পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শ্বশুরের পরিচয়।
৭৭

এইখানে দিনময়ীর পিতা শক্রঘ্ন ভট্টাচার্য্যের একটু পরিচয় দিই। এ পরিচয়ে পরিণামসম্পর্ক আছে। বংশৌরসের সম্বন্ধ বুঝাইবার জন্য এই পরিচয়।

 শক্রঘ্ন ভট্টাচার্য্য অতি তেজস্বী, ক্রোধী ও বলশালী ব্রাহ্মণ ছিলেন। তৎকালে তাহার গ্রামে তাঁহার বলবতার তুলনা ছিল না; পরন্তু তিনি সহজাত সহৃদয়তা ও উদারতা গুণে সর্ব্বজনের ভক্তি ও প্রীতি আকর্ষণ করিতেন। তাঁঁহার বলবত্তা ও উদারভার দুই একটী গল্প শুনুন।

 প্রতি বৎসর ক্ষীরপাই নগরে গাজন হইত। ভট্টাচার্য্য এই . গাজনের অধিনেতা ছিলেন। গাজন লইয়া সহর প্রদক্ষিণ করা তখনকার নিয়ম ছিল। স্বয়ং শক্রঘ্ন ভট্টাচার্য্য গাজনের সঙ্গে সঙ্গে যাইতেন। দুর্ভাগ্যবশতঃ একটী পল্লীর লোক তাহার বিষম প্রতিপক্ষ হইয়া দাঁড়াইয়াছিলেন। তাঁহার বিষম প্রতিজ্ঞা হইয়াছিল, তিনি শক্রঘ্নকে গাজন লইয়া তাঁহার পল্লীতে যাইতে দিবেন না। শক্রঘ্ন ভট্টাচার্য্য ইহা জানিতে পারিয়াছিলেন; কিন্তু বলদৃপ্ত ব্রাহ্মণের প্রতিজ্ঞা হইল, তিনি যে কোন প্রকারে হউক, প্রতিপক্ষের পল্লীতে যাইবেন। তিনি গাজন লইয়া সেই দিকে অগ্রসর হন; কিন্তু গিয়া দেখেন, পল্লীর পথের সন্মুখে একটা হস্তী দণ্ডায়মান, তৎপশ্চাতে কিয়দূরে একখানি রথ; তৎপশ্চাতে আরও দূরে প্রতিপক্ষেরা অবস্থিত ছিলেন। ভট্টাচার্য্য, বুঝিলেন, এ সব গতিরোধের ব্যবস্থা। তিনি কিন্তু কিছুতেই ভ্রুক্ষেপ না করিয়া পথ হইতে একখানি ইট্‌ কুড়াইয়া লইলেন। পরে হস্তীর শুণ্ড বগলে চাপিয়া রাখিয়া সেই ইষ্টক খণ্ডদ্বারা হস্তীকে এমনই প্রহার করিলেন যে, হস্তী তাহা সহ্য করিতে না পারিয়া