পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৩১ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড | Sఫి: || মোঃ খন্দকার নূরুল ইসলাম গ্রাম- বাটিয়ামারা জেলা- কুষ্টিয়া ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখে বাটিয়া মারা গ্রামে ৭ জন মুক্তিযোদ্ধা এসে আশ্রয় নেয়। কুমারখালী রেল ষ্টেশনে। পাক সেনাদের মেজর ও ক্যাপ্টেন থাকতো কুমার খালী থানা ডাক বাংলোয়। ৮ই ডিসেম্বর মুক্তি বাহিনীর দল সকাল ৮/১০টার সময় মন্টুদের ঘরের মধ্যে ভাত খাচ্ছিলো। এমন সময় রাজাকার, মিলিটারী ও মিলিশিয়া মিলে প্রায় ৬০/৭০ জনের বাহিণী বাটিয়া মারা মন্টুদের বাড়ী চতুর্দিক হতে ঘিরে নিয়ে গোলাগুলি শুরু করে এবং মুক্তি বাহিনীর প্রস্তুতি নেবার পূর্বেই পাক হানাদার বাহিনী এসে থানা কাউন্সিলের পূর্বদিকে একটা আম বাগানে গর্ত করে রাত্রি ৮টার সময় তাদেরকে সেখানে নিয়ে গিয়ে লাইন করে দাঁড় করিয়ে মেশিন গানের গুলিতে হত্যা করে উক্ত গর্তের মধ্যে ফেলে মাটিচাপা দিয়ে রেখে চলে আসে। তার পরদিন পাক হানাদার বাহিনী বাটিয়ামারা গ্রামে যায় এবং উক্ত গ্রামের প্রত্যেকটা বাড়ী আগুন জেলে পুড়িয়ে দেয়। মেয়েদের উপর চালায় পাশবিক অত্যাচার। আবার তারা থানা কাউন্সিলে ফিরে আসে। আজও বাটিয়া মারার অনেক বাড়ীতেই ঘর ওঠে নাই। তার ৪/৫ দিন পর পাক বাহিনী কল্যাণপুর গ্রামে অপারেশনে যায় এবং নাম না জানা অনেক মেয়ের উপর পাশবিক অত্যাচার করে। তার মধ্যে কল্যাণপুরের একটা মেয়ের নাম আছিয়া। মেয়েটি অবিবাহিতা যুবতি ও সুন্দরী। সেই মেয়েটি পাক হানাদার বাহিনীর শিকার হয় এবং তার উপর পাশবিক অত্যাচার চালানোর দরুন সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পাক হানাদার বাহিনী সেই গ্রাম হতে কুমারখালী চলে আসলে সে জ্ঞান ফিরে পায় এবং তার কলঙ্কিত মুখ সমাজে দেখাবে না বলে রাত্রি কালে গলায় দড়ি দিয়ে মারা যায়। পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাপ্টেন থানা কাউন্সিলের যে ডাক বাংলোয় থাকতো সেই ডাক বাংলোর সম্মুখে একটা কচুরী পানায় বৰ্ত্তী পুকুর ছিল। সেই পুকুরে প্রায় ২/৪ দিন পর পর ২/৪ টা সুন্দরী মহিলার লাশ শাড়ি পরা অবস্থায় ভাসতে দেখা যেত। আমাদের অনুমান এই যে গাড়ীতে যে সকল মহিলা চলাফেরা করতো তাদেরকে গাড়ী হতে নামিয়ে ডাক বাংলায় নিয়ে এসে তাদের উপর পাশবিক অত্যাচার করে পরে বেয়োনেট চার্জ করে হত্যা করে উক্ত পুকুরে ফেলে রাখতো। একদিন দু’জন মিলিটারী একটা রাজাকারকে বলছে, আচ্ছা দোস্ত আওরাত মিলিয়ে দাও না। তখন রাজাকারটা তাদেরকে একটা বাড়ীতে নিয়ে যায়। মিলিটারীদের খবর পেয়ে উক্ত বাড়ীর পুরুষ মহিলা সবাই বাড়ী ছেড়ে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। রাজাকার ও মিলিটারী দুটি উক্ত বাড়ীর মধ্যে ঢুকে আর কোন লোক খুঁজে পায় না। তখন মিলিটারী দুটি উক্ত রাজাকারকে বলে আচ্ছা দোস্ত তোমার ডেরা কোথায়? তখন রাজাকারটা তাদেরকে সাথে নিয়ে নিজ বাড়ী যায় এবং পাক সেনারা তার বাড়ী গিয়েই ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। তারা দেখতে