পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৩৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধবা-বিবাহ নাটক।
৩৫৭

বিধবা-বিবাহের আন্দোলনোদ্দীপক অভিনয় বলিয়াই তো তাঁহার এত সহানুভূতি ছিল।

 কলেজের চাকুরী নাই, আয়েরও নূতন উপায় উদ্ভাবিত হয় নাই, অথচ ঋণ অনেক; তেমন অবস্থায় বৈঁচিনিবাসী গোকুলচাঁদ এবং গোবিনচাঁদ বসু নামক দুই ভাই আসিয়া, বিদ্যাসাগর মহাশয়কে বলিলেন-“নীলকমল বন্দ্যোপাধ্যায়[১] আমাদের বসতি-বাটী ক্রোক করিতে সংকল্প করিয়াছেন। আপনি রক্ষা করুন। বিদ্যাসাগর শরণাগতের কাতর ক্রন্দনে ব্যথিত হইলেন। তিনি তখনই নীলকমল বাবুকে ১,০০০্ (এক সহস্র) টাকা দিয়া বসু-পরিবারের বাস্তুভিটার উদ্ধার করিয়া দেন। রাজকৃষ্ণ বাবু আমাকে বলিয়াছেন, তিনি ডিপজিটরীর কার্য্য পরিত্যাগ করিলে পর বিদ্যাসাগর মহাশয় গোকুলচাঁদি বাবুকে ৫০ (পঞ্চাশ) টাকা বেতনে সেই কার্য্যে নিযুক্ত করিয়াছিলেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় গোকুলচাঁদের মত কত বিপন্ন ব্যক্তির দায়োদ্ধার করিয়াছেন, তাহার ঠিক সংবাদ সংগ্রহ করা, বড় দুঃসাধ্য ব্যাপার। কেন না তিনি গগন-ভেদী ঢক্কাশব্দে কাঁপাইয়া দান করিতেন না। অনেক সময়ে, তিনি অনেককে এক কালেই দান করিতেন; কিন্তু সে সব প্রায়ই লিপিবদ্ধ করিতেন না। তবে রাজকৃষ্ণ বাবুর ন্যায় বন্ধু এবং ভ্রাতৃবর্গ, সে সব দানের কথা জানিতে পারিতেন, তাহা সময়ে সময়ে লোক পরস্পরায় প্রকাশিত হইয়া পড়িত।

 যে সময়ে গোকুলচাঁদের বাস্তুভিটার উদ্ধার-সাধন হয়, সেই সময়ে শ্যামাচরণ বন্দোপাধ্যায় নামক এক ব্যক্তির ৫০০ (পাঁচশত)

  1. নীলকমল বন্দ্যোপাধ্যায় রাজকৃষ্ণ বাবুর ভ্রাতা।