পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিংশ অধ্যায়।

বিধবা-বিবাহে ঋণ, বিধবা-বিবাহ নাটক, দান-দাক্ষিণ্য, ইংরেজী স্কুল, কৃতজ্ঞতা, হিন্দু পেট্রিয়াট্, সোম-প্রকাশ, বর্দ্ধমানরাজের সহিত ঘনিষ্ঠতা, সোম-প্রকাশে বিদ্যাভূষণ, সংবাদ-পত্রের সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় যে বৎসর সংস্কৃত কলেজের প্রিন্সিপাল পদ পরিত্যাগ করেন, সেই বৎসর তিনি হুগলী জেলার মধ্যে কতকগুলি গ্রামে নিজ ব্যয়ে ১৫ (পনেরটী) বিধবার বিবাহ দিয়াছিলেন। অনেক পুনর্ব্বিবাহিত বিধবাদের ভরণ এবং সংরক্ষণ জন্য তাঁহাকে অনেক অর্থব্যয় করিতে হয়। ইহার জন্য তাঁহাকে ঋণগ্রস্ত হইতে হইয়াছিল। ঋণ করিয়াও, তিনি দীন-হীন ঋণীর ঋণ পরিশোধ করিতেন। তিনি স্বয়ং ঋণগ্রস্ত বটেন; কিন্তু দানে যে তিনি মুক্ত-হস্ত। দয়ার বা দানে এতাদৃশ অসংযম বিজ্ঞ-জন-সম্মত নহে। অধিকন্তু ইহা সংসারীর সন্ত্রাসকারী। অসংযম কিছুতেই ভাল নয়। বিদ্যাসাগরের ন্যায় বিচক্ষণ বুদ্ধিমান্ ব্যক্তি তাহা বুঝিতেন না, তাহা কেমন করিয়া বলিব? কিন্তু তাঁহার দান ও দয়া এইরূপই ছিল। হয়তো তিনি কোন নৈসর্গিক শক্তি-বলে বুঝিতেন-ঋণ যতই হউক, পরিশোধের পথ পরিষ্কৃত করিবই, অথবা স্বভাবদাতার পথ ভগবৎকৃপায় আপনি পরিষ্কৃত হইয়া পড়ে। বস্তুতঃ বিদ্যাসাগরের দান ও দয়ার কথা ভাবিলে, কি যেন একটা ঐন্দ্রজালিক বাপার বলিয়া মনে হয়।