পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

se বারীদ্রের আত্মকাহিনী না পারিয়া, একদিন সে হাসপাতালে আসিয়া হাজির হইল। সে তখন যুরোপীয়ান ওয়ার্ডে দুই একজন যুরোশিয়ান কয়েদীর হেফাজতে ছিল । সেদিন সকালে তাহদেরই একজন নরেনের সঙ্গে হাসপাতালে আসিয়াছিল । নরেন্দ্ৰ আসিবামাত্ৰ সত্যেন তাহাকে লইয়া যত্ন করিয়া আপনার শয্যায় বসাইল। বাহিরের বারান্দায় কানাই একটি রিভলবার পকেটে পায়চারী করিতেছিল, যদি কোন গতিকে শিকার ফস্কাইয়া পালায়, তাহারই জন্য পথে এই ঘাটি আগলানো । সত্যেনের সহিত কথা হইতে হইতে হঠাৎ কম্পাউণ্ডার আসিয়া ব্যাণ্ডেজ বাধা না। আমনি কি কাজে কানাইকে ডাকিয়া লইয়া গেল। কানাইও গেল নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বে, তাড়াতাড়ি কাজ সারিয়া আসিবে আশায় । এদিকে সত্যেন পকেটে হাত রাখিয়া কথা কহিতে কহিতে পকেটেই পিস্তল সই করিয়া লইয়া নরেনকে লক্ষ্য করিয়া গুলি ছুড়িল ৷ গুলি নরেনের উরুতে লাগিয়া মাংস ভেদ করিয়া বাহির হইয়া গেল। যুরোশিয়ান কয়েদী সত্যেনকে ধরিতে গিয়া পিস্তলের বঁাটের ঘায়ে আঙ্গুল ভাঙ্গিয়া পিছাইয়া পড়িল। নরেন্দ্র ছিল কুস্তিগীর, বেশ সাজোয়ান পুরুষ ; গুলি খাইয়া সে হাসপাতাল ছাড়িয়া বাহির হইয়া দৌড় দিল । কানাই হট্টগোল শুনিয়া বারান্দায় বাহির হইয়া দেখিল শিকার পলাইয়াছে। সে হাসপাতাল গেটে আসিয়া পিস্তল উচাইয়া প্রহরীকে জিজ্ঞাসা করিল, “নরেন কোন দিকে গেল ?” সে বেচারী প্ৰাণের দায়ে অঙ্গুলী সঙ্কেতে সে দিকটা দেখাইয়া দিয়া সরিয়া দাড়াইল। তাহার পর পশ্চাদ্ধাবন । এই সময় জেলার, নায়েব - জেলার, বড় জমাদার সদলবলে রোদে আসিতেছিলেন, তাহারা রক্তাক্তপদে মুক্তকচ্ছ অবস্থায় নরেনকে দৌড়াইতে দেখিয়া তাহাকে থামাইয়া ব্যাপার জানিতে চাহিলেন । আতঙ্কে নরেন কিছু বলিতে পারিল না, শুধু পিছনে হস্ত সঙ্কেতে দেখাইয়া কোন গতিকে বলিল, “ঐ আসছে, আমায় ছেড়ে দেও।” বলিতে বলিতে কানাই পিস্তল