8次 তষিয়ে সংশয়ের অভাব ছিল না। কিন্তু সেই যুগেও অকুতোভয়তাই ইংরাজজাতির প্রধান অবলম্বন বলিয়া পরিচিত ছিল। তাহার উপর নির্ভর করিয়াই, প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতিযোগিতা পরাভূত করিয়া, ভারত-বাণিজ্যে লাভবান হইবার আশায় ইংরাজ-বণিক-সমিতি মূলধন-সংগ্রহে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। তাহা বড় সহজে বf নিরুদ্ধেগৈ সুসম্পন্ন হয় নাই। প্রথমবারের বাণিজ্য-যাত্র সফল হইলে, বণিকূ-সমিতি অধ্যবসায়-প্রকাশের অবসর লাত করিতেন কি না, তদ্বিষয়েও সংশয়ের অভাব ছিল না। তাহারা যে বাণিজ্য-যাত্রায় অগ্রসর হইয়াছিলেন, তাহাকে প্রকৃত প্রস্তাবে ভারত-বাণিজ্য বলিয়া অভিহিত করা যায় না ;–তাহ প্রাচ্য মহাসাগরের অনির্দিষ্ট অভিনব বাণিজ্য। কারণ, তৎপূৰ্ব্বে ইউরোপের অন্যান্ত প্রবল জাতি ভারতবাণিজ্য অধিকার করিয়া রাখিয়াছিলেন। তৎকালে ভারতবর্ষে সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠার কোনরূপ সুযোগ উপস্থিত থাকিলে, র্তাহায়াই সে সুযোগের ফললাভ করিতে পারিতেন। কিন্তু ভারতবর্ষ তখনও একটি পরাক্রান্ত প্রাচ্য সাম্রাজ্য বলিয়াই সুপরিচিত ছিল। উত্তরকালে, সে সাম্রাজ্য, তাহার অন্তনিহিত বিদ্বেষ-বহ্নিতেই ভষ্মীভূত হইয়। গিয়াছিল! সেই শ্মশানভূমির উপর ইংরাজবণিক-সমিতির বিজয়-স্তম্ভ প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছে। তাহ। অচিন্তিত-পূর্ব আকস্মিক ঘটনা ; নিরতিশয় বিস্ময়ের ব্যাপার বলিয়াই অভিহিত হইবার যোগ্য। তখনকার ইংরাজ বণিক্-সমিতির লাভের বঙ্গদশন [ ১২শ বৰ্ষ, বৈশাখ, ১৩১৯ লোত প্রবল থাকিতেও, ক্ষতির আশঙ্ক৷ তুল্যরূপেই প্রবল বলিয়। পরিচিত ছিল। সেকালের পুরাতন দপ্তরের কাগজপত্রে তাহার কথাই প্রধান কথা । রাজকার্ঘ্যে লিপ্ত হইয়া, রাষ্ট্রবিপ্লবের ঘূর্ণাবর্তের নিকটবৰ্ত্তী হইলে, বাণিজ্য-ব্যাপার ক্ষতিগ্রস্ত হইতে পারে বলিয়া, একদিকে যেমন প্রবল আশঙ্কা ইংরাজ-বণিক্ সমিতিকে সৰ্ব্বদা সতর্ক করিয়া রাথিত ; অন্যদিকে, সেইরূপ সতর্কতাই, বাণিজ্য-রক্ষার খাতিরে তাহাদিগকে রাজকাৰ্য্যে লিপ্ত হইবার প্রয়োজন স্বীকার করিতেও বাধ্য করিত। সুতরাং সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠার প্রথম যুগের সকল কথাই বাণিজ্যের কথা । তাহার জন্যই “পলাশির যুদ্ধ ;”—তাহার জন্যই “দেওয়ানী সনন্দ’ গ্রহণ। তৎকালে শাসন-শোষণকাৰ্য্য এবং শোষণের জন্য শাসনকার্য্য প্রধান রাজ কাৰ্য্য বলিয়া পরিচিত ছিল। সেই জন্ত, অল্পকালের মধ্যেই, ইংরাজ বণিকৃ-সমিতি শাসনকার্য্যের তার গ্রহণ করতেও সম্মত হইয়াছিলেন। যথাকালে রাজস্ব সংগ্রহ করাই সেকালের লক্ষ্য ছিল ; তাহার জন্য “মন্বন্তরের” সময়, কৃষককুল প্রায় নিৰ্ম্মল श्झेश्व। গিয়াছিল ! রাজস্ব-সংগ্রহের লালসা প্রবল ছিল বলিয়াই, কৃষকের প্রতি দৃষ্টিপাত না করিয়া, ভূস্বামীর প্রতি দৃষ্টিপাত করিরাই, রাজস্ব-বিধি গঠিত হইরাছিল। প্রজাপলিনই যে সর্বশ্রেষ্ঠ রাজধৰ্ম্ম, গে কথা কখন কখন সাধারণভাবে উল্লিখিত . হইলেও, বণিক-সমিতি তাহাকে মুলধৰ্ম্ম বলিয়া গ্রহণ করিতে পারিতেন না।