পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বীডন স্কুলের সম্বন্ধ।
২৪৭

 বিদ্যাসাগর মহাশয়ের তত্ত্বাবধান-সময়ে বীটন স্কুলের প্রতিষ্ঠা ভারতের সর্ব্বত্র প্রচারিত হইয়াছিল। বোম্বাই-অঞ্চলে এক জন পারসী কলিকাতার বীটন্‌ বিদ্যালয়ের মতন একটী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করিবার উদ্যোগ করিয়াছিলেন। সেখানকার সিবিলিয়ন আস্কিন্ সাহেব সেই পারসী কর্ত্তৃক অনুরুদ্ধ হইয়া, বীটন্‌ বিদ্যালয়ের বাটীর একটা নক্সা পাইবার জন্য সিটনকর সাহেবকে পত্র লিথিয়ছিলেন। সিটনকর সাহেব সে সম্বন্ধে বিদ্যাসাগর মহাশয়কে সুহৃদভাবে পত্র লেখেন।

 যত দিন বিদ্যাসাগর মহাশয় বীটন বিদ্যালয়ের সেক্রেটরী ছিলেন, তত দিন তিনি কায়মনোবাক্যে ইহার শ্রীবৃদ্ধিলাধনের চেষ্টা করিতেন। বিদ্যালয়ের বালিকাগণকে তিনি কন্যার মত ভালবাসিতেন। ভালবাসা তাঁহার স্বভাবসিদ্ধ গুণ ছিল। তিনি কাহাকে ও দিদি, কাহাকেও মাসী, কাহাকে ও মা, ইত্যাদিরূপ সম্বোধন করিয়া সকলেরই সঠিত সাদর-সম্ভাষণ করিতেন। একবার রাজা দিনকর রাও, তাঁহার সহিত বীটন বালিকা বিদ্যালয় দেখিতে গিয়া, বালিকাদিগকে মিঠাই খাইবার জন্য ৩০০৲ তিন শত টাকা দিয়াছিলেন। ‘মিঠাই' খাইলে মেয়েদের পেটের পীড়া হইতে পারে, প্রেসিডেণ্ট বিডন সাহেবের এই ধারণা ছিল; সুতরাং তিনি মিঠাই খাওয়াইতে নিষেধ করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তখন সেই টাকায় বালিকাদিগকে কাপড় কিনিয়া দিতে কৃতসঙ্কল্প হন। তিনি মাসী, মা, দিদি ইত্যাদি সম্ভাষণে প্রত্যেক বালিকাকে ডাকিয়া প্রত্যেকের মত চাহেন। অধিকাংশের কাপড় লওয়া মত হয়। বিদ্যাসাগর মহাশয় তখন ঢাকাই শাড়ী ক্রয় করিয়া বালিকাদিগকে বিতরণ করিলেন।