পাতা:বন-ফুল - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বন-ফুল

গভীর নীরব ঘর, শিহরে যে কলেবর।
হৃদয়ে রুধিরোচ্ছ্বাস স্তব্ধ হয়ে বয়—
বিষাদের অন্ধকারে, গভীর শোকের ভারে
গভীর নীরব গৃহ অন্ধকার ময়!
কেওগো নবীনা বালা, উজলি পরশ-শালা
বসিয়া মলিন ভাবে তৃণের আসনে?
কোলে তার সঁপি শির, কে শুয়ে হইয়া স্থির,
থেক্যে থেকে দীর্ঘশ্বাস টনিয়া সঘনে,
সুদীর্ঘ ধবল কেশ, ব্যাপিয়া কপোল দেশ
শ্বেতশ্মশ্রু ঢাকিয়াছে বক্ষের বসন,
অবশ জ্ঞেয়ান হারা, স্তিমিত লোচনতারা
পলক নাহিক পড়ে নিস্পন্দ নয়ন।
বালিকা মলিন মুখে, বিশীর্ণা বিষাদ দুখে
শোকে, ভয়ে অবশ সে সুকোমল হিয়া
আনত করিয়া শির, বালিকা হইয়া স্থির
পিতার বদন পানে রয়েছে চাহিয়া;
এলোথেলো বেশবাস, এলোথেলো কেশপাশ
অবিচল আঁখি পার্শ্ব করেছে আবৃত!
নয়ন পলক স্থির, হৃদয় পরাণ ধীর
শিরায় শিরায় রহে স্তবধ শোনিত