করিবার মত উদারত। তাহীদের নাই। সুরেশবাবুর এই বইখানি শিশুমনকে জয় করিবার কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়াছে। আমাদের বাড়ীর শিওর আলুপোড়া লইয়৷ দল বাধিয়া হল্লা করিতেছে, টানাটানি হেঁচড়াহেঁচড়ি হর করিয়াছে । একজন মহাউৎসাহে গল্পগুলি পড়িতেছে, বাকী সকলে চুপ করিয়৷ শুনিতেছে, হাসিতেছে এবং মাঝে মাঝে কোলাহল করিয়া উঠিতেছে। শিশুদের মন এত সহজে অধিকার করিতে পারিয়াছেন দেখিয়া এই বইখানিকে অন্ত কোনো অগ্নি-পরীক্ষায় না ফেলিয়। আমরা ইহাকে নিঃসন্দেহে সার্টিফিকেট দিতেছি, সকল শ্রেণীর শিশু ও কিশোর-সম্প্রদায় ইহাকে আদর কপ্লিবে। আমাদের মনের এক অংশ এখনো শৈশব ও কৈশোর অতিক্রম করে নাই। তালুপোড়া পড়িয়া আমিও যথেষ্ট আনন্দ লাভ করিয়াছি, বিশেষ করিয়া আলুপোড়া, কেল্লার জুতো ও বুদ্ধির টেকি পড়িয় মনে হইল আলুপোড়গল্পটি ত আমাদেরই কথা, চোতার সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ পরিচয় আছে, পাচু ত আমাদেরই বাড়ীর চাকর ।