পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकब ब्रष्न्बव्ी করিয়া জিজ্ঞাসা করিতেছিলেন। রোহিণী যে নিরপরাধিনী, ভ্রমরের তাহা দঢ় বিশ্ববাসী হইয়াছিল। আপনার অস্তিত্বে যত দর বিশবাস, ভ্রমর উহার নিদোষিতায় তত দীর বিশবাসাবতী। কিন্তু সে বিশবাসের অন্য কোনই কারণ ছিল না।--কেবল গোবিন্দলাল বলিয়াছেন যে, “সে নিন্দোষী, আমার এইরপ বিশ্ববাস।” গোবিন্দলালের বিশ্ববাসেই ভ্ৰমরের বিশ্ববাস। গোবিন্দলাল তাহা বঝিয়াছিলেন। ভ্রমরকে চিনিতেন। তাই সে কালো এত ভালবাসিতেন। হাসিয়া গোবিন্দলাল বলিলেন, “আমি বলিব, কেন তুমি রোহিণীর দিকে ?” ভিত্র । কেন ? গো। সে তোমায় কালো না বলিয়া উত্তজবল শ্যামবণ বলে । ভ্রমর কোপাকুটিল কটাক্ষা করিয়া বলিল, “যাও।” গোবিন্দলাল বলিলেন, “যাই ।“ এই বলিয়া গোবিন্দলাল চলিলেন । ভ্রমর তাঁহার বসন ধরিল—“কোথা যাও ?” গো। কোথা যাই বল দেখি ” ভ্ৰ। এবার বলিব ? গো। বল দেখি ? ভ্ৰ। রোহিণীকে বাঁচাইতে । Q “তাই।” বলিয়া গোবিন্দলাল ভোমরার মািখচুম্বন করিলেন। পরদঃখকাতরের হৃদয় পরদঃখকাতরে বঝিল—তাই গোবিন্দলাল ভ্রমরের মািখচুম্বন করিলেন। গোবিন্দলাল কৃষ্ণকান্ত রায়ের সদর কাছারিতে গিয়া দশন দিলেন। কৃষ্ণকান্ত প্ৰাতঃকালেই কাছারিতে বসিয়াছিলেন। গদির উপর মসনদ করিয়া বসিয়া, সোণার আলবোলায় অস্বরি তামাকু চড়াইয়া, মত্ত লোকে সবগের অন্যাকরণ করিতেছিলেন। এক পাশে রাশি রাশি দপতরে বাঁধা চিঠিা, খতিয়ান, দাখিলা, জমাওয়াশীল, থোকা, করচ, বাকি জায, শেহা, রোকড়—আর এক পাশে নায়েব, গোমস্তা, কারকুন, মহরি, তহশীলদার, আমীন, পাইক, প্রজা। সম্মখে অধোবদনা অবগণঠনবতী রোহিণী। গোবিন্দলাল আদরের ভ্রাতুলপত্র। প্রবেশ করিয়াই জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হয়েছে, জ্যেঠা মহাশয় ?” তাঁহার কন্ঠস্বর শনিয়া, রোহিণী অবগণঠন ঈষৎ মন্ত করিয়া, তাঁহার প্রতি ক্ষণিক কটাক্ষ করিল। কৃষ্ণকান্ত তাঁহার কথায় কি উত্তর করিলেন, তৎপ্রতি গোবিন্দলাল বিশেষ মনোযোগ করিতে পারিলেন না; ভাবিলেন, সেই কটাক্ষের অর্থ কি ! শেষ সিদ্ধান্ত করিলেন, “এ কাতর কটাক্ষর অর্থ, ভিক্ষা । ” কি ভিক্ষা ? গোবিন্দলাল ভাবিলেন, আত্তের ভিক্ষা আর কি ? বিপদ হইতে উদ্ধার । সেই ব্যাপী তীরে সোপানোপরে দাঁড়াইয়া যে কথোপকথন হইয়াছিল, তাহাও তাঁহার এই সময়ে মনে পড়িল। গোবিন্দলাল রোহিণীকে বলিয়াছিলেন, “তোমার যদি কোন বিষয়ের কন্ডটি থাকে, তবে আজি হউক, কালি হউক, আমাকে জানাইও ।“ আজি ত রোহিণীর কস্ট বটে, বঝি এই ইঙ্গিতে রোহিণী তাঁহাকে তাহ জানাইল । গোবিন্দ লাল মনে মনে ভাবিলেন, “তোমার মঙ্গল সাধি, ইহা আমার ইচ্ছা ; কেন না, ইহলোকে তোমার সহায় কেহ নাই দেখিতেছি। কিন্তু তুমি যে লোকের হাতে পড়িফােছ— তোমার রক্ষা সহজে নহৈ ।” এই ভাবিয়া প্রকাশ্যে জ্যোিঠতােতকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হয়েছে, জ্যেঠা মহাশয় ?” বদ্ধ কৃষ্ণকান্ত একবার সকল কথা আন পকির্বক গোবিন্দলালকে বলিয়াছিলেন, কিন্তু গোবিন্দলাল রোহিণীর কাটাক্ষের ব্যাখ্যায় ব্যতিব্যস্ত ছিলেন, কাণে কিছই শানেন নাই। ভ্ৰাতুলপত্র আবার জিজ্ঞাসা কবিল, “কি হয়েছে, জ্যেঠা মহাশয় ?” শনিয়া বদ্ধ মনে মনে ভাবিল, “হয়েছে! ছেলেটা বঝি মাগীর চাঁদপােনা মািখখানা দেখে ভুলে গেল!” কৃষ্ণকান্ত আবার আন পধিবাক গত রাত্রের বক্তান্ত গোবিন্দলালকে শনাইলেন। সমাপন করিয়া বলিলেন, G. G. W.