পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वर्ग७दकाश झष्न्बव्ी উভয়ে নীরব হইয়া বসিয়া রহিল। তাহাদিগকে নীরব দেখিয়া ময়র দইটা আপন আপন বাসযটিতে আরোহণ করিল। কাকাতুয়া অনর্থক চীৎকার আরম্ভ করিল। অন্যান্য পক্ষীরা আহারে মন দিল । কিছশক্ষণ পরে কুলসম বলিল, “কাজ অতি সামান্য। এক জন খোজাকে কিছ দিলেই সে এখনই পত্ৰ দিয়া আসিবে। কিন্তু এ কাজ বড় শক্ত। নবাব জানিতে পারিলে উভয়ে মরিব । যা হোক, তোমার কম তুমিই জােন। আমি দাসী। পত্র দাও—আর কিছ নগদ দাও।” পরে কুলসমৰ পত্ৰ লইয়া গেল। এই পত্রকে সত্ৰ করিয়া বিধাতা দলনী ও শৈবলিনীর অদভট একত্ৰ গাঁথিলেন। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ ঃ গরগণ খাঁ যাহার কাছে দলনীর পত্ৰ গেল, তাহার নাম গারগণ খাঁ। এই সময় বাঙগালায় যে সকল রাজপরিষ নিযক্ত ছিলেন, তন্মধ্যে গরগণ খাঁ এক জন সৰবশ্রেষ্ঠ এবং সব্বোৎকৃষ্ণাট। তিনি জাতিতে আরমাণি ; ইস্পাহান তাঁহার জন্মস্থান ; কথিত আছে যে, তিনি পাবেব বস্ত্রবিক্লেতা ছিলেন। কিন্তু অসাধারণ গণবিশিষ্ট এবং প্রতিভাশালী ব্যক্তি ছিলেন। রাজকায্যে নিযক্ত হইয়া তিনি অলপকালমধ্যে প্রধান সেনাপতির পদ প্রাপত হইলেন। কেবল তাহাই নহে, সেনাপতির পদ প্ৰাপত হইয়া, তিনি নািতন গোলন্দাজ সেনার সন্টি করেন। ইউরোপীয় প্রথানসারে তাহাদিগকে সশিক্ষিত এবং সমসজিত করিলেন, কামান বন্দক যাহা প্রস্তুত করাইলেন, তাহা ইউরোপ অপেক্ষাও উৎকৃষ্ণটি হইতে লাগিল; তাঁহার গোলন্দাজ সেনা সবাবপ্রকারে ইংরেজের গোলন্দাজ দিগের তুল্য হইয়া উঠিল। মীরকাসেমের এমত ভরসা ছিল যে, তিনি গরগণ খাঁর সহায়তায় ইংরেজাদিগকে পরাভূত করিতে পারিবেন। গরগণ খাঁর আধিপত্যও এতদনরাপ হইয়া উঠিল; তাঁহার পরামর্শ ব্যতীত মীরকাসেম কোন কৰ্ম্ম করিতেন না; তাঁহার পরামর্শের বিরদ্ধে কেহ কিছ, বলিলে মীরকাসেম তাহা শনিতেন। না। ফলতঃ গরগণ খাঁ একটি ক্ষদ্র নবাব হইয়া উঠিলেন। মসলমান কাৰ্য্যাধ্যক্ষেরা সতরাং বিরক্ত হইয়া উঠিলেন। রাত্ৰি দিবতীয় প্রহর, কিন্তু গরগণ খাঁ শয়ন করেন নাই। একাকী দীপালোকে কতকগলি পত্ৰ পড়িতেছিলেন। সেগলি কলিকাতােস্থ কয়েক জন আরমাণির পত্র। পত্র পাঠ করিয়া, গরগণ খাঁ ভৃত্যকে ডাকিলেন। চোপদার আসিয়া দাঁড়াইল, গারগণ খাঁ কহিলেন, “সব দ্বার খোলা আছে ?” চোপদার কহিল, ‘আছে।” গর। যদি কেহ এখন আমার নিকট আইসে—তবে কেহ তাহাকে বাধা দিবে না—বা জিজ্ঞাসা করিবে না, তুমি কে। এ কথা বঝাইয়া দিয়াছ ? চোপদার কহিল, “হকুম তামিল হইয়াছে।” গর। আচ্ছা, তুমি তফাতে থােক। তখন গরগণ খাঁ পত্ৰাদি বধিয়া উপযক্ত স্থানে লক্কাযিত করিলেন। মনে মনে বলিতে লাগিলেন, “এখন কোন পথে যাই ? এই ভারতবর্ষ এখন সমদ্রবিশেষ—যে যত ডুব দিতে পরিবে, সে তত রত্ন কুড়াইবে। তীরে বসিয়া ঢেউ গণিলে কি হইবে ? দেখ, আমি গজে মাপিয়া কাপড় বেচিতাম—এখন আমার ভযে ভারতবর্ষ অস্থির। আমিই বাঙগালার কত্তা। আমি বাংগালার কত্তা ? কে কত্তা ? কত্তা ইংবেজ ব্যাপারী। --তাহদের গোলাম মীরকাসেম ; আমি মীরকাসেমের গোলাম-— আমি কত্তার গোলামের গোলাম ! বড় উচ্চপদ! আমি বাঙ্গালার কত্তা না হই কেন ? কে আমার তোপের কাছে দাঁড়াইতে পারে ! ইংরেজ ! একবার পেলে হয়। কিন্তু ইংরেজকে দেশ হইতে দীর না করিলে, আমি কত্তা হইতে পারিব না। আমি বাঙগালার অধিপতি হইতে চাহি—মীরকাসেমকে গ্রাহ্য করি না।--যে দিন মনে করিব, সেই দিন উহাকে মসনদ হইতে টানিয়া ফেলিয়া দিব। সে কেবল আমার উচ্চপদে আরোহণের সোপান—এখন ছাদে উঠিয়াছি—মই ফেলিয়া দিতে পারি। কণাটক কেবল পাপ ইংরেজ। তাহারা আমাকে হস্তগত করিতে চাহে—আমি তাহাদিগকে হস্তগত করিতে চাহি। তাহারা হস্তগত হইবে না। অতএব আমি তাদের তাড়াইব । এখন মীরকাসেম মসনদে থাক; তাহার সহায় হইয়া বাঙগালা 8S n8