পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Selo o বঙ্গদর্শন । [ ভাত্র। বিনোদিনী। তা কেমন করিয়া জানিব, আমরা মুখ মেয়েমানুষ ! আপনাদের ডাক্তারীশাস্ত্রে বুঝি এইমত লেখা আছে ? বিহারী। আছেই ত। সেবা দেখিয়া আমারো কপাল ধয়িয়া উঠিতেছে। কিন্তু পোড়াকপালকে বিনা চিকিৎসাতেই চটুপটু সারিয়া উঠিতে হয়। মহীনদীর কপালের জোর বেশি ! ● বিনোদিনী ভিজা বস্ত্রখণ্ড রাখিয়া দিয়া । কহিল-“কাজ নাই, বন্ধুর চিকিৎসা বন্ধুতেই করুন!” বিহারী সমস্ত ব্যাপার দেখিয়া ভিতরে ভিতরে বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছিল। এ কয়দিন সে অধ্যয়নে ব্যস্ত ছিল, ইতিমধ্যে মহেন্দ্র, বিনোদিনী ও আশায় মিলিয়া আপনা-আপনি ষে এতখানি তাল পাকাইয়া তুলিয়াছে, তাহা প্লে হানিত না। আজ সে বিনোদিল্লীকে বিশেষ করিয়া দেখিল, বিনোদিনীও তাহাকে দেখিয়া লইল । বিহারী কিছু তীক্ষস্বরে কহিল—“ঠিক কথা ! বন্ধুর চিকিৎসা বন্ধুই করিবে । আমিই মাথাধর । আনিয়াছিলাম, আমিই তাহা সঙ্গে লইয়া চলিলাম। ওডিকলোন আর বাজে খরচ করিবেন মা।”—আশার দিকে চাহিয়া কহিল – “বোঠাPণ, চিকিৎসা করিয়া রোগ সারানোর চেয়ে রোগ না इहे८ङ cन sग्नfहे उठांट !” • ( ১৬ ) বিহারী মনে মনে আশাকে মূঢ় বলিয়। অনেক ভৎসনা করিল—হায়, এমন করিয়া নিজের শিয়রের কাছে নিজে আগুন লাগায়! : কিন্তু এই মূঢ়তার আশার প্রতি বিহারীর স্নেহ আরো বাড়িল। সেদিন সন্ধ্যাবেলায় একলাঘরে বসিয়া সরলা সতীর বিশ্বস্ত মুখখানি স্মরণ করিয়া তাহার দুই চক্ষু জলে ভরির গেল ! মুগভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া জানালা হইতে তারকাখচিত অন্ধকারের মধ্যে দৃষ্টি নিমগ্ন করিয়া দিয়া জটিল সংসারের সুখদুঃখের বিপুল রহস্ত আলোচনা করিয়া কোথাও কুল পাইল না । মনে মনে ভাবিল, “অদৃষ্ট যেন উপন্যাসলেখকের মত ; যেটি যেমন ভাবে হইলে কোন গোল হয় না, সকল পক্ষেই মুখের হয়, তাহা সে কোনমতেই ঘটিতে দেয় না ; তাহার প্রকাও নিষ্ঠুর উপন্যাসকে দুই কথাতেই সহজ শেষ করিয়া দিতে চায় না ! বেচার আশা কোথায় সংসারের এক অদৃশু কোণে উপেক্ষিত হইয়া পড়িয়াছিল, আর সকলকে ঠেলিয়া, আর সকলকে ফেলিয়া, কোথা হইতে মহেন্দ্র আসিয়া এই অজ্ঞাত বাধিককে আপন অসংযত হৃদয়ের আবর্তের মধ্যে বলপূৰ্ব্বক টানিয়া লইল! আর একটু হইলেই ইহা অার এক রকম হইত, আর একটু হইলেই ইহা না হইতে পারিত !” কিন্তু এই উপন্যাসলেখকের হাত হইতে আশাকে যতটা সম্ভব রক্ষা করিতে হইবে ত! বিহারী ভাবিল, “আর দূরে থাকিলে চলিবে না, যেমন করিয়া হৌক, ইহাদের মাঝথানে আমাকেও একটা স্থান লইতে হইবে । ইহাদের কেহই আমাকে চাহিবে না, তবু আমাকে থাকিতে হইবে।” বিহারী আহবান-অভ্যর্থনার অপেক্ষ না রাখিয়াই মহেঞ্জের ব্যহের মধ্যে প্রবেশ করিতে লাগিল। বিনোদিনীকে কহিল—