বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (একাদশ খণ্ড).pdf/৭২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



699

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র: একাদশ খণ্ড

 খুলনা জেলার চালনা হইতে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, চালনা বন্দরে মুক্তিযোদ্ধারা একটি বৃটিশ জাহাজের ক্ষতি সাধন করিয়াছেন। জাহাজটিতে পাট বোঝাই ছিল বলিয়া জানা য়ায়।

 বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার মোট ২২৮ টি চেকপোষ্টের মধ্যে ১৭৫টি চেকপোষ্টই এখন মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে। দিন দিন মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন ও আক্রমন সুসংহত হওয়ার মুখে জল্লাদ খানসেনাদের মনোবল দরুণভাবে ভাঙিয়া পড়িয়াছে। তাই ইহারা সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালাইতেছে। এবং নিরীহত নিরস্ত্র জনসাধারণ হত্যা ও তাঁহাদের বাড়ীঘর জ্বালাইয়া দিতেছে।

 সম্প্রতি করাচী হইতে এক জাহাজ বোঝাই খানসেনাকে চট্টগ্রাম লইয়া আসার পর ইহারা ভয়ে জাহাজ হইতে নীচে নামে নাই। পরে তাহাদিগকে সামরিক কর্তৃপক্ষ পুনরায় করাচী পাঠাইয়া দিতে বাধ্য হয়।

কর্নেল ওসমানী

 গত ছয় মাসের সাফল্য পর্যালোচনা করিয়া প্রধান সেনাপতি কর্নেন ওসমানী বলেন যে, গত ৬ মাসে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা কম করিয়া হইলেও ২৫ হাজার ইসলামাবাদী পশু সেনা খতম করিয়াছেন। তিনি বলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গণচীন প্রদত্ত সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত এবং সংখ্যার দিক দিয়া অধিক পাকিস্তানী সেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে নিহতের গড়পড়তা অনুপাতের হার প্রতি একজন মুক্তিযোদ্ধার বিনিময়ে ৪০ জন হানাদার সেনা।

 দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধারা জলে স্থলে অপরিমিত বিক্রমের সহিত হানাদার খানসেনাদের মোকাবিলা করিয়া চলিয়াছেন বলিয়া উল্লেখ করিয়া তিনি বলেন যে, এ পর্যন্ত বাংলার সিংহশাবক মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের দখলকৃত এলাকার বিভিন্ন বন্দরে হানরাদার বাহিনীর সাহায্যের জন্য আনীত অস্ত্রশস্ত্র এবং অন্যান্য সামগ্রী বোঝাই ১৫টি বিদেশী জাহাজ নিমজ্জিত অথবা ক্ষতি সাধন করিয়াছেন। ইহা ছাড়া শক্র সেনাদের চলাচল সরবরাহ ব্যবস্থা পঙ্গু করিয়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধারা প্রথম সুযোগেই দখলীকৃত এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেল সেতু ধ্বংস করিয়া দিয়াছেন। 

-বাংলার বাণী, ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

রণাঙ্গনের খবর

(রণবার্তা পরিবেশক)

 ঢাকা হইতে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, বাংলাদেশের দখলকৃত এলাকায় ইসলামাবাদের অসুরবাহিনীর সুরক্ষিত সদর দফতর বলিয়া কথিত খোদ ঢাকা নগরীসহ উহার চার পার্শ্বে এবং ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গেরিলা আক্রমণ চলিতেছে। মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকা হইতে শত্রসেনা বাহির হওয়ার সব কয়টি গুরুত্বপূর্ণ রেল, সড়ক এবং জলপথে ব্যাপক তৎপরতা বৃদ্ধি করিয়াছেন। ঢাকা নগরীর সহিত স্থলপথে রেল ও সড়ক ওযাগাওযাগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করিয়া দিয়া দুঃসাহসিক মুক্তিযোদ্ধারা শত্রসেনাদের অবাধ গতিবিধি এবং রসদ সরবরাহ ব্যাহত করিয়া চালিয়াছেল। ঢাকা নগরীতেও খণ্ড খণ্ড সংঘর্ষের মাধ্যমে তাঁহারা খানসেনাদের ব্যস্ত রাখিয়া নাস্তানাবুদ করিতেছেন।

 ঢাকা হইতে আমাদের প্রতিনিধি জানান, সেদিন খোদ ঢাকা নগরীতেই প্রকাশ্য দিবালোকে চলন্ত মোটর হইতে মেসিনগানের সাহায্যে গুলি করিয়া মুক্তিযোদ্ধারা ৫ জন খান সেনা খতম করেন। মুক্তিযোদ্ধারা একটি