পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩৬
বিদ্যাসাগর।

চাদর গায়ে দিয়া ছোটলাট বাহাদুরের সহিত সাক্ষাৎ করিতে যাইতেন। ছোটলাট বাহাদুর তাঁহাকে চোগা, চাপকান ও পেণ্টলন পরিয়া যাইতে বলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁহার কথামতে দিন কয়েকমাত্র চোগা-চাপকান পবিয়া গিয়াছিলেন। কিন্তু ইহাতে তিনি লজ্জা ও কষ্টবোধ করিতেন। সেই জন্য তিনি সে বেশ পরিত্যাগ করেন। ইহার পর জীবনে তিনি আর এ পরিচ্ছদ বাবহার করেন নাই।

 ১২৬৪ সালে বা ১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে বিদ্যাসাগর মহাশয়, হেলিডে সাহেবের আদেশে বহু স্থানে বহু বালিকাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করেন। এই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-পণ্ডিত মাসিক বেতনের জন্য বিল করিয়া, বেতন প্রার্থনা করিলে, তদানীন্তন শিক্ষাবিভাগের ডাইরেক্টর ইয়ঙ্ সাহেব, তাহা মঞ্জুর করেন নাই। বিদ্যাসাগর মহাশয়, যখন ইনস্পেক্টর-পদে নিযুক্ত হন, তখন হইতেই, ইয়ঙ্ সাহেবের সহিত তাঁহার মতান্তর হওয়ায়, একটা মনোবাদ হয়। বর্তমান বিল নামঞ্জুরীসূত্রে সেই মনোবাদ প্রবলতর হইল। বিদ্যাসাগর মহাশয়, ছোট লাট বাহাদুরকে এ কথা জানাইলেন। ছোট লাট বাহাদুর, নালিশ করিয়া টাকা আদায় করিতে বলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় নালিশের চিরবিরোধী; কাজেই তিনি স্বয়ং ঋণ করিয়া টাকা দেন।[১] ক্রমেই মনোেবদ গুরুতর হইয়াছিল।

  1. বিশ্বকোষ অভিধানে লিখিত আছে, সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপনা সময়ে তৎকালীন গবর্নমেণ্ট সেক্রেটারী হলিডে সাহেবের সহিত বিদ্যাসাগরের আলাপ পরিচয় হয়। তিনি নানা বিষয়ে পরামর্শ করিবার জন্য প্রতি সপ্তাহে একদিন করিয়া বিদ্যাসাগরকে লইয়া যাইতেন। অনেক সময়ে তিনি বিদ্যাসাগরের সৎপরামর্শ গ্রহণ করিতেন। তাঁহারই যত্নে বিদ্যাসাগর 'স্কুল ইনস্পেক্টর' হইয়া