পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ সংখ্যা । ] স্থিত হইলাম। মন্দির কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত, রথের ভায় আকারবিশিষ্ট । মন্দিরে আজ বিস্তর লোকসমাগম। দুরন্ত-সমর-দর্শনে ভীত নরনারী স্বদেশের কল্যাণকামনায় মন্দিরে পুজ দিতে আসিতেছে। পূজার্থী সকলেরই পায়ে পান্থকা । ইহাদের পাদুকা মখমল ও বস্ত্র নিৰ্ম্মিত বলিয়াই হউক বা অন্য কোন কারণেই হউক, ইহারা দেবালয়ে প্রবেশকালে পাছক ত্যাগ করার প্রয়োজন মনে করে না। জুতা পায়ে দিয়া বিগ্রহস্পর্শও ইহাদের মতে দোষাবহ নহে। আমাকেও কেহ পাছক ত্যাগ করিতে অনুরোধ করিল না। দেবীর আকৃতি প্রায় আমাদের অন্নপূর্ণমূৰ্ত্তির অনুরূপ। এখানকার দেবতারা প্রায় বাহনবর্জিত। কদাচিৎ দুইএকজনের হাঙর বা কচ্ছপ বাহন আছে । দেবী আমাদের দেবীগণের দ্যায় অলঙ্কারবিমণ্ডিত নহেন—কেবল হস্তে ২৩গাছি বলয়, কর্ণে ফুলটেড়ী এবং বক্ষে সমুজ্জ্বল কাচুলি। দেবীর সর্বাঙ্গে কতকগুলি শিশুমূৰ্ত্তি—কেহ পৃষ্ঠে, কেহ বাহুতে, কেহ স্কন্ধে, কেহ চরণতলে—সন্তানপরিবেষ্টিতা জননীমূৰ্ত্তির স্বম্পষ্ট প্রতিরূপ! কুঙ্কুম ও অপর একপ্রকার সুগন্ধিদ্রব্যে সুবাসিত অভিষেকজলে স্নাত দেবীমূৰ্ত্তি হইতে সৌরভ বিকিরিত ও বারিবিন্দু ক্ষরিত হইতেছিল। চীনের একে একে সকলে দেবীমূর্তি স্পর্শ করিয়া दाँदेहरुश्णि । e মন্দিরে • প্রবেশ করিয়া ইহারা প্রথমে বিগ্রহের-সন্মুখস্থিত বৃহৎ শঙ্খ ধ্বনিত করিষ্ঠত করিতে মূৰ্ত্তি প্রক্ষিণ করিল, তার পর চীন-কাহিনী, Çüre শম্বটি যথাস্থানে রাখিয়া প্রত্যেকে কেহ বা ৫ সেণ্ট কেহ বা ১০ সেণ্ট দেবীর নিকট প্রণামী দিল, শেষে ভক্তিভরে দেবীর শিরোদেশ স্পর্শ করিয়া বাহির হইয়া গেল। এইরূপে একদল আসিতে, একদল যাইতে লাগিল। স্ত্রী-পুরুষ কাহারও আসিতে বাধা নাই। তবে স্ত্রীর ভাগ কিছু কম। আমাদের দেশে কিন্তু ইহার বিপরীত । আমরা ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম স্ত্রীলোকের হাতে দিয়া নিজের সভ্যতালাভের জন্য ব্যাকুল হইয়া উঠিয়াছি। সেই মন্দিরগৃহে আর একটি বাঙালীবাবুর সঙ্গে সাক্ষাৎ হইল। বাবুটির নাম অমৃতলাল দে–নিবাস ২৪ পরগণার অন্তর্গত রাজীবপুর গ্রামে— এখানে Pay Officeএ কৰ্ম্ম করেন। ইনিও আমারই মত দেবীদর্শনে আসিয়াছিলেন। কোন কোন বৃদ্ধ চীনবাসী দেবীর সম্মুখে আসিয়া প্রথমে মাথাটা একটু নোয়াইয়া ও দক্ষিণ জামুতে হাত রাখিয়া মুহূৰ্ত্তকাল অপেক্ষা করিতেছিলেন। শুনিলাম, ইহা ভক্তি ও সন্মান প্রদর্শনের চিন্তু । - মন্দিরের প্রাচীর অত্যন্ত পাতলা বলিয়া মন্দিরাভ্যস্তরে স্থান যথেষ্ট। প্রাচীরগাত্রে নানাবিধ নরনারীমূৰ্ত্তি এবং তীর-ধনু প্রভৃতি প্রহরণ সুচিত্রিত। দেবীর চতুর্দিকে আরও অনেকগুলি বিগ্রহযুক্তি অবস্থিত—কিন্তু ইহাদের কেহই আমার পরিচিত মহেন। অসি, শেল, শূল, পটিস, মুদগর—পরিশোভিত অষ্ট হস্ত, দ্বাদশ বদন, এক বীরমূর্তি দেখিলাম। র্তাহার পার্থে হনুমানের স্থায় কয়েকটি বিগ্রহমূৰ্ত্তিও দৃষ্টিগোচর হইল। ৰাক্ষ্মীকির মানসপুত্ৰগণ সুদূর চীনদেশে ভাঙ্গিয়