পাতা:প্রেমের খেলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারােগার দপ্তর, ১৯৭ সংখ্যা।

ঠনঠনের ভিতর একখানি চটীজুতার দোকান করিয়া বেশ সুখ্যাতির সহিত কার্য্য করিতেছিল। পাড়া-প্রতিবেশিগণের মধ্যে সকলেই রামকে চেনে।

 রামার বাড়ীখানি খেলার। জমীদারের নিকট হইতে জমী খাজনা লইয়া রামা নিজরায়ে সেই খোলর ঘরখানি প্রস্তুত করিয়া সুখে-স্বচ্ছন্দে বাস করিতেছিল। সহসা তাহার বাড়ীতে এই নুতন বিপদ উপস্থিত।

 বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিয়া দেখিলাম, তিনখানি ঘর। তাহারই একখানি ঘরে একজন কনষ্টেবল আমায় লইয়া গেল। ঘরখানির অবস্থা অতি শোচনীয়। ভিতরে কোন জবাব নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। একখানি ভাঙ্গা তক্তাপোষের উপর কতকগুলি ছিন্ন কাঁথা ও একখানি মাদুর। ঘরের একপার্শ্বে একটা কাঠের পিলসুজের উপর একটা মাটীর প্রদীপ, একটা ভাঙ্গা ঘটা ও একখানা ছোট খাল ও একটা বাঁশের আলা ভিন্ন সে ঘরে আর কিছুই ছিল না। ঘরের আড়কাঠ হইতে একগাছি মোটা রজ্জ ঝুলিতেছিল এবং তাহারই একান্ত আমার বড় স্ত্রীর গলদেশে সংলগ্ন ছিল। বাহিক দেখিলেই বোধ হয়, সে উদ্বন্ধনে প্রাণ ত্যাগ করিয়াছে।

 স্থানীয় থানা হইতে একজন জমাদার ও কয়েকজন কনষ্টেবল তথায় গমন করিয়াছিল বটে, কিন্তু তাহারা সাহস করিয়া সেই লাস স্পর্শ করিতে পারে নাই। আমি অগ্রে গরজু কাটিয়া ফেলিলাম, পরে সেই মৃতদেহ পরীক্ষা করিতে লাগিলাম। একজন কনষ্টেবলকে তখনই একজন ডাক্তারের নিকট সেই সংবাদ দিতে পাঠাইয়া দিলাম। বলিয়া দিলাম, তাহাকে যেন সঙ্গে করিয়া আনা হয়।