পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 উপেনবাবু কহিলেন, “বেশ আপনার উপদেশই শিরোধার্য, সারতে হলে আপনিই সারবে। জীবনে আর ডাক্তার ডাকে কোন শালায়। নিন, সিগারেট খান।”

 ইহার পর হিড়িম্বা ঘরে ঢুকিলেই প্রত্যেক সীট হইতে আহ্বান আসিত, ডাক্তারবাবু, এদিকে আসুন, এদিকে” এবং হিড়িম্বাও উত্তর দিতেন —“আমি একটা মানুষ, কতদিক সামলাই।” কথাটা ঠিক, সকলেই চাহিত হিড়িম্বাকে লইয়া আড্ডা জমায়, তাঁর এমনই চাহিদা হইয়াছিল। কেহই তাঁহাকে রোগের বা ঔষধের কথা বলিত না। সাতদিন থাকিয়া হিড়িম্বা ও হর্ষ বিদায় নিলেন।

 যাইবার সময় হিড়িম্বা বলিয়া ফেলিলেন, “বাঁচলাম, কি বিপদেই পড়েছিলাম। অবশ্য, আপনারাও আমাকে বুঝে নিয়েছিলেন। মনে রাখবেন।”

 তাঁহার শেষ অনুরোধটা রক্ষা করিয়াছি, তাঁহাকে আমরা মনে রাখিয়াছি।

 এই সুযোগে আমাদের বড় ডাক্তারের কথা একটু বলা উচিত বোধ হইতেছে।

 মৈমনসিংহের সতীশবাবু হন্তদন্ত হইয়া একদিন আমাদের ব্যারাকে ঢুকিলেন, কহিলেন, “ডাক্তারবাবু গেলেন কোথায়?”

 ট্যানাবাবু জবাব দিলেন, “পাঁচ নম্বর ব্যারাকের দিকে গেছেন দেখলাম। কেন, ব্যাপার কি?”

 তিনি উত্তর দিলেন, “ব্যাপার সীরিয়াস। পরে বলব।” বলিয়া হন্তদন্ত হইয়া বাহির হইয়া গেলেন।

 সতীশবাবুর পরিচয় দরকার। ক্যাম্পে তিনি সতীশ-ঠাকুর বলিয়া পরিচিত। বেঁটেখাটো চট্‌পটে মানুষটি। কোন অবস্থাতেই অপ্রভিত হন না, যেন জাপানী পুতুল, কাৎ করিয়া দিলেও উঠিয়া বসেন। সতীশঠাকুর নিরলস ব্যক্তি, একটা কিছু লইয়া সর্বদাই ব্যস্ত, চুপ করিয়া থাকিলেও মাথার ভিতর প্ল্যানের প্যাঁচ কষেন। ক্যাম্পের সর্বত্রই তিনি আছেন এবং হৈ হৈ লইয়া আছেন। একটু নমুনা দিতেছি, চাখিয়া দেখিবার জন্য।

২০৬