পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$bzSR বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, শ্রাবণ । করিতেছে অথবা ছুটির পর বাড়ী চলিয়া গেছে, আর একজনমাত্র বালক পাঠগৃহে আবদ্ধ থাকিয়া বসিয়া-বসিয়া লিখিতেছে,ইহা বোধ হয় বালকদের পক্ষে দণ্ডের চুড়ান্ত । স্কুলের কর্তৃপক্ষ মিশনরীরা বলিতেন যে, বালকদের জরিমানা করিলে সেটাতে কাৰ্য্যত তাহীদের অভিভাবকগণেরই জরিমানা করা হয়। বালকদিগকে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করিলে তাহারা প্রায়ই পিতামাতার নিকট অর্থ চাহিতে সাহস করে না, অনেক স্থলে চুরি করিয়া বসে, অথবা অন্য কোন অসদুপায়ে পয়সা সংগ্ৰহ করিতে চেষ্টা করে ; সেইজন্ত ছাত্রদের অর্থদণ্ডের অপেক্ষা জঘন্ত প্রথা আর নাই । লিথনদণ্ডে ছাত্রেরাও শাসিত হর, অথচ তাহাদের হস্তাক্ষরেরও উন্নতি হইয়া থাকে। স্কুলের ছোটসাহেব বালকগণকে বড় ভাল বাসিতেন, এমন কি, ছাত্রদের পীড়া হইলে স্বয়ং তাহীদের বাড়ীতে গিয়া দেখিয়া আসিতেন। পাদ্রীরা সকলেই অল্প-অল্প বাংলা শিখিয়াছিলেন । সময়ে সময়ে র্তাহাদের বাংলা গুনিয়া বালকগণ হাস্য ংবরণ করিতে পারিত না। ছোট-সাহেব কোন বালকের উপর বিরক্ত হইলে আকস্মাৎ চীৎকার করিয়া বলিয়া উঠিতেন,“জী— দূর-—” অর্থাৎ যা—দূর । এই ‘য’শব্দট উচ্চারণ করিতেন ềsātē pleasure »izwą ‘s এ চন্দ্রবিন্দু দিলে যেমন হয়, কতকটা সেইরূপ। ফরাসীরা “চ’ ছ’ উচ্চারণ করিতে পারে না, তাহার পরিবর্তে ‘শ ও 'স' ব্যবহার করে। ছোট-সাহেব ছাত্রগণকে গালাগালি দিতেন "নের পোশা” বলিয়া। “নের পোশা” অর্থাৎ “নেড়া পচা।” কেশশূন্য মন্তক যে একটা গালাগালি, তাহ বাঙালী ছাত্রেরা কোনপ্রকারেই হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিত না। র্তাহার আর একটা তিরস্কারসূচক কথা ছিল-- “র্যারের দুদ খেয়ে বাস্থরের মত হয়েসিস।” ( ষাড়ের দুদ থেয়ে বাছুরের মত হরেছিস্ ! ) & ফরাসী স্কুলে মাসে একবার করিয়া পরীক্ষা হইত। যে সকল বালক পরীক্ষায় উচ্চস্থান লাভ করিত, তাহারা প্রতিমাসে একখানা করিয়া ছাপান সার্টিফিকেট পাইত ; ঐ সার্টিফিকেটকে “নোত্-গে-অনার’ (note of honour) of Te I Ceft; cott, ছেলেরা বলিত ‘নতদানায়’ এবং কেহ কেহ বা নরদামায়'ও বলিত। যাহাদের নোত্দে-অনারের সংখ্যা সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক এবং বাৎসরিক পরীক্ষাতে ফল তাল হইত, তাহtরাই প্রাইজ পাইত । বtংসরিক পরীক্ষার সময় কেহ পীড়িত হইয়া পরীক্ষণ দিতে অসমর্থ হইলে, সে নোত দে-অনার দেখাইয়া উপরের শ্রেণীতে উঠিতে পারিত । এখন এইপ্রকার নোত-দে-অনার নাই,তাহার পরি বৰ্ত্তে প্রতি বালকের জন্ত একখানি করিয়া ছাপান পুস্তক শিক্ষকের নিকট রাখিয়। দেওয়া হয়। প্রত্যহ কোন বালক কোন বিষয়ে কত নম্বর পাইল, তাহ ঐ পুস্তকে লেখা থাকে । মাসের শেষ ঐ পুস্তকখানিতে শিক্ষক নিজের অভিপ্রায় লিখিয়া ছাত্রের অভিভাবকের নিকট পাঠাইয় দেন এবং অভিভাবক তাহা দেখিয়া ছাত্রের পড়াগুনার পরিচয় পান। অভিভাবক দেখিয়া নাম সই করিয়া আবার ছাত্রের দ্বারা শিক্ষকের