পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ব্যারাকের সম্মুখ দিয়া সতীশঠাকুরকে যাইতে দেখিয়া বিজয় দত্ত আহ্বান করিল, “আসুন, এক বাজী দাবা হোক।”

 মল্লের আহ্বানে মল্লোচিত সাড়া সতীশঠাকুর দিলেন, বলিলেন—“আসুন, আপনার সঙ্গে দাবা খেলব বাঁ হাত দিয়ে, বলিয়াই বসিয়া গেলেন।

 জনৈক বয়স্ক ডেটিনিউকে সতীশঠাকুর ডাকিতেন খুড়োমশায়। খুড়োমশায়ের শীতকালে বিশেষ একটা অভ্যাস ছিল। পাহাড়ের শীতে রাত্রে উঠিয়া প্রস্রাব করা কষ্টকর বোধ হওয়ায় খুড়োমশায় বিছানায় থাকিয়াই বৃহৎ একটি বোতলে উক্ত কার্য সম্পাদন করিতেন, পরে বোতলটা ছিপি আঁটিয়া হাত বাড়াইয়া খাটের নীচে রাখিয়া দিতেন, ভোরে জমাদার আসিয়া তাহা সরাইয়া নিত এবং বোতলটি ধৌত করিয়া পুনরায় স্থানমত রাখিয়া যাইত।

 একদিন ভোরেই সতীশঠাকুর আমাদের ব্যারাকে আসিয়া দেখা দিলেন। সৌরভবাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, “এত ভোরে যে? ব্যাপার কি?”

 সতীশঠাকুর উত্তর দিলেন, “গুরুতর ব্যাপার, খুড়োমশায়ের ‘শ্লিপ অব টং।”

 ‘শ্লিপ অব টং’ বুঝিতে না পারিয়া আমরা চাহিয়া রহিলাম। অর্থ টা ব্যাখ্যা করিতেই সীটে সীটে হাসি ফাটিয়া পড়িল।

 খুড়োমশায় গতরাত্রে মূত্রবেগে উঠিয়া বসেন, হাত বাড়াইয়া খাটের তলা হইতে বোতলটা তুলিয়া লন। কিন্তু ঘুমের চোখে বোতলের মুখটা ঠিক ঠাহর করিতে পারেন নাই, ফলে এক পশলা মূত্র শয্যাতেই পতিত হয়। ইহাই সতীশঠাকুরের ভাষায় খুড়ো মশায়ের ‘শ্লিপ অব টং।’

২০৭