বাঙলা-লেখার রীতি বর্তমান বাঙলা ভাষার দিকে লক্ষ্য করিলে সহজেই দেখিতে পাওয়া যাইবে যে, বহু লেখাতেই অনেকস্থলে শব্দসমূহের পরস্পর সম্বন্ধরক্ষা নাই, বা থাকিলেও যথোচিত চিহ্নদ্বারা তাহ সুচিত হয় না। বলিবার সময় ভাষায় যে ক্রটি লক্ষিত হয় না, লিথিবীর সময় তাহা স্পষ্ট প্রতীত হয়। অনেকে লিখিয়া থাকেন ‘প্রাকৃতিক বিজ্ঞান চর্চা, কিন্তু ইহা ঠিক নহে। ‘প্রাকৃতিক’ পদের সহিত 'বিজ্ঞান' পদের, এবং ইহার সহিত 'চর্চা পদের সম্বন্ধ ; অতএব সংযুক্ত করিয়া লিখিতে হইবে ‘প্রাকৃতিকবিজ্ঞানচর্চা।" লিখিত হইয়া থাকে ‘অকুরূপ ফললাভাশা', এখানে 'অতুরূপ’ পদের ফললাভাশা' পদের সহিত সম্বন্ধ নহে, ‘ফল পদের সহিত সম্বন্ধ । অতএব লেখা উচিত ‘অমুক্লপ-ফললাভাশা’ অথবা ‘অমুরূপফললাভাশা’ । সমস্ত পদ অতিদীর্ঘ হইয়া উঠিলে পদগুলিকে হাইফেন ও কমার যোগে পৃথকৃ পৃথক্ করিয়া লিখিলে পাঠের কোন অসুবিধা । হইবার সম্ভাবনা নাই। যেমন, ‘প্রবাদ, কাহিনী ও জনশ্রুতিসমূহ। এখানে সমূহ পদের প্রবাদ', 'কাহিনী’ ও জনশ্রুতি এই তিনটি পদেরই সম্বন্ধ, এবং তাহ পূৰ্ব্বোক্তরূপে স্পষ্টভাবে সুচিত হয় । লেখা হয় ‘ধাতু ও প্রস্তরময়ী মূৰ্ত্তি। এখানে 'ধাতু’ ও ‘প্রস্তর উভয়েরই সহিত ময়টু'প্রত্যয়ের সম্বন্ধ। অতএব তাহার সূচনার জন্য হাইফেন দিয়া লিথিতে হইবে ধাতু ও প্রস্তরময়ী মূৰ্ত্তি। এইরূপ ধাতু ও প্রস্তর মূৰ্ত্তি। ধাতু ও প্রস্তরমূৰ্ত্তি নহে ; ‘স্থাপত্য- ও ভাস্কৰ্য্য-বিদ্যা’, ‘স্থাপত্য ও ভাস্কৰ্য্যবিদ্যা' নহে ; ‘ঋক্- ও সাম-বেদ', ‘ঋক্ ও সামবেদ নছে ; ‘জাতি- ও ধৰ্ম্মনিৰ্ব্বিশেষে’, ‘জাতি ও ধৰ্ম্মনিৰ্ব্বিশেষে নহে ; “যুক্তি-ও তর্ক-বলে’, ‘যুক্তি ও তর্কবলে’ নহে। ‘সৎ-, চিং-ও আনন্দ-স্বরূপ, ‘সৎ, চিৎ ৪ আনন্দস্বরূপ নহে ; ‘হিন্দু,- বৌদ্ধ ও জৈনধৰ্ম্মাবলম্বী, হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈনধৰ্ম্মাবলম্বী নহে ; নিন্দ বা প্রশংসা-মাত্র, নিন্দ ব প্রশংসামাত্র নহে ; ইত্যাদি। আবার ঐ সমস্ত যুক্তিতর্কপ্রদর্শন না লিথিয় ঐ সমস্ত যুক্তিতর্ক-প্রদর্শন লেখা সঙ্গত, ইহাতে সমস্ত’ পদের সহিত 'যুক্তিতর্ক' পদের সম্বন্ধ সুচিত করিতে পার शांश्न ! "তিনি যে শিক্ষার পক্ষপাতী তাহ কল্যাণকর নহে? এই ব্যাক্যটিকে অসন্দিগ্ধ’ করিবার জন্ত বক্তার বিবক্ষ-অনুসারে দুই প্রকারে লিখিতে পারা যায়—তিনি যে, শিক্ষার পক্ষপাতী ইত্যাদি; অথবা তিনি যে-শিক্ষার পক্ষপাতী ইত্যাদি; এইরূপ তখন যে-কোন ব্যক্তি’, অথবা তখন বে, কোন ব্যক্তি' ; ‘কল্য যে-কেহ আসিবে, অথবা ‘কল্য যে, কেহ আসিবে' ; ইত্যাদি। ‘এই পুস্তকখানি তাহার জনৈক শিষ্য প্রণীভ’ অথর! এই......শিষ্যপ্রণীক্ত লেখ!