సాV8 o বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় । কৃষ্ণ-কীৰ্ত্তন পড়িলে বুঝা যায়। অক্ষরগুলি অনেকটা খৃষ্টীয় ১৩শ শতাব্দীতে উৎকীর্ণ বিশ্বরূপ সেনের তাম্রশাসনের অক্ষরানুরূপ। পুথির সহিত প্রাপ্ত একখণ্ড কাগজের লেখা দেখিয়া গ্ৰন্থখানি বিষ্ণুপুর-রাজের গ্রন্থাগারে রক্ষিত ছিল বলিয়া অনুমান হয়। এমনও হইতে পারে যে উহা মহারাজ বীরহাম্বীরের অধীনস্থ দস্থ্যগণ কর্তৃক অপহৃত বৈষ্ণবগ্রন্থাবলীর অন্যতম। উহার ভাষা বর্তমান কালে সংগৃহীত কবিগণের যাবতীয় পদাবলীর ভাষা হইতে কিঞ্চিৎ স্বতন্ত্র। চণ্ডিদাস প্রথম বয়সে 'কৃষ্ণ-কীৰ্ত্তন’ রচনা করেন। পদাবলীর তুলনায় কৃষ্ণ-কীৰ্ত্তনের রচনা কতকটা অপরিপক এবং সংস্কৃত উপমা ও শব্দের দ্বারা কিছু অতিরিক্ত মাত্রায় ভারাক্রান্ত। নিম্নোদ্ধত পদগুলি অনেক স্থলেই জয়দেবের গীতগোবিন্দ হইতে বঙ্গভাষায় অনুদিত। কৃষ্ণের রূপ। নীল কুটিল ঘন মৃদ্ধ দীর্ঘ কেশ (১)। তাত ময়ূরের পুচ্ছ দিল সুবেশ ॥ চন্দন তিলকে (২) অতি শোভিত কপালে (৩) । দুই পাশে লঘু মধ্যে উন্নত বিশালে । সকল দেবের বোলে হরি বনমালী। অবতার করি করে ধরণীত (৪) কেলি ॥ ধ্রু ॥ সুরেথ স্থপুট নাসা নয়ন কমল। কামাণ সদৃশ শোভে ভ্ৰাহিযুগল। ওষ্ঠ অধর যেহ যমজ (৫) পোআর (৬) । কল্পযুগ (৭) শোভে যেহ্নে (৮) বরুণের জাল । ভুজযুগ করিকর জানুত লুলে (৯)। করঙ্গরুবিন্দ-(?)মাল নিৰ্ম্মিত কমলে। মরকত পাট সদৃশ বক্ষঃ-স্থল। ক্ষীণ-মধ্য রামরস্তা জঙঘ-যুগল ॥ (১) রামায়ণে লক্ষ্মণের বর্ণনায় বাল্মীকি লিখিয়াছেন, “নীল-কুঞ্চিতমুৰ্দ্ধজমৃ”–এই নীল কি বর্ণ তাহা বুঝা গেল না। চুল নীল কিরূপে হয় ? (২) তিলক দ্বারা। (৩) কপাল। (৪) ধরণীতে। (৫) যুগ্ম । (৬) প্রবাল । (৭) কর্ণদ্বয়। (৮) যেন। (৯) লোলিত হয়।