পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৭১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ყybr8 বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খন্ড নিরপরাধ মানুষের ওপর যে নজীরবিহীন উপায়ে অত্যাচার চালানো হচ্ছে আমাদের সারা দেশে জনগণ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তারা নিন্দা করছে। এই সভা গণতান্ত্রিক (লোকতন্ত্রাত্মক) জীবন ব্যবস্থার জন্য পূর্ব বাংলার জনগণের সংগ্রামের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও একাত্মতা ব্যক্ত জরছে। এই সভা তাদের এই আশ্বাস প্রদান করছে যে তাদের সংগ্রাম ও ত্যাগ ভারতের জনগণের আন্তরিক সহানুভূতি ও সমর্থন লাভ করেছে।” আমি বলতে চাই যে, এই প্রস্তাবের পরে সাথে সাথে তাঃক্ষণিক স্বীকৃতি প্ৰদান করা কি আমাদের নৈতিক ও রাজনৈতিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়নি? মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে এ ব্যাপারে সময় দেয়া উচিত। ১৭ ই এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশ স্থাপিত হয়েছিল। ১৫ ই মার্চ ইয়াহিয়া খাঁ ৩.৩ মিনিট ঢাকা চৌছেন। ১৫ই মার্চে মুজিবুর রহমান শাসন ক্ষমতা নিজের হাতে নেন এবং নিজেকে এদশের শাসক বলে ঘোষণা করেন। ১৫ই মার্চে তিনি একথা বলেন। ১৫ই মার্চের পর আমি ২৫ শে মার্চের কথায় আসছি না। আমার কথা হচ্ছে ১৫ই মার্চেই ভারত এটি সরকারের হাতে ছেড়ে দেয়া উচিত। তাঁদের আমি বিনয়ের সাথে বলব, তিব্বত সমস্যা কি ভারত সরকারের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়নি? তিব্বত আমাদের ১২টি ডাক বাংলো ছিল, তিব্বতে আমাদের ৩টি সামরিক তথ্যকেন্দ (জানকার) ছিল, তিববতে আমাদের ডাকঘর চিঠিঘর এবং টেলিফোনঘর ছিল এবং এভাবে তিব্বত চীনের খুনী কজায় চলে গেছে। আমার ভয় হচ্ছে, দালাইলামার নেতৃত্বে এখানে যে ৬১ হাজার তিব্বতী শরণার্থী পড়ে আছে এ সরকার তাদেরকেও আবার চীন সরকারের হাতে সমর্পণ না করেন। আমি এই ভয়ও পাচ্ছি যে বাংলাদেশের শরণার্থী যারা এখানে এসে পড়েছে সরকার তাদেরকেও অন্য কোন রাষ্ট্রের হাতে সমর্পণ না করেন। অতএব, আমি বলতে চাই এ বিষয়ে আমার কোনব্যক্তিগত প্রশ্ন নেই, এ প্রশ্ন সারা দেশের , সারা বিশ্বে, সমগ্র মানবের এবং সকল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার, এ প্রশ্ন কোন ব্যক্তিবিশেষের ওপর আরোপ করলে চলবে না। ...সুতরাং আমি দেশের জনগনের উদ্দেশ্যে বলব, জনগণ উঠুন এবং উঠে এসে সরকারের ওপর প্রচণ্ডভাবে চাপ প্রয়োগ করুন যে আজই এখনই এই অধিবেশন শেষ হতে হতেই স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের কথা এবং নৈতিক, বৈষয়িক, সামরিক সর্বপ্রকার সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হোক। মহোদয়, আমি চাগলা সাহেবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। চাগলা সাহেবের পুরো ভাষণ আমি নিজের ভাষণরূপে মেনে নিতে প্রস্তুত। চাগলা সাহেব বলেছেন, ইয়াহিয়া টু নেশন মত সমর্থক। তিনি ঠিকই চলেছেন, আমিও তাই বলি। ইয়াহিয়া দুই রাষ্ট্রের তত্ত্বের পক্ষে এজন্য তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ হতে ওই লোকদের বের করে দিতে চান যারা ইয়াহিয়ার মত সমর্থন করেন না। তিনি চান সকল ইয়াহিয়া সমর্থক সেখানে থাক, খাটি মুসিলম লীগার ও মুসলিম পুজারীরা সেখানে থাক। চাগলা সাহেব অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে তাঁর বিতর্কে একথা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখন আমি বলব স্বীকৃতি দিলে কি লাভ হয়। স্বীকৃতি দিলে শুধু ভারতে অস্ত্রই যাবে না বিশ্বে এরূপ অনেক দেশ আছে যারা, ভারত স্বীকৃতি দিলে, ভারতের দ্বারা স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারকে অস্ত্র দেবে। তাদের অস্ত্র পাঠাতে কোন অসুবিধা হবে না। স্বীকৃতি দিলে সবচে বড় লাভ হবে এই যে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশকে একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্ররূপে মেনে নিচ্ছি এবং স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের মর্যাদা পেলে তার শক্তিসামর্থ্য বেড়ে যাবে। তাই আমি বুঝতে পারি না আমাদের সরকার স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারকে কেন স্বীকৃতি দিচ্ছেন না। মুজিবুর রহমান মহাশয় বলেছেন আমাদেরকে স্বীকৃতি দিন। তাঁর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট বলেছেন আমাদেরকে স্বীকৃতি দিন। তাজুদ্দিন সাহেব বলেছেন আমাদেরকে স্বীকৃতি দিন। তাঁদের পরিষদ সদস্য যারা এখানে এসছেন তাঁরা বলেছেন আমাদেরকে স্বীকৃতি দিন। তারা বলেছেন, পৃথিবীর অন্যদেশ আমাদেরকে স্বীকৃতি দিক বা না দিক আমরা তো ভারতের