পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬০
বিদ্যাসাগর।

বিকসিত হইলেও, সংস্কৃত গ্রন্থের অনুবাদমাত্র ভাবিয়া সাহেব সিবিলিয়ন্‌গণ ইহাকে সাদরে উপাদেয় বাঙ্গালা-পাঠ্যরূপে গ্রহণ করিবেন। বস্তুতঃ ইহা বিদ্যাসাগর মহাশয়ের রচিত প্রথম গ্রন্থ হইলেও অনুবাদের গুণে, ভাষার লালিত্য-মাধুর্য্যে, বর্ণনার বিকাশচাতুর্য্যে এবং ভাব-সম্ভারের যথাযথ বিন্যাসে, ইহা বাঙ্গালা ভাষা-শিক্ষার্থী সাহেব-সিবিলিয়ন্‌দের যে অতি আদরণীয় পাঠ্য হইয়াছিল, তাহার আর সন্দেহ নাই। ইহার পূর্ব্বে বিশুদ্ধ ও প্রাঞ্জলভাষায় লিখিত এমন সুন্দর বাঙ্গালা গদ্যগ্রন্থ আর ছিল না। অনেক সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত এই ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজের পাঠার্থীদের জন্য বাঙ্গালা পাঠ্য পুস্তক রচনা করিয়াছিলেন; কিন্তু কোন পাঠ্যই এমন সুপাঠ্য হয় নাই; সুপাঠ্য কি, কদর্য্য ভাষার জন্য তাহার অধিকাংশই অপাঠ্য হইয়াছিল।[১]কেবল “ফোর্ট উইলিয়ম” কলেজের পাঠ্য কেন, যে সময় “বসুদেব-চরিত” রচিত হয়, সেই সময় এবং তাহার পূর্ব্বে

  1. কলিকাতায় ফোর্ট উইলিয়ম্ কলেজ নামক যে বিদ্যালয় সংস্থাপিত ছিল, তাহার ব্যবহারের জন্য অনেকগুলি বাঙ্গালা পুস্তক রচিত ও মুদ্রিত হইয়াছিল। কেরি সাহেব ঐ স্থানে আসিয়াই বাঙ্গালা ও ইংরেজিতে ব্যাকরণ ও অভিধান প্রস্তুত করিয়াছিলেন। সে ব্যাকরণ এক্ষণে দুষ্প্রাপ্য হইয়াছে; কিন্তু অভিধান এখন অনেক স্থলে দেখিতে পাওয়া যায়।
     সাহেব ভিন্ন কয়েক জন বাঙ্গালী ঐ কলেজের অধ্যাপক হইয়া কয়েকখানি পুস্তক রচনা করিয়াছিলেন। তন্মধ্যে রামরাম বসু অতি কদর্য্য গদ্যে প্রতাপাদিত্য চরিত মামে এক পুস্তক লেখেন এবং পণ্ডিতবর মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার প্রবোধ চন্দ্রিকা রচনা করেন।—বাঙ্গালা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ক প্রস্তাব ২০৩।২০৪ পৃঃ।