পাতা:বাংলা শব্দতত্ত্ব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 বাংলা শব্দতত্ত্ব গ্রন্থরাশি প্রকাশিত হইলে, আমাদের বাংলাশবাভাণ্ডার অপূর্ণ থাকিবে না। খাটি বাংলাশব্দ লইয়াই সকল ভাব প্রকাশ করা যাইতে পারে। বাংলাশকের বানান লইয়া যে দাড়ি টানিবার কথা উঠিয়াছে সে-সম্বন্ধে আমি এই পর্যন্ত বলি, আমি কিছুই পাকাপাকি করিয়া দিই নাই। এ-সম্বন্ধে আমা অপেক্ষা দীনেশবাবু ভালো বলিতে পারেন, কত প্রাচীন কাল হইতে কোন শব্দের কী বানান লেখা চলিয়া আসিতেছে । আমার মনে হয় যখন ‘শ্রবণ’ হইতে ‘শোনা’ লিখিবার সময়ে 'ন' লেখা হয়, মূর্ধন্ত 'ণ' লিখিলে ভুল হয় তখন 'স্বর্ণ’ হইতে সোনা যদি ’ন’ দিয়া লিখি তবে ভুল কেন হুইবে । এই-সকল বিষয় বিবেচনা করিয়া বাংলাব্যাকরণের বিষয় মীমাংসা করা আবশ্যক। আমি যাহা বলিয়াছি তাহা যে অপরিবর্তনীয়, তাহাই যে সৰ্বথা গ্রাহ, এ-কথা যেন কেহ মনে না করেন। আমি উপকরণ সংগ্ৰহ করিয়া দিতেছি, আপনারা দেশের পণ্ডিতবর্গ তাহার ব্যবহার করুন, বাংলাব্যাকরণ কিরূপ হুইবে তাহা স্থির করুন । সভাপতি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাহার বক্তব্যে বলেন : , ...শ্ৰীমান রবীন্দ্রনাথ যে-শবরাশি সংগ্ৰহ করিয়াছেন ১ তাহাদের ব্যবহার ও গঠনসম্বন্ধে নিয়মাদি বাংলাব্যাকরণে থাকা আবশ্যক। যাহারা এগুলি slang বলিয়া অশ্রদ্ধা করেন তাহার। বাংলাভাষার একাংশ বাদ দিতে চাহেন। •• শরচ্চন্দ্র শাস্ত্রী মহাশয় রবীন্দ্রনাথের এই প্রবন্ধের প্রতিবাদে পরিষদের অষ্টম মাসিক অধিবেশনে ( ২৮ পৌষ ১৩০৮ ) ব্যাকরণ ও বাংলাভাষা’ নামক এক প্রবন্ধ পাঠ করেন । আলোচনার শেষে সভাপতি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন : শ্ৰীমান রবীন্দ্রনাথ কতকগুলি বাংলাপ্রত্যয়ের উদাহরণ সংগ্ৰহ করিয়া দিয়াছেন, তাহাতে ভুল নাই, এ-কথা তিনিও বলেন না । তাহাতে দুটাএকটা ভুল যে না আছে তাহাও নহে। সংস্কৃত অভিধান ও ব্যাকরণের অন্তর্গত শব্দসমষ্টি ছাড়া ভাষার আর-একটি দিক যে আছে, তাহা দেখাইয়া দেওয়া তাহার উদ্দেশ্য ।••• প্রত্যয়াদির রূপ রবীন্দ্র যাহ। স্থির করিয়াছেন ১. দ্রষ্টব্য ধ্বস্তাত্মক শব্দ, বাংলা কৃৎ ও তদ্ধিত, বাংলাক্রিয়াপদের তালিকা । ২ ব্যাকরণ ও বাংলাভাষা, ভারতী, ১৩০৮ ফাত্তন ।