পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>枪● ' বাংলা শব্দতত্ত্ব এই বাক্যে বানর’ শৰ তিৰ্ধকৃরূপ গ্রহণ করিয়াছে, অথচ লাফায়’ ক্রিয়ার কর্ম নাই। কিন্তু 'লাফানো’ ক্রিয়াটি সচেষ্টক । ‘আছে’ এবং থাকে’ এই দুইটি ক্রিয়ার পার্থক্য চিন্তা করিয়া দেখিলে দেখা যাইবে, ‘আছে’ ক্রিয়াটি অচেষ্টক কিন্তু থাকে’ ক্রিয়া সচেষ্টক— সংস্কৃত “অস্তি’ এবং ‘তিষ্ঠতি ইহার প্রতিশৰ । “আছে’ ক্রিয়ার কর্তৃকারকে তির্যক্রূপ স্থান পায় না— ‘ঘরে মামুষে আছে’ বলা চলে না কিন্তু এ ঘরে কি মানুষে থাকতে পারে? এরূপ প্রয়োগ সংগত । ‘প্লেগে স্ত্রীলোকেই অধিক মরে’ এ স্থলে মরা ক্রিয়া অচেষ্টক সন্দেহ নাই । ‘বেশি আদর পেলে ভালো মাহুষেও বিগড়ে যায়’, ‘অধ্যবসায়ের দ্বারা মুখেও পণ্ডিত হতে পারে’, ‘অকস্মাৎ মৃত্যুর আশঙ্কায় বীরপুরুষেও ভীত হয়’ এ-সকল অচেষ্টক ক্রিয়ার দৃষ্টাস্তে আমার নিয়ম খাটে না । বস্তুত এই নিয়মে ব্যতিক্রম যথেষ্ট আছে । কিন্তু ‘আছে’ ক্রিয়ার স্থলে কর্তৃপদে একার বসে না, এ নিয়মের ব্যতিক্রম এখনো ভাবিয়া পাই নাই । আসা এবং যাওয়া ক্রিয়াটি যদিও সাধারণত সচেষ্টক, তবু তাহাজের সম্বন্ধে পূর্বোক্ত নিয়মটি ভালোরূপে খাটে না। আমরা বলি সাপে কামড়ায়’ বা 'কুকুরে আঁচড়ায়’ কিন্তু ‘সাপে আসে’ বা ‘কুকুরে যায় বলি না। অথচ "যাতায়াত করা’ ক্রিয়ার অর্থ যদিচ যাওয়া আসা করা, সেখানে এ নিয়মের ব্যতিক্রম নাই। আমরা বলি এ পথ দিয়ে মানুষে যাতায়াত করে, বা 'যাওয়া আসা করে’ বা ‘আনাগোনা করে’। কারণ, ‘করে’ ক্রিয়াৰোগে আসা যাওয়াটা নিশ্চিতভাবেই সচেষ্টক হইয়াছে। ‘খেতে যায়’ বা ‘খেতে আসে” প্রভূতি ংযুক্ত ক্রিয়াপদেও এ নিয়ম অব্যাহত থাকে— যেমন, ‘এই পথ দিয়ে বাঘে জল খেতে যায়” । | ‘সকল’ ও ‘সব’ শব্দ সচেষ্টক অচেষ্টক উভয় শ্রেণীর ক্রিয়া-সহযোগেই তির্যকৃরূপ লাভ করে। যথা, এ ঘরে সকলেই অাছেন বা সবাই আছে। ইহার কারণ এই যে, ‘সকল’ ও ‘সব’ শব্দ দুটি বিশেষণপদ । ইহার তির্বকৃরূপ ধারণ করিলে তবেই বিশেষ্যপদ্ধ হয় । ‘সকল’ ও ‘সব’ শব্দটি হয় বিশেষণ, ময় অন্ত শব্দের ষোগে বহুবচনের চিহ্ন— কিন্তু "সকলে’ বা ‘সবে? বিশেষ্য। কথিত বাংলায় ‘সৰ’ শব্দটি বিশেষ্যরূপ গ্রহণকালে দ্বিগুণভাবে