পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কলেজের সংস্কার।
১৮৫

কাহারও সেক্রেটারীর অনুমতি ব্যতীত কোন কাজ করিবার অধিকার ছিল না। ইনি যে সকল কবিতা অশ্লীল মনে করিয়াছিলেন, তাহা সংস্কৃত পাঠ্যসাহিত্য হইতে তুলিয়া দেন। সাহিত্য শ্রেণীতে অঙ্কশিক্ষার ব্যবস্থা ইঁহার দ্বারা প্রবর্ত্তিত হয়। পূর্ব্বে এ ব্যবস্থা ছিল না।

 এই সময়ে হিন্দু কলেজের “প্রিন্‌সিপল” কার্ সাহেবের সহিত বিদ্যাসাগর মহাশয়ের একটু মনোবাদ ঘটিয়াছিল। একদিন বিদ্যাসাগর মহাশয় কার্ সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিতে যান। সাহেব তখন টেবিলের উপর পা তুলিয়া বসিয়াছিলেন। তিনি তদবস্থায় বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সঙ্গে কথা কহেন। ইহাতে বিদ্যাসাগর মহাশয় আপনাকে অপমানিত জ্ঞান করেন; সে দিন তৎসম্বন্ধে কোন কথা না কহিয়া ফিরিয়া আসেন। আর একদিন কার্ সাহেব বিদ্যাসাগর মহাশয়ের সহিত সাক্ষাৎ করিতে আসেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় পূর্ব্ব কথা স্মরণ করিয়া আপনার পাদুকা-শোভিত পা দুখানি টেবিলের উপর তুলিয়া দেন, অধিকন্তু সাহেবকে বসিতেও বলেন নাই। সাহেব সে দিন সংক্ষুব্ধ মনে ফিরিয়া আসিয়া বিদ্যাসাগর মহাশয়ের ব্যবহারের কথা শিক্ষাসমাজের সেক্রেটারী মৌয়েট্ সাহেবকে বিদিত করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নিকট কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়। কৈফিয়তে বিদ্যাসাগর মহাশয় কার্ সাহেবের দুর্ব্যবহায়ের কথা উল্লেখ করেন। মৌয়েট্ সাহেব বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তীব্র তেজস্বিতা দেখিয়া সন্তুষ্ট হন।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় চিরকাল গুণের পক্ষপাতী ছিলেন। এই সময় সংস্কৃত কলেজে সাহিত্য শাস্ত্রের অধ্যাপকপদ শূন্য হয়।