পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৫৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(*N N. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড স্বাধীনতার পূর্ব মুহুর্তে ১৯৭১ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর সকাল ৮-৩০ মিনিটে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় বাসভবন থেকে আল-বদর বাহিনীর লোকেরা তাঁকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়। অন্যান্য শহীদ বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে মীরপুর মাজারের কাছে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায় ৪ঠা জানুয়ারী, ১৯৭২ তারিখে। ৫ই জানুয়ারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। ডঃ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মরণে বাংলা একাডেমী, ১৯৭৩ ডঃ ফয়জুল মহী পাক হানাদার বাহিনী ও বদর বাহিনীর হাতে শাহাদাতবরণ করেছেন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ ও গবেষণা ইনষ্টিটিউটের অধ্যাপক ডঃ ফয়জুল মহী। আমরা তাকে হারালাম। পাক হানাদার সেনারা নিশ্চিত পরাজয়ের সম্মুখীন হয়ে স্থানীয় নরপশুদের সাহায্যে আরো অসংখ্য বুদ্ধিজীবীর মত ডঃ ফয়জুল মহী সাহেবকে হত্যা করে স্বাধীনতা লাভের দুই দিন পূর্বে। ১৯৬৪ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এম,এ পাশ করেন। সঙ্গে সঙ্গে আমেরিকার কলরেডো ষ্টেট কলেজে অধ্যয়ন করার জন্য একটি বৃত্তি লাভ করেন। সাফল্যের সাথে ১৯৬৭ ও ৬৮ সনে সেখান থেকে যথাক্রমে এম,এ ও ডক্টর অব এডুকেশন ডিগ্রী লাভ করেন এবং দেশে ফিরে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ আই.ই.আর-এ ইণ্ডাষ্ট্রিয়েল আর্টস বিভাগে অধ্যাপনা শুরু করেন। তিনি ন্যাশনাল এডুকেশন এসোসিয়েশন, আমেরিকান ইণ্ডাষ্ট্রিয়েল আর্টস এসোসিয়েশন, আমেরিকান ভোকেশনাল এসোসিয়েশন এবং আমেরিকান এসোসিয়েশন ফর হায়ার এডুকেশন এই চারটি সংস্থার প্রফেশনাল মেম্বার ছিলেন। সেদিন ছিল ১৪ই ডিসেম্বর। বদর বাহিনীর ৬টি খুনী সকাল ৮-৩০ মিনিটে ৩৫/জি বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ার্টারে আসে এবং মহী সাহেবকে ডাকে। ডাকার সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘরের দরজা খুলে বের হন এবং অতি বিনয়ের সাথে বলেন আপনারা বসুন। বসতে তারা রাজী না হয়ে তাকে সাথে করে নিয়ে যায় এক অজানা জায়গায় চোখ বাঁধা অবস্থায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দেখবার সাধ ছিল ডঃ মহীর। মুক্তি সংগ্রামে তিনি নানাভাবে সহায়তা করেছিলেন, কিন্তু স্বাধীনতা দেখে যেতে পারেননি। পেয়েছেন কেবল স্বাধীন সোনার বাংলার স্বাধীন মাটি। আজ স্বাধীন বাংলার মাটিকে জড়িয়ে ধরেই তিনি চিরকালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে ঘুমিয়ে আছেন। মোঃ আমিনুল ইসলাম পূর্বদেশ, ৬ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ এ,কে, এম, সিদিক যে সব বুদ্ধিজীবী একাত্ত্বরের ডিসেম্বরে শহীদ ও নিখোঁজ হয়েছেন জনাব এ, কে, এম, সিদিক (হেনা মিয়া) তাঁদের অন্যতম। তিনি ছিলেন ঢাকার হাইকোর্ট ও জজকোর্টের একজন বিশিষ্ট আইনবিদ এবং প্রখ্যাত আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ জনাব আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়নীতির প্রতীক।