এই রূপে জীবনের তৃতীয় ভাগ বনে অতিবাহিত করিয়া, সর্ব্বসঙ্গ পরিত্যাগপুর্ব্বক, জীবনের চতুর্থ ভাগে পরিব্রজ্য আশ্রম অবলম্বন করিবেক।
যিনি এই রূপ সময় বিভাগ করিয়া, যথাক্রমে আশ্রমচতুষ্টয় অবলম্বনের ঈদৃশ স্পষ্ট বিধি প্রদান করিয়াছেন; তিনি, গৃহস্থাশ্রম সম্পাদন কালে পুত্রলাভের পর স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে, আর দারপরিগ্রহ না করিয়া, এককালে চতুর্থ আশ্রম অবলম্বনের বিধি দিবেন, এরূপ মীমাংসা নিতান্ত অপসিদ্ধান্ত। তবে, “ঋণত্রয়ের পরিশোধ করিয়া মোক্ষে মনোনিবেশ করিবেক”, এ বিধির তাৎপর্য্য এই যে, ঋণত্রয়ের পরিশোধ না করিয়া মোক্ষপথ অবলম্বন করা সম্পূর্ণ অবৈধ; উক্ত বচনের উত্তরার্দ্ধ দ্বারা ইহাই সুস্পষ্ট প্রতিপন্ন হইতেছে। যথা,
অনপকৃত্য মোক্ষস্তু সেবমানো ব্রজত্যধঃ।
ঋণ পরিশোধ না করিয়া, মোক্ষপথ অবলম্বন করিলে অধোগতি প্রাপ্ত হয়।
উল্লিখিত প্রকারে দারপরিগ্রহের নিষেধ ও মোক্ষপথ অবলম্বনের ব্যবস্থা স্থির করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয় কহিতেছেন,
“কিন্তু যদি বিষয়বাসনা নিবৃত্তি না হয়, তবে তাহার ফললাভেব নিমিত্ত বিবাহ করিবেক, ইহা ভঙ্গিক্রমে উক্ত হইয়াছে।”
এ স্থলে তিনি স্পষ্টবাক্যে স্বীকার করিতেছেন, পুত্রলাভ ও ধর্ম্মকার্য্যনির্ব্বাহের পর স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে, যদি ঐ সময়ে বৈরাগ্য না জন্মিয়। থাকে, তাহা হইলে, মোক্ষপথ অবলম্বন না করিয়া, পুনরায় বিবাহ করিবেক। এক্ষণে, সকলে বিবেচনা করিয়া দেখুন, কষ্টকম্পনা দ্বার আপস্তম্বসুত্রের পাঠান্তর ও অর্থান্তর কল্পনা করিয়া, তর্কবাচস্পতি মহাশয় কি অধিক লাভ করিলেন। চিরপ্রচলিত ব্যবস্থা অনুসারে, গৃহস্থাশ্রমসম্পাদন কালে স্ত্রীবিয়োগ ঘটিলে, বৈরাগ্য স্থলে মোক্ষপথ অবলম্বন, বৈরাগ্যের অভাবস্থলে পুনরায় দারপরিগ্রহ, বিহিত আছে;