পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রজনী পথিক, আত্মা একটি পথক পদাৰ্থ, ইহা মানিতে পারি না। মনের ব্রুিয়া দেখিতে পাইইচ্ছা, প্রবত্ত্যাদি। আমার মনে। সখি আমার মনে, দঃখ আমার মনে। তবে আবার মনের অতিরিক্ত আত্মা, কেন মানিব ? যাহার ব্রুিয়া দেখি, তাহাকেই মানিব। যাহার কোন চিহ্ন দেখি না, তাহাকে মানিব কেন ? স। তবে বল না কেন, মন ও শরীর এক। শরীর ও মনের প্রভেদ কেন মানিব ? যে কিছল। আমি। চিন্তা প্রবত্তি ভোগাদি। স। কিসে জানিলে, সে সকল শারীরিক ব্রুিয়া নহে ? আমি। তাহাও সত্য বটে। মন শরীরের ক্লিয়া* মাত্র। স। ভাল, ভাল। তবে আর একটি এসো। বল না কেন যে, শরীরও পঞ্চভূতের ক্লিয়া মাত্র ? শনিয়াছি, তোমরা পঞ্চভূত মান না—তোমরা বহভুতবাদী, তাই হউক ; বল না কেন যে, ক্ষিত্যাদি বা অন্য ভূতগণ, শরীররােপ ধারণ করিয়া সকলই করিতেছে ? এই যে তুমি আমার সঙ্গে কথা কহিতেছ।--আমি বলি যে, কেবল ক্ষিত্যাদি। আমার সম্মখে দাঁড়াইয়া শব্দ করিতেছে, শচীন্দ্রনাথ নহে। মন ও শরীরাদির কলপনার প্রয়োজন কি ? ক্ষিত্যাদি ভিন্ন শচীন্দ্রনাথের उकाञ्@िङ्ग शान्ाि न्ा । ० হারিয়া, ভক্তিভাবে সন্ন্যাসীকে প্ৰণাম করিয়া উঠিয়া গেলাম। কিন্তু সেই অবধি সন্ন্যাসীর সঙ্গে একটা সম্প্রীতি হইল। সব্বদা তাঁহার কাছে আসিয়া বসিতাম; এবং শাস্ত্ৰীয় আলাপ করিতাম। দেখিলাম, সন্ন্যাসীর অনেক প্রকার ভন্ডামি আছে। সন্ন্যাসী ঔষধ বিলায়, সন্ন্যাসী হাত দেখিয়া গণিয়া ভবিষ্যৎ বলে, সন্ন্যাসী যাগ হোেমাদিও মধ্যে মধ্যে করিয়া থাকে-নল চালে, চোর বলিয়া দেয়, আরও কত ভন্ডামি করে। একদিন আমার অসহ্য হইয়া উঠিল। একদিন আমি তাহাকে বলিলাম, “আপনি মহামহোপাধ্যায় পন্ডিত; আপনার এ সকল ভন্ডামি কেন ?” স। কোনটা ভণডামি ? আমি। এই নলচালা, হাতগণা প্রভৃতি। স। কতকগলা অনিশ্চিত বটে, কিন্তু তথাপি কৰ্ত্তব্য। আমি । যাহা অনিশ্চিত জানিতেছেন, তন্দ্বারা লোককে প্রতারণা কেন করেন ? স। তোমরা মড়া কাট কেন ? আমি । শিক্ষাথ । স। যাহারা শিক্ষিত, তাহারা কাটে কেন ? আমি। তত্ত্বানসন্ধান জন্য। স। আমরাও তত্ত্বান সন্ধান জন্য এ সকল করিয়া থাকি। শনিয়াছি, বিলাতী পন্ডিতের মধ্যে অনেকে বলেন, লোকের মাথার গঠন দেখিয়া তাহার চরিত্রের কথা বলা যায়। যদি মাথার গঠনে চরিত্র বলা যায়, তবে হাতের মেখা দেখিয়াই বা কেন না বলা যাইবে ? ইহা মানি যে, হাতের রেখা দেখিয়া, কেহ এ পর্য্যন্ত ঠিক বলিতে পারে নাই। ইহার কারণ এই হইতে পারে যে, ইহার প্রকৃত সঙ্কেত অদ্যাপি পাওয়া যায় নাই, কিন্তু ক্ৰমে ক্ৰমে হাত দেখিতে দেখিতে প্রকৃত সঙ্কেত পাওয়া যাইতে পারে। এজন্য হােত পাইলেই দেখি। আমি । আর নলীচালা ? স। তোমরা লৌহের তারে পথিবীময় লিপি চালাইতে পাের, আমরা কি নলটি চালাইতে পারি না ? তোমাদের একটি ভ্রম আছে, তোমরা মনে করা যে, যাহা ইংরেজরা জানে, তাহাই সত্য, যাহা ইংরেজ জানে না, তাহা অসত্য, তাহা মনষ্যেজ্ঞানের অতীত, তাহা অসাধ্য। বস্তুতঃ তাহা নহে। জ্ঞান অনন্ত। কিছ, তুমি জান, কিছ, আমি জানি, কিছ, অন্যে জানে, কিন্তু কেহই বলিতে পারে না যে, আমি সব জানি—আর কেহ আমার জ্ঞানের অতিরিক্ত কিছ জানে না। কিছ ইংরেজ জানে, কিছ, আমাদের পািব্ব পরিষেরা জানিতেন। ইংরেজরা যাহা জানে, ঋষিরা তাহা জানিতেন না; ঋষিরা যাহা জানিতেন, ইংরেজরা এ পর্যন্ত তাহা জানিতে পারে নাই।

  • Function of the brain

ܠ ܓ Gk