জীবদ্দশায় পুনরায় বিবাহ করিতে হইলে, স্থলবিশেষে স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব প্রভৃতি শাস্ত্রোক্ত নিমিত্তের, স্থলবিশেষে স্ত্রীর অসবর্ণাত্বের অপেক্ষা আছে। সামশ্রমী মহাশয় ধর্ম্মশাস্ত্রের বিচারে প্রবৃত্ত হইয়াছেন; এমন স্থলে, প্রকৃত প্রস্তাবে ধর্ম্মশাস্ত্রের উপর নির্ভর করিয়া, বিচারকার্য্য নির্ব্বাহ করাই উচিত ও আবশ্যক; পুরাণোক্ত অথবা ইতিহাসোক্ত উপাখ্যানের অন্তর্গত অস্পষ্ট নির্দ্দেশমাত্র অবলম্বনপূর্ব্বক, ধর্ম্মশাস্ত্রে সম্পূর্ণ উপেক্ষা প্রদর্শন করিয়া, ঈদৃশ বিষয়ের মীমাংসা করা কোনও অংশে ন্যায়ানুগত বলিয়া পরিগৃহীত হইতে পারে না।
সামশ্রমী মহাশয়ের পঞ্চম আপত্তি এই,—
“ক্রোড়পত্রে বেদরত্নাদিসংগৃহীত প্রমাণদ্বয় উদ্ধৃত হইয়াছে,— ইহার উত্তরে বলা হইয়াছে “মনু কাম্যবিবাহস্থলে অসবর্ণাবিবাহের বিধি দিয়াছেন।“ পরং, আমরা এইরূপ সমাধানের মূল পাই না’[১]
এ স্থলে বক্তব্য এই যে, প্রথমতঃ সামশ্রমী মহাশয় ধর্ম্মশাস্ত্রের রীতিমত অধ্যয়ন ও বিশিষ্টরূপ অনুশীলন করেন নাই; দ্বিতীয়তঃ, তত্ত্বনির্ণয়পক্ষ লক্ষ্য করিয়া বিচারকার্য্যে প্রবৃত্ত হয়েন নাই; তৃতীয়তঃ, বালস্বভাবসুলভ চাপল দোষের আতিশয্য বশতঃ, স্থির চিত্তে শাস্ত্রার্থ- নির্ণয়ে বুদ্ধিচালনা করিতে পারেন নাই; এই সমস্ত কারণে, “মনু কাম্যবিবাহস্থলে অসবর্ণাবিবাহের বিধি দিয়াছেন,” এরূপ সমাধানের মূল পান নাই। মনু কাম্যবিবাহস্থলে অসবর্ণাবিবাহের বিধি দিয়াছেন কি না, এই বিষয় তর্কবাচস্পতিপ্রকরণের প্রথম পরিচ্ছেদে সবিস্তর আলোচিত হইয়াছে[২]। সামশ্রমী মহাশয় স্থিরচিত্ত হইয়া, কিঞ্চিৎ অভিনিবেশ সহকারে, ঐ স্থল আলোচনা করিয়া দেখিলে, তাদৃশ সমাধানের মূল পাইতে পারিবেন।